মৃতদেহের সঙ্গে ইলেকট্রিক চুল্লিতে দেওয়া যাবে না বালিশ-তোশক, নির্দেশিকা কলকাতা পুরসভার
আনন্দবাজার | ২৯ মে ২০২৪
শবদাহের সময় চুল্লিতে দেওয়া যাবে না কোনও রকম তোশক, লেপ, বালিশ। সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার কমিশনার ধবল জৈন এই নির্দেশিকা জারি করেছেন। গত কয়েক বছর ধরে পুরসভার কাছে অভিযোগ জমা পড়েছিল, যে শবদেহের সঙ্গে শ্মশানের ইলেকট্রিক চুল্লিতে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে লেপ, বালিশ ও তোশক। সাধারণ মানুষের এমন অজ্ঞতার কারণে ইলেকট্রিক চুল্লি নিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কলকাতা পুরসভাকে। ফলে কখনও চুল্লি পুরোপুরি বিকল হয়ে যাচ্ছে। আবার কখনও শ্মশানের চুল্লিতে লাগানো দূষণ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র কাজ করছে না। যার প্রভাবে কালো ধোঁয়ায় ভরে যাচ্ছে শ্মশানের চারপাশের এলাকা, ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধও। এই ধরনের সমস্যার সমাধান করতে নির্দেশিকা জারি করেছেন কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষ। কলকাতা পুরসভা এলাকার সব শ্মশানে এই নির্দেশিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা পুরসভার নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, লেপ, তোশক, বালিশ জাতীয় জিনিস ইলেকট্রিক চুল্লিতে দেওয়ার ফলে দূষণ বাড়ছে। ফলে শহরের পরিবেশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। বালিশ-তোশক পোড়া কালো ধোঁয়া শহরের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। তাই মৃতদেহের সঙ্গে আর লেপ, বালিশ, তোশক জাতীয় জিনিস চুল্লিতে দেওয়া যাবে না। মৃতদেহের গায়ের বস্ত্র ছাড়া গায়ে একটি চাদর দেওয়া যেতে পারে।
বর্তমানে কলকাতা পুরসভার অধীনে সাতটি শ্মশান রয়েছে। দক্ষিণ কলকাতার কেওড়াতলা মহাশ্মশান, উত্তর কলকাতায় নিমতলা শ্মশান ছাড়াও রয়েছে শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ মহাশ্মশান, স্ট্যান্ড ব্যাঙ্ক রোডে কাশী মিত্র ঘাট শ্মশান, বোড়ালের গড়িয়া মহা শ্মশান, শিরিটি শ্মশান, বীরজুনাওয়ালা শ্মশান। প্রতিটি শ্মশানে দূষণ কমাতে ইলেকট্রিক চুল্লির বন্দোবস্ত করা হয়েছে। শ্মশানের সাব রেজিস্টারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বালিশ, তোশক, কম্বল জাতীয় জিনিস থাকলেও তা যেন চুল্লিতে প্রবেশ করানোর আগে সরিয়ে নেওয়া হয়।
কলকাতা পুরসভার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, "শহরের পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই বিভিন্ন শ্মশানের চুল্লিতে একাধিক বায়ুদূষণ রোধের যন্ত্র লাগানো থাকে। মৃতদেহ দাহ করার সময় কার্বনকণা বাতাসে মেশে। সেই দূষণ কমাতেই এই ধরনের যন্ত্রগুলি লাগানো রয়েছে। কিন্তু বালিশ, তোশক জাতীয় জিনিসগুলি চুল্লির ভিতরে ঢোকানো হলে মেশিনগুলি বহুলাংশে অকেজো হয়ে পড়ছে। তাই বালিশ, তোশকের মতো জিনিস যাতে আর ইলেকট্রিক চুল্লিতে না দেওয়া হয়, তা নিশ্চিত করতেই এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।"