শিলিগুড়ি: শুধু রামকৃষ্ণ মিশনের জমি নয়, শিলিগুড়িতে গত ১০ দিনে ইস্টার্ন বাইপাস লাগোয়া এলাকার একের পর এক জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ সামনে আসছে এ বার। পুলিশ সূত্রের খবর, সেবক রোড, দুই মাইল, ৪১ নম্বর ওয়ার্ড মিলিয়ে চারটি জমি দখলের চেষ্টা সংক্রান্ত অভিযোগ জমা পড়েছে। প্রতি ক্ষেত্রেই জমি দখলের চেষ্টা, জোর করে টাকার দাবির অভিযোগ সামনে এসেছে। অনেক সময় জমির মূল মালিকের কাছ থেকে ‘পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি’ নিয়ে এক দল লোক এ ভাবে জমির বেআইনি কারবার করছে বলে তদন্তকারীরা জেনেছেন। কয়েক দিন আগেই এ ভাবে নাগাল্যান্ডের এক বাসিন্দা, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং দুই মাইল এলাকার একটি চা বাগান সংস্থার জমি দখলের চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্ট পক্ষ।
মিশনের ঘটনার পরে প্রশাসনিক তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায়, অনেকে সাহস করে পুলিশের কাছে এসেছেন বলে দাবি। পুলিশি তদন্তে সামনে এসেছে, একই জমির একাধিক নথিপত্র সামনে রেখে প্রতি ক্ষেত্রে দখলের চেষ্টার অভিযোগ সামনে আসছে। যা অনেক সময় ভুয়ো নথিপত্র তৈরি করে জমি দখলের ঘটনার মতোই। এ সব ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে কি না তা দেখা হচ্ছে। ভূমি রাজস্ব দফতরের এক দল এজেন্টকে দিয়ে এমন নথি তৈরির কথাও জানা গিয়েছে। সে দিকেও তদন্তকারীরা নজর দিয়েছেন। তেমনই, প্রতি ক্ষেত্রে কিছু নাম সামনে উঠে এসেছে। শিলিগুড়ি পুলিশের এক ডিসি’র কথায়, “ভক্তিনগর এলাকায় সম্প্রতি জমির কারবারের সবচেয়ে বেশি অভিযোগ সামনে এসেছে। মিশনের ঘটনার পর বেশ কয়েকটা অভিযোগ এসেছে। একাধিক নাম মিলেছে।” তিনি জানান, মিশনের ঘটনায় ধৃতদের জেরা করে কিছু নাম জানা গিয়েছে। সব খতিয়ে দেখে পর পর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।
মিশনের সেবক হাউসে হামলার ঘটনায় এক সপ্তাহ পরেও মূল অভিযুক্ত প্রদীপ রায় অধরা। এ ব্যাপারে কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ ও স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। শিলিগুড়ির পাশাপাশি কালিম্পঙেও প্রদীপের খোঁজ করেছে পুলিশ। পুলিশ জানতে পেরেছে, প্রদীপ সম্প্রতি শিলিগুড়িতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকত। সামান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম সারানোর কাজ করত। তাই ওই আয়ে তার পক্ষে এত দিন শহরের বাইরে লুকিয়ে থাকা সম্ভব বলে মনে হয় না পুলিশের। সে ক্ষেত্রে কেউ বা কারা তাঁকে টাকা জোগাচ্ছে বলেই অনুমান। এ দিকে, হামলার ঘটনায় ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ বেশ কিছু নতুন নাম জানতে পেরেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই সে সব বলতে চাইছেন না পুলিশ কর্তারা। তদন্তের সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে দাবি শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি পূর্ব দীপক সরকারের।