আশঙ্কা থাকলেও, ঘূর্ণিঝড় রেমালের দাপটে ঘাটাল মহকুমায় ক্ষয়ক্ষতি সে ভাবে হয়নি। তবে গাছের ডাল ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ায় বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা। বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণেই ঘাটাল পুরশহর-সহ মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা তৈরি হয়। অচল হয়ে পড়ে ঘাটালের গ্রামীণ এলাকায় সজলধারাগুলিও। সোমবারের দুপুরের পর অবশ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ না থাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে ঘাটাল শহর-সহ গ্রামীণ কিছু এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা তৈরি হয়। সোমবার দুপুরের পর পানীয় জলের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যায়।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, রেমাল ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতায় রবিবার দুপুরের পর থেকেই ঘাটাল মহকুমা জুড়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সন্ধ্যার পর ঝড়ের দাপট শুরু হতেই ঘাটাল-সহ দাসপুর, সোনাখালি এলাকার বিস্তীর্ণ অংশে বিদ্যুতের তারে গাছের ডাল ভেঙে পড়ে। বিদ্যুতের খুঁটিও উপড়ে পড়ে। খড়ার, ক্ষীরপাই, রামজীবনপুর, চন্দ্রকোনাতেও বিক্ষিপ্ত ভাবে দেখা যায় একই ছবি।
এরপর সোমবার সকাল থেকেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু করে বিদ্যুৎ দফতর। এ দিন সকালেই ঘাটাল শহরে বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হতে শুরু করে। তবে বিদ্যুতের কাজ চলার জন্য ঘনঘন লোডশেডিংও চলে। দুপুরের পর বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হতে শুরু করে। ঘাটাল পুরসভা সূত্রের খবর, রেমাল সতর্কতায় শহরের রিজ়ার্ভারগুলি ভর্তি করে রাখা হয়েছিল। ট্যাঙ্কগুলিতেও জল মজুত করে রাখা হয়। এ ছাড়া ঘাটাল পুরসভায় পানীয় জল সরবরাহের বিকল্প কোনও ব্যবস্থাও নেই। তার জেরে সোমবার সকাল হতেই ঘাটাল শহরে কম-বেশি সব এলাকাতেই পানীয় জলের সমস্যা দেখা যায়। ঘাটাল শহরের বাসিন্দাদের ক্ষোভ, পুরসভা বিকল্প জেনারেটর কোথায় গেল? বিকল্প ব্যবস্থা রাখলে এত সমস্যা হত না।
পুরসভার চেয়ারম্যান তুহিনকান্তি বেরা বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ না থাকায় সকালের দিকে পানীয় জলের সমস্যা তৈরি হয়েছিল। দুপুরের পর পানীয় জল সরবরাহ স্বাভাবিক হয়।যেখানে বিদ্যুৎ নেই, সেখানে পুরসভার তরফে জলের গাড়ি পাঠানো হয়েছে।’’ অন্য দিকে, ঘূর্ণিঝড়ে ঘাটাল মহকুমার দাসপুর ১ ও দাসপুর ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এই দুই ব্লকে প্রায় ৩০টি খুঁটি উপড়ে পড়ে। পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে মূলত সজলধারার মাধ্যমে পানীয় জল সরবরাহ হয়। বিদ্যুৎ না থাকায় সজলধারার পাম্পগুলি অকেজো হয়ে পড়ে। তার জেরে গ্রামাঞ্চলে পানীয় জলের একটা সমস্যা তৈরি হয়। সোমবার বিকেলের পর গ্রামীণ এলাকাগুলিতেও পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়।