সমীর দে, ঢাকা: প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষত স্পষ্ট হতে শুরু করেছে সুন্দরবনে। ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে বুক পেতে জনপদকে রক্ষা করা বনের বিভিন্ন স্থানে উপড়ে গেছে গাছপালা। জলোচ্ছ্বাসে টানা প্রায় ৩০ ঘণ্টা ধরে জলে নিমজ্জিত ছিল সুন্দরবন। এতে বন্য প্রাণী ও বনজীবীদের জন্য করা মিঠে জলের পুকুরে ঢুকে পড়েছে লোনা জল। মিলছে হরিণের মৃতদেহ।মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৬টি হরিণের দেহ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। এ ছাড়া বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বলেশ্বর নদে ভেসে আসা তিনটি হরিণের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অসুস্থ অবস্থায় ১৭টি হরিণকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়ে আবার বনে অবমুক্ত করা হয়েছে। এখনও উদ্ধার ও অনুসন্ধান তৎপরতা চলছে। খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মহম্মদ নূরুল করিম বলেন, ‘এখনও আমরা সব জায়গায় যেতে পারছি না। সাগর ও নদী উত্তাল। প্রায় ২৫ থেকে ৩০ ঘণ্টা জলোচ্ছ্বাস ছিল। ফলে অনেক বন্য প্রাণী মারা যাওয়ার খবর শুনতে পাচ্ছি। আরও বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়ার পর আমরা জানাতে পারব। কটকার পুকুরটি সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। বন বিভাগের বিভিন্ন কার্যালয়ের জানালার গ্লাস, সোলার প্যানেল, পানির ট্যাংক ঝড়ে উড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেটি, পুকুরসহ অন্যান্য স্থাপনা।' সুন্দরবনের দুবলার চর এলাকায় উপড়ে পড়া গাছপালার মধ্য থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা একটি হরিণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে। পোস্টের ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘হরিণটি বড় ভাগ্যের জোরে বেঁচে গেলেও আরও কত হরিণ ও বন্য প্রাণী জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে, তার কোনও হিসাব কখনো পাওয়া যাবে না।’ এদিকে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বলেশ্বর নদের তীরে তাফালবাড়িয়া বেড়িবাঁধ এলাকায় ভেসে আসা তিনটি হরিণের দেহ দেখতে পান এলাকাবাসী।