• বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ট্রেন চালাতে চায় ভারত
    আজকাল | ২৯ মে ২০২৪
  • ‌আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ গেদে থেকে ভুটান সীমান্তবর্তী ডালগাঁও পর্যন্ত বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পণ্যবাহী ট্রেন চালাতে চায় ভারত। পরীক্ষামূলক ট্রেন যাত্রার প্রস্তাব দিয়েছে ভারতীয় রেলওয়ে বোর্ড। বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম জানান, ‘‌বিষয়টি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন দিল্লি সফরে বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে। বাংলাদেশ রেলওয়ের লাভ–লোকসান এবং দেশের স্বার্থ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’‌ বর্তমানে পাঁচটি রুটে বাংলাদেশ–ভারত ট্রেন চলে। তিনটি যাত্রীবাহী, দুটি পণ্যবাহী। বর্তমানে ভারতীয় ট্রেন সীমান্তে আসার পর বাংলাদেশি ইঞ্জিনের সাহায্যে বাংলাদেশে ঢোকে। বাংলাদেশি লোকোমাস্টার (চালক) তা চালিয়ে আনেন। ভারতে ফেরার সময়ও একই নিয়ম অনুসরণ করা হয়। এবার পরীক্ষামূলক যাত্রার জন্য ভারতের সাম্প্রতিক প্রস্তাবে বলা হয়েছে, তারা বাংলাদেশের ওপর দিয়ে দেশটির এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ট্রেন নিয়ে যেতে চায়। ভারত এর আগে প্রস্তাব দিয়েছিল, পরীক্ষামূলক যাত্রা হিসেবে ভারতের গেদে থেকে বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গার দর্শনা অবধি আসবে ট্রেন। সেখান থেকে পাবনার ঈশ্বরদী, নাটোরের আব্দুলপুর, দিনাজপুরের পার্বতীপুর, নীলফামারী সীমান্তবর্তী চিলাহাটী স্টেশন হয়ে ভারতের কোচবিহার জেলার হলদিবাড়ী স্টেশনে যাবে। তবে ভারত প্রস্তাব দিয়েছে, হলদিবাড়ী থেকে ভুটান সীমান্তবর্তী ডালগাঁও স্টেশন পর্যন্ত যাওয়ার। প্রসঙ্গত, ডালগাঁও আলিপুরদুয়ার জেলার একটি স্টেশন। এই রেলপথ উত্তর–পূর্ব ভারতের সাত রাজ্যকে যুক্ত করেছে দেশটির মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে। বর্তমানে কলকাতা থেকে দেশের উত্তর–পূর্বগামী ট্রেন জলপাইগুড়ির ‘চিকেন নেক’ করিডোর ঘুরে যায়। বাংলাদেশের দর্শনা–ঈশ্বরদী–আব্দুলপুর–পার্বতীপুর–চিলাহাটী হয়ে গেলে ৩০০ কিলোমিটার পথ কমবে। অসম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরাম, মণিপুর, অরুণাচল রাজ্যের সঙ্গে বাকি ভারতের রেল যোগাযোগ সহজ হবে। ভারতের প্রস্তাব নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে পরামর্শ করছে। গত ১৫মে বাংলাদেশের রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে একটি বৈঠকও হয়েছে। বৈঠক শেষে জানানো হয়েছে, ভারতের প্রস্তাবের পর দুটি বিকল্প প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। যার একটি হল ট্রেনটির রুট হবে বাংলাদেশের দর্শনা–চিলাহাটী হয়ে ভারতের হলদিবাড়ী–জলপাইগুড়ি–ধুপগুড়ি–ফালাকাটা–ডালগাঁও–জয়পুর হয়ে ভুটান সীমান্ত লাগোয়া হাসিমারা স্টেশন পর্যন্ত। ভারত যে ডালগাঁও স্টেশন পর্যন্ত ট্রেন চালাতে চায়, সেখান থেকে ভুটান সীমান্ত ১০৮ কিলোমিটার দূরে। ডালগাঁওয়ের পর জয়পুর এবং হাসিমারা স্টেশন। হাসিমারা থেকে ভারত–ভুটানের স্থলবন্দর ফুয়েন্ট শিলংয়ের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার। ঢাকার রেল ভবনের মতে, হাসিমারা পর্যন্ত ট্রেন গেলে বাংলাদেশ ভারতের ওপর দিয়ে ভুটানের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে পারবে। হাসিমারায় বাংলাদেশি পণ্য সড়কপথে পাঠাতে পারলে ভুটান যাওয়ার পথ খুলবে। অসমের কোকড়াঝাড় থেকে ভুটানের গেলোপো পর্যন্ত ৫৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করে দিচ্ছে ভারত। ঢাকার রেল ভবনের দ্বিতীয় প্রস্তাবটি হল, ভারত বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে যে ট্রেন চালাতে চায়, এর শেষ গন্তব্য হবে গেলোপো। গেলোপো পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত হাসিমারা পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবে। 
  • Link to this news (আজকাল)