বাংলাদেশি সাংসদের মাংস-হাড় প্যাকেট করার আগে ওজন করে জিহাদ
২৪ ঘন্টা | ২৮ মে ২০২৪
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আমার খুনের তদন্ত যত এগোচ্ছে ততই উঠে আসছে নতুন নতুন তথ্য। ভাড়াটে খুনি সিয়াম ও জিহাদকে কাজে লাগিয়ে আনারের দেহ টুকরো করা হয়। এমনটাই উঠে আসছে তদন্তে। সেইসব টুকরো দেহাংশ ফেলা বিভিন্ন জায়গায়। ধৃতদের জেরা করে সেটাই জানার চেষ্টা করছে পুলিস। দেহাংশ খোঁজার জন্য আজ বাগজোলা খাল, ভাঙড় খাল ও কেষ্টপুর খালে তল্লাশি চলছে। তদন্তের জন্য বাংলাদেশে থেকে এসেছেন সে দেশের গোয়েন্দা প্রধান আরুন আল রশিদ।
ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারা গিয়েছে কোথায় ফেলা হয়েছিল আনারের জুতো, বেল্ট-সহ অন্যান্য সরঞ্জাম। সেই অনুযায়ী তল্লাশি চলছে। যদিও এখনও কিছু পাওয়া যায়নি। ইতিমধ্যেই মূল চক্রী আক্তারুজ্জামান, সিয়াম, মুস্তাফিজুর রহমান-সহ পলাতক চারজনের বিরুদ্ধে লুকাউট নোটিশ জারি করেছে সিআইডি।এদিকে, বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, আনারকে খুন করার পর তার দেহ টুকরো করা হয়। একপর হাড়, মাংস আলাদা করা হয়। মাংসে হলুদ ও অন্যান্য পাউডার মেশানো হয়। শুধু তাই নয় হাড় ও মাংস ওজন করা হয়। এরপর ওজন করে প্য়াকেটে ভরা হয়। আনারের হলুদমাখা দেহের টুকরা একটি ট্রলিতে করে হস্তান্তর হয়েছিল নিউ টাউনের একটি পাবলিক টয়লেটে। খুনের মূল অভিযুক্ত আমানুল্লাহ ওই পাবলিক টয়লেটেই তার সঙ্গী জিহাদ হাওলাদারের হাতে তুলে দিয়েছিল ওই ট্রলি। সোমবার জিহাদকে সঙ্গে নিয়েই ওই পাবলিক টয়লেটে যান বাংলাদেশের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।মঙ্গলবার জিহাদকে নিউ টাউনের অভিজাত বহুতলের ফ্ল্যাটে নিয়ে যান গোয়েন্দারা। আনারকে খুনের পর তার দেহের মাংস ও হাড় আলাদা করে ফেলে এই জিহাদ ও তার সঙ্গী সিয়াম। পেশায় কসাই জিহাদ আন্দাজে মাংস কেটে তার সঙ্গে থাকা ছোট ওজনযন্ত্রে কয়েকটি মাংসের টুকরা ওজন করে দেখেও নিয়েছিল। একেকটি মাংসের টুকরা ছিল ৭০ থেকে ১০০ গ্রাম। আজিমের মাথা আধখানা করে তা-ও টুকরো টুকরো করে দেওয়া হয়। জিহাদের দাবি, মাথার টুকরো অন্য দুই অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর ও ফয়জল অন্য টুকরোর সঙ্গে আলাদা ট্রলিতে পুরেছিল। ওই টুকরোগুলো দু’জন বনগাঁ সীমান্তের কাছে যশোর রোডের উপর ফেলে দেয়।অন্যদিকে, জানা যাচ্ছে আনোয়ারুল আজিম ওরফে আনারের অপরাধের ইতিহাসও ছিল। তার নামে জারি হয়েছিল ইন্টারপোলের রেড কর্নার নোটিস। পুলিস সূত্রে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে দাবি, ২০০৭ সালে আনোারুল আজিমের বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারি করে ইন্টারপোল। তাঁর বিরুদ্ধে সোনা চোরাচালান, হুন্ডি, হত্যা, গুমখুন-সহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়। ওইসব অপরাধের জন্য তার বিরুদ্ধে গ্রেফতার পরোয়ানা জারি করে আদালত। সেইসব শাস্তি থেকে বাঁচতে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেম আনোয়ারুল। ২০০৮ সালে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। কিন্তু আওয়ামি লিগ ক্ষমতায় আসতেই বরাত খুলে যায় আনোয়ারুলের।এবচৎ জানুয়ারি মাসে হওয়া বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনে প্রার্থী হন আনোয়ারুল। সেখানে যে হলফনামা তিনি জমা দিয়েছেন সেখানে তিনি লিখেছেন তাঁর বিরুদ্ধে ২১টি মামলা রয়েছে। তবে কোনও মামলায় তিনি খালাস, কোনও মামলায় তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সেইসব কথাও তিনি উল্লেখ করেন হলফনামায়। ২০০৯ সালে আওয়ামি লিগ ক্ষমতায় আসার পর তাঁর নাম ইন্টারপোলের নোটিস থেকে বাদ দেওয়া হয়। এমন একজনকে আওয়ামি লিগ কীভাবে মনোনয় দেয় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশে।