রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল বুথ ভোটের আগেই সারানোর আশ্বাস
আনন্দবাজার | ২৯ মে ২০২৪
আগামী শনিবার, সপ্তম দফার নির্বাচনে কলকাতার ৫২২টি স্কুলে ভোট গ্রহণ কেন্দ্র হবে। কেন্দ্রগুলিতে ভোট দিতে গিয়ে ভোটারদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তারই প্রস্তুতি চালাচ্ছে কলকাতা জেলা শিক্ষা দফতর। রবিবার রাতে রেমালের তাণ্ডবে শহরের বেশ কিছু স্কুলে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কলকাতা জেলা শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘রেমালের জন্য কোনও স্কুলের পরিকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকলে তা দ্রুত সারিয়ে তোলা হবে।’’
যেমন, মিত্র ইনস্টিটিউশনের ভবানীপুর শাখার প্রধান শিক্ষক রাজা দে জানালেন, তাঁদের স্কুলের নতুন ভবন এবং পুরনো ভবনে চারটি করে মোট আটটি বুথ হবে। তার মধ্যে দু’টি বুথ ভিভিআইপি বুথ। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ভোট দিতে আসেন। রেমালের পর থেকে নতুন ভবনে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। সিইএসসি-কে খবর দেওয়া হয়েছে। রাজা বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকলে আলো-পাখা চলবে না তো বটেই, ট্যাঙ্কেও জল উঠবে না। ফলে ভোটের আগেই বিদ্যুৎ সংযোগ আসা জরুরি। আমাদের পুরনো ভবনে রেমালের তাণ্ডবে একটি জানলার পাল্লা ভেঙে গিয়েছে। সেটিও ভোটের আগে ঠিক করতে হবে।’’ রাজা জানান, তাঁদের স্কুলে শুধু ভোট গ্রহণ কেন্দ্রই নয়, একই সঙ্গে সেক্টর অফিসের কাজও হয়।
খিদিরপুর অ্যাকাডেমির ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শেখ মহম্মদ সালেহিন জানান, রেমালের তাণ্ডবে তাঁদের স্কুলের সামনে ভোটের জন্য তৈরি ত্রিপল ও বাঁশের কাঠামো ভেঙে গিয়েছে। সালেহিন বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের পাশেই শরৎচন্দ্র পাল গার্লস হাইস্কুলে রেমালের তাণ্ডবে দোতলার রেলিং আংশিক ভেঙে গিয়েছে। ওই রেলিংয়ের সঙ্গেই দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল ত্রিপল। দু’টি স্কুলেই ভোটকেন্দ্র আছে। ভোট আসবে, ভোট যাবে। কিন্তু পড়ুয়ারা সারা বছর এখানে ক্লাস করবে। তাই শুধু ভোটকেন্দ্র বলেই নয়, পড়ুয়াদের কথা ভেবেও দ্রুত সারানোর অনুরোধ করেছি শিক্ষা দফতরকে।’’
কলকাতা জেলা শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, শহরের যে স্কুলগুলিতে ভোটকেন্দ্র হবে, সেগুলির তালিকা তৈরি হয়েছে। সেই স্কুলগুলির কী অবস্থা, তা দেখা হচ্ছে। কয়েকটি স্কুল রেমালের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যেমন, রেমালের ধাক্কায় বেহালার বিবেকানন্দপল্লি কেবিকেএস স্কুলের কয়েকটি জানলা-দরজা, ছেলেদের শৌচাগার ও বিদ্যুতের তার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যাদবপুরের বাঘা যতীন হাইস্কুলের যে ঘরে ভোট গ্রহণ হবে, সেটির জানলা ও পড়ুয়াদের শৌচাগার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নাকতলার রামকৃষ্ণ আনন্দ আশ্রমে মেয়েদের শৌচাগার, সন্তোষপুর বিদ্যামন্দির ফর বয়েজ় স্কুলে ছেলেদের শৌচাগার এবং সুজাতা দেবী বিদ্যামন্দিরে শৌচাগারের ক্ষতি হয়েছে।
ওই শিক্ষাকর্তা বলেন, ‘‘ওই সব স্কুলে একাধিক ভোট গ্রহণ কেন্দ্র আছে। সর্বশিক্ষা মিশন তহবিলের সাহায্যে আগামী শনিবারের আগেই সব সারিয়ে তোলা হবে।’’ পাঠভবন স্কুলের একটি দেওয়ালে পড়ুয়ারা নানা রকম ছবি এঁকে রাখত। সেখানে বিভিন্ন বার্তা লেখা থাকত। রেমালের তাণ্ডবে পড়ুয়াদের প্রিয় সেই দেওয়ালের অনেকটা ক্ষতি হয়েছে। কলকাতা জেলা শিক্ষা দফতরের ওই কর্তা জানান, রেমালের জন্য যে সব স্কুলে পরিকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে, সেগুলির পাশাপাশি আগে থেকেই পরিকাঠামো সংক্রান্ত সমস্যা থাকলে তা-ও সারানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে।