শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে আবর্জনা সংগ্রহ করে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে জমা করা হয়। কিন্তু সেখানে বর্জ্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে প্রক্রিয়াকরণ না হওয়ায় লাগামছাড়া দূষণ ছড়াচ্ছে, অভিযোগ উঠেছে আসানসোলে। ডাম্পিং গ্রাউন্ডের বর্জ্য ঠিক ভাবে প্রক্রিয়াকরণের দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
কলকাতার দিক থেকে আসানসোলে প্রবেশের মুখে কালিপাহাড়ি এলাকায় ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের ধার ঘেঁষে রয়েছে একটি ডাম্পিং গ্রাউন্ড। এটি আসানসোল পুরসভার সব থেকে বড় ডাম্পিং গ্রাউন্ড। আসানসোল উত্তর বিধানসভার ৩২টি ওয়ার্ড ছাড়াও, লাগোয়া অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা আবর্জনা এখানে জমা করা হয়।
প্রায় ২০ বছরের বেশি সময় ধরে এখানে শহরের আবর্জনা জমা হচ্ছে। ফলে, আবর্জনার পাহাড় তৈরি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এত বছর ধরে এখানে শহরের
যাবতীয় আবর্জনা জমা করা হলেও, উপযুক্ত বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা নেই। সেই কারণে গোটা এলাকায় দুর্গন্ধে ভরে গিয়েছে।
এই ডাম্পিং গ্রাউন্ডের আশপাশে রয়েছে কালিপাহাড়ি, ছাতাপাথর, বকবাঁধি-সহ কয়েকটি বসতি
এলাকা। এই সব এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষোভ, গরমে অবস্থা খুবই খারাপ হয়। প্রখর রোদে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে জমা হওয়া পলিথিন-সহ অপচনশীল পদার্থে আগুন লেগে গেলে ঝাঁঝালো গন্ধের ধোঁয়ায় বিস্তীর্ণ অঞ্চল
ঢেকে যায়। সম্প্রতি এমন ঘটনায় ছাতাপাথর, বকবাঁধি অঞ্চলের শিশু ও প্রবীণেরা শ্বাসকষ্টে ভুগছেন বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা নব্যেন্দু ঘোষ বলেন, “গ্রীষ্মে আগুন লাগার ঘটনা বেশি হয়। তখন ঘরের
দরজা, জানলা বন্ধ করে রাখতে হয়। তাতেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া
যায় না।”
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গরমে রোদের তাপে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে জমে থাকা বর্জ্যের গ্যাস থেকে আগুন ধরে যায়। বাসিন্দারা পুর কর্তৃপক্ষের কাছে এই ডাম্পিং গ্রাউন্ডে বৈজ্ঞানিক উপায়ে বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের দাবি জানিয়েছেন। এলাকার বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিরোধী পুর-প্রতিনিধিরা। কংগ্রেসের পুর-প্রতিনিধি গোলাম সরওয়ারের বক্তব্য, “এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমরাও মেয়রের কাছে আবেদন করেছি।” বিজেপির পুর-প্রতিনিধি গৌরব গুপ্ত বলেন, “সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে
বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ যন্ত্র বসানোর আবেদন করেছি।”
মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের দাবি, “আমরা ডাম্পিং গ্রাউন্ডে প্রয়োজন মতো জল ছেটানোর ব্যবস্থা করি। সেখানে বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা হয়েছে।” মেয়র জানান, কিছু দিন আগে ওই আবর্জনার স্তূপে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছিল। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে জল দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে।