ঘাটালের উত্তরে অংশে সংগঠনের নিরিখে এগিয়ে ছিল বিজেপি। লড়াইয়ে ছিল শাসক তৃণমূলও। তুল্যমূল্য লড়াইয়ের পর এ বার ফলের প্রতীক্ষা। যুযুধান দু’পক্ষই আশাবাদী, ভোটের ফল তাদের অনুকূলেই থাকবে। ভাল লিড আসবে উত্তর থেকেই।
শান্তিতেই ভোট মিটেছে। ঘাটালে স্বত:ফূর্ত ভোটও হয়েছে। ঘাটাল লোকসভার সব প্রার্থীর ভাগ্য এখন বন্দি ‘স্ট্রং রুমে’। ঘাটাল রবীন্দ্র শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ে কড়া নিরাপত্তায় রাখা আছে সমস্ত ইভিএম। এখন বুথ ভিত্তিক সমীক্ষায় ব্যস্ত রাজনৈতিক দলগুলি। সেখানে কর্মীদের উদ্দেশে কোনও পক্ষের নির্দেশ, জল না মিশিয়ে সঠিক তথ্য জমা দেওয়ার। আবার কোনও পক্ষের নির্দেশ, সন্দেহ হলে ছেড়ে দাও। মিথ্যা তথ্য দলকে যেন না দেওয়া হয়। এই সবের মাঝে ঘাটালে যুযুধান তৃণমূল বিজেপি দু’পক্ষের অন্দরের আলোচনায় উঠে আসছে ঘাটালের উত্তর অংশের এলাকা গুলিতে কী হবে। অর্থাৎ সেখানে চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা কোন দলের পক্ষে রায় দেয় সে দিকেই নজর সব পক্ষের।
ঘাটালের উত্তর অংশ বিজেপির সংগঠন বেশ শক্তপোক্ত। সংগঠনের জোরেই ঘাটালের ওই এলাকায় চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বিজেপির প্রভাবও যথেষ্ট রয়েছে বলে খবর। তারমধ্যে অবশ্য গত পঞ্চায়েত ভোটে ইড়পালা এবং সুলতানপুর পঞ্চায়েতে বিজেপি বোর্ড গঠনের জন্য এগিয়ে থাকলেও বাকি মনসুকায় দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের হাতে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিধানসভা ভোটের আগে উত্তর অংশে সংগঠন ফিরিয়ে আনতে তৎপর হয় শাসক তৃণমূল।সংগঠন এবং জন সমর্থন টিকিয়ে রাখতে সক্রিয় হয় পদ্ম শিবিরও। ভোটের দিন ঘাটালে যে সব এলাকায় গোলমালের খবর এসেছিল, তার সব গুলি ছিল ওই উত্তরের গ্রাম গুলি ঘিরেই। তবে দিনের শেষে সেখানে ভোট হয়েছে অবাধ ও শান্তিতে। আর এতেই আশার আলো দেখছে দু’পক্ষই।
গত বিধানসভা ভোটে ঘাটাল হাতছাড়া হয়েছিল শাসকের। ব্যবধান সামান্য হলেও বিধানসভা আসনটি দখল করেছিল বিজেপি। গত বছর পঞ্চায়েত ভোটে অবশ্য ভাল ফল করে শাসক তৃণমূল। তিনটি পঞ্চায়েত বাদে সবকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ভাল ফল করে তৃণমূল। এ বার তাই লোকসভা ভোটে ঘাটাল বিধানসভায় ভাল ব্যবধানে এগিয়ে থাকতে মাঠে নামে তৃণমূল। তারজন্য ঘাটালের উত্তর এলাকাকে অনুকূলে আনতে সংগঠনকে সক্রিয় করে তারা। প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দোলইকে বাড়তি দায়িত্বও দেওয়া হয়। তা ছাড়া ব্লক নেতৃত্বও অঞ্চল এবং বুথ স্তরে সমন্বয় রেখে নজরদারি চালাচ্ছিল। পিছিয়ে ছিল না পদ্ম শিবিরও। ভোটের আগে সংগঠন অটুট রাখতে একাধিক কর্মসূচি নিয়েছিল তারা। অর্থাৎ লড়াইয়ে ছিল দু’পক্ষই। দিনের শেষে সেই উত্তরে ভোটের ফলাফল কী হয়,নজর এখন সেই দিকেই।
ঘাটালের প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দোলই বলছিলেন, “ভোট হয়েছে শান্তিতে। মানুষ ভোট দিয়েছেন। ঘাটাল ব্লক থেকেই দশ হাজার লিড পাবে তৃণমূল। উত্তরের ফলাফল দলের অনুকূলেই আসবে।” যদিও ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট বলেন, “আমরা চাইছিলাম,মানুষ যেন তার নিজের ভোট টা দিতে পারে। মানুষ ভোট দিয়েছেন। আমরা আশাবাদী, ফল দলের পক্ষেই থাকবে।”