• উত্তাল সমুদ্র, নিরাপত্তা ভেঙে স্নানের চেষ্টা
    আনন্দবাজার | ২৮ মে ২০২৪
  • তাণ্ডব চালানোর পর দূরে সরে গিয়েছে ঘূর্ণিঝড় 'রেমাল'। দুর্যোগ কমে ক্রমশ ছন্দে ফিরছে দিঘা ,মন্দারমনি। সোমবার সকাল থেকে কখনও বৃষ্টি হয়েছে। ঝোড়ো বাতাস বয়েছে কিছুটা, আবার কখনও থেমেছে বৃষ্টি আর হাওয়া। তবে কালো মেঘের আড়াল সরিয়ে সূর্যের দর্শন মেলেনি সৈকত নগরী দিঘায়। দিনভর উত্তাল ছিল বঙ্গোপসাগর।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার মধ্যরাতে যখন স্হলভূমিতে প্রবেশ করে ঘূর্ণিঝড় সে সময় হোটেলবন্দি ছিলেন পর্যটকেরা। সাময়িক ভাবে বিদ্যুৎ চলে যায় গোটা শহর। সোঁ সোঁ শব্দে ঝড় বইতে থাকে, সঙ্গে চলে অঝোরে বৃষ্টি। সোমবার ভোর হতে সেই বৃষ্টি থেমেছে। এ দিন সকালে সমুদ্রের ধারে অল্প সংখ্যক পর্যটক বেড়াতে যান। তবে কিছুক্ষণ বাদে সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা সৈকতের ধার থেকে পর্যটকদের সরিয়ে দেন। পরে অবশ্য অনেক পর্যটক সমুদ্রে স্নান করতে নেমে পড়েন। সমুদ্রের ধারে ঘোড়সওয়ারি শুরু হয়। কিন্তু দ্রুত পর্যটকদের সমুদ্র থেকে টেনে তুলে দেন নুলিয়া এবং সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা। এর পর সারাদিন সমুদ্র ভয়ঙ্কর উত্তাল ছিল। প্রবল বেগে বাতাসও বয়েছে। এক-একটা উঁচু ঢেউ গার্ড ওয়াল টপকে আছড়ে পড়েছে রাস্তায়।

    ঘূর্ণিঝড়ে জন্য ওল্ড এবং নিউ দিঘা জুড়ে সমস্ত স্নান ঘাট গুলিকে মোটা দড়ি দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছিল। সমুদ্রতটে নজরদারি ছিল পুলিশ, নুলিয়া এবং সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের। কলকাতা থেকে সপরিবারে দিঘা বেড়াতে এসেছিলেন শেখ নুর। এ দিন সাত সকালে তাঁরা সমুদ্র স্নানে এসেছিলেন। নুর বলেন, "গতকাল স্নান করতে পারিনি বলে আজ সকলে চলে এসেছিলাম। কিন্তু প্রশাসনের লোকজন বলছেন, আপাতত স্নান করা যাবে না।"

    'রেমালে'র আতঙ্কে শনিবার সন্ধ্যা থেকে খাঁ খাঁ করছিল সৈকত শহর। সমুদ্রের ধারে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি পর্যটকদের। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৭ মে পর্যন্ত সমুদ্র স্নানের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। যদিও সেই নির্দেশিকা অমান্য করে নিউ দিঘায় বহু পর্যটক সমুদ্রে স্নান করছিলেন। রবিবার সন্ধ্যায় পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য নিজে উপকূলবর্তী এলাকা পরিদর্শন করেন। রবিবার রাত দেড়টা নাগাদ আছড়ে পড়ে রেমাল। তীব্র বাতাসের সঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টিও হয়েছে উপকূল এলাকায়।

    দিঘা হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী জানাচ্ছেন," আবহাওয়ার সামান্য উন্নতি হয়েছে ঠিকই। তবে সোমবার পর্যন্ত পর্যটকদের হোটেলে রুম দেওয়ার উপরে প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।" আবহাওয়ার উন্নতি হতে বিকেলে ভিড় বাড়তে শুরু করে মন্দারমনিতে। ব্যক্তিগত গাড়িতে চেপে বহু পর্যটক পৌঁছেছেন সেখানে। দিঘাতেও বিকেলের পর অনেকেই বেরিয়ে পড়েন সমুদ্রের ধারে। তবে দোকানপাট খুব একটা খোলা ছিল না।

    কাঁথির মহকুমাশাসক তথা দিঘা -শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত এগজিকিউটিভ অফিসার শৌভিক ভট্টাচার্য বলছেন, "রেমালের প্রভাবে উপকূল এলাকায় জুড়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। রামনগর এবং খেজুরি এলাকায় যাঁরা মাটির বাড়িতে বসবাস করেন তাঁদের গতকাল রাতে নিরাপদ আশ্রয় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সোমবার সকালে দুর্যোগ কমলে তাঁরা বাড়ি ফিরে গিয়েছেন।"
  • Link to this news (আনন্দবাজার)