সচরাচর হাতি যেখানে ঢোকে না, মঙ্গলবার রাতে প্রায় দু’ঘণ্টা সে এলাকাতেই দাপিয়ে বেড়াল হাতি। ভাঙল দু’টি ঘরের দেওয়াল, সেগুন গাছ। ছড়াল আতঙ্ক। আলিপুরদুয়ারের কালচিনি ব্লকের হ্যামিল্টনগঞ্জ ডিপোপাড়া এলাকার ঘটনা।
বাসিন্দাদের বক্তব্য, ওই এলাকা থেকে জঙ্গল বেশি দূরে না হলেও, সচরাচর বন্যজন্তুদের আনাগোনা সেই এলাকায় নেই। তবে করোনা-কালে এক বার হাতি ওই এলাকায় ঢুকলেও, কোনও ক্ষতি করেনি। এ দিন আচমকা সেখানেই হাতি চলে আসায় একাধিক প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বাবলু মজুমদার ও প্রভাত সরকার বলেন, ‘‘এই এলাকায় এর আগে কোনও দিন হাতি কিছু ক্ষতি করেনি, এই প্ৰথম। গভীর রাতে হাতি জঙ্গল থেকে বেরিয়ে হয়তো পথ ভুলে আমাদের এলাকায় ঢুকে পড়েছিল। হাতির হাতির হানায় আমাদের দু’জনের বাড়িরই দেওয়াল ভেঙে গিয়েছে।’’ খবর পেয়ে এলাকায় বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের হ্যামিল্টনগঞ্জ রেঞ্জের কর্মীরা পৌঁছে কয়েক ঘন্টার চেষ্টায় হাতিটিকে জঙ্গল ফিরিয়ে দেন।
বন দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘গত পাঁচ বছরে হ্যামিল্টনগঞ্জ থেকে হাতির হানার খবর আসেনি।’’ মঙ্গলবার রাতে বৃষ্টি হওয়ায় পথ ভুলে হাতিটি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে বলে অনুমান বন দফতরের। পাশাপাশি, বুধবার বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় এ দিন রাতেও হাতিটি হ্যামিল্টনগঞ্জের কোনও এলাকায় প্রবেশ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। সে জন্য হ্যামিল্টনগঞ্জের ডিপোপাড়া-সহ আশপাশের এলাকায় বনকর্মীদেরও রাতে মোতায়েন রাখা হবে বলে বন দফতরের তরফে জানানো হয়।
এ বিষয়ে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপ-ক্ষেত্র অধিকর্তা হরি কৃষ্ণন বলেন, ‘‘হাতি সচরাচর ওই এলাকায় ঢোকে না। এ দিন বৃষ্টির জেরে, সম্ভবত পথ হারিয়ে সে লোকালয়ে চলে আসে।’’
অন্য দিকে, আলিপুরদুয়ার দুই ব্লকের বড় চকিরবস এবং ছোট চকিরবস গ্রামে মঙ্গলবার রাতে দু’টি হাতি একাধিক বাড়ি ভেঙেছে বলে অভিযোগ উঠল। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বক্সার জঙ্গল থেকে দীর্ঘদিন ধরে হাতি বেরিয়ে এলাকায় বাড়িঘরের পাশাপাশি কৃষিজমির ফসল নষ্ট করে চলেছে। মঙ্গলবার রাতে দু’টি গ্রামের চারটি বাড়ি হাতির হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে অভিযোগ। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি ক্ষতিপূরণের দাবি জানানোর পাশাপাশি, ওই এলাকায় বনকর্মীদের নজরদারি বাড়ানোর দাবি করেছেন। বন দফতর জানায়, পরিবারগুলি ক্ষতিপূরণের আবেদন জানালে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।