দুর্যোগে ক্ষতির আশঙ্কায় রবিবার পূর্বস্থলী ২ ব্লকের বেশির ভাগ বাগান থেকে কাঁচা আম পেড়ে নিতে শুরু করেছেন চাষিরা। তাঁদের দাবি, এ বার বেশির ভাগ গাছে আম আসেনি। সামান্য যা আম ফলেছে, তা জামাইষষ্ঠীর সময়ে বাজারে নিয়ে যাওয়ার কথা ভেবেছিলেন তাঁরা। দুর্যোগের কারণে সেই পরিকল্পনা বদল করতে হল। এতে তাঁদের আর্থিক ক্ষতি হবে বলে দাবি চাষিদের।
পূর্বস্থলী ২ ব্লকে রয়েছে অজস্র বড় বড় আমবাগান। হিমসাগর, ল্যাংড়া, মধুকুলকুলি, ফজলি, গোলাপখাস, চন্দ্রমল্লিকা-সহ প্রায় ৩০টি প্রজাতির আমের চাষ হয় সেখানে। সব থেকে বেশি সুস্বাদু আম হল হিমসাগর। কয়েক বছর আগে, ‘রাজ্য আম উৎসবে’ পূর্বস্থলী ২ ব্লকের হিমসাগর আম প্রথম স্থান অধিকার করে। আমচাষিরা জানিয়েছেন, অনেকে নিজের বাগানে, অনেকে আবার অন্যের বাগান চুক্তিতে নিয়ে আমচাষ করেন। এ বার ৯০ শতাংশ গাছেই আম ফলেনি।
চাষিরা জানান, জামাইষষ্ঠীর আগে বিপুল পরিমাণ আম গাছ থেকে পেড়ে, পাকিয়ে পাইকারি বাজারে নিয়ে যাওয়া হয় ফি বছর। রাজ্যের বাইরেও এই সময় পূর্বস্থলীর আমের ভাল চাহিদা থাকে। আম নিয়ে যাওয়ার জন্য বাগানের বাইরে বড় বড় গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ফি বছর। এ বার ফলন কম হওয়ায় এমনিতেই মাথায় হাত চাষিদের। তার মধ্যে দুর্যোগের বার্তা তাঁদের দুরবস্থা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ঝড়ের পূর্বাভাস থাকায় গাছ থেকে আগেই পেড়ে নিতে হচ্ছে আম। ফলে জামাইষষ্ঠীর সময়ে চাহিদা থাকলেও এলাকার আম তেমন একটা মিলবে না।
এ দিন বৃষ্টি মাথায় নিয়েই দুপুরে বাগানে আম পাড়তে দেখা যায় মাদ্রা এলাকার সুরজিৎ শীলকে।তিনি বলেন, ‘‘ঝড়ের পূর্বাভাস রয়েছে। আম পেড়ে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। যে টুকু অর্থ আসবে তাতেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। এ বার ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে আমাদের।’’ এক আমবাগানের মালিক ভাসান শেখের কথায়, ‘‘প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে আম গাছ রয়েছে। এ বার হাতে গোনা কিছু গাছে আম রয়েছে। আশা ছিল যেটুকু মিলবে, তার বড় অংশ জামাইষষ্ঠীর বাজারে বিক্রি করা হবে। দুর্যোগের পূর্বাভাস থাকায় আম পেড়ে নিতে হচ্ছে।’’ আমচাষিদের দাবি, বেশ কিছু আমের এখনও পাকার সময় হয়নি। ঝড়ের আশঙ্কায় কাঁচা আম পেড়ে নিতে হচ্ছে। কারণ ঝড়ে গাছ থেকে পড়া যাওয়া আমের বেশির ভাগই নষ্ট হয়ে যায়।