• কথা কাটাকাটির পরে বাবার উপরে ‘অভিমান’, বাড়ি ছাড়ল নাবালিকা
    আনন্দবাজার | ৩০ মে ২০২৪
  • এক নাবালিকার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে। দু’দিন পরেও তার সন্ধান পাননি বাড়ির লোক। বারাসত থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেছেন তাঁরা। পুলিশ জানিয়েছে, তার ভিত্তিতে মেয়েটির খোঁজ শুরু হয়েছে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নাবালিকা এলাকারই একটি স্কুলের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। তারা দুই বোন। তাদের বাড়ি বারাসত পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাঠগোলা নোয়াপাড়া এলাকায়। মেয়েটির বাবা একটি সংস্থায় ডেলিভারি কর্মীর কাজ করেন। শনিবার কাজ সেরে বাড়ি ফিরে তিনি অফিসের টাকার হিসাব নিয়ে বসেছিলেন। বাবাকে টাকা গোনার কাজে সাহায্য করছিল ছোট মেয়ে। পরে টাকার হিসাব করে ওই ব্যক্তি বুঝতে পারেন, দেড় হাজার টাকা কম আছে। তিনি মেয়েকে ডেকে জিজ্ঞাসা করেন, সে ওই টাকা নিয়েছে কি না। কিশোরী জানায়, সে টাকা নেয়নি। বিষয়টি নিয়ে বাবা-মেয়ের মধ্যে সাময়িক বাদানুবাদ হয়। জানা গিয়েছে, সেই সময়ে ওই কিশোরী পাল্টা বাবাকে বলে, ‘‘আমি কি চোর?’’ উত্তরে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘‘হ্যাঁ, তুই চোর।’’

    পুলিশের ধারণা, বাবার মুখে এ কথা শুনে অভিমান হয় ওই কিশোরীর। কিন্তু বাড়ির অন্যদের সে ব্যাপারটা বুঝতে দেয়নি। ওই কিশোরীর দিদি জানিয়েছেন, রবিবার সাতসকালে পড়তে যাওয়ার নাম করে বেরিয়ে যায় তাঁর বোন। কিন্তু দীর্ঘ ক্ষণ পরেও সে
    বাড়ি না ফেরায় তিনি শিক্ষককে ফোন করে জানতে পারেন, তাঁর বোন সে দিন পড়তেই যায়নি। পরে বাড়ির লোকজন দেখেন, ঘরের সোফায় ওই কিশোরীর লেখা একটি চিরকুট পড়ে আছে। নাবালিকার দিদি বলেন, ‘‘ওই চিরকুটে বোন লিখেছে, ‘বাবার কথা আমি মেনে নিতে পারিনি। তাই বাড়ি থেকে চলে যাচ্ছি। নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে ফিরে আসব।’’’ তিনি পুলিশকে আরও জানিয়েছেন, তাঁর বোন পড়তে যাওয়ার নাম করে ব্যাগে জামাকাপড় এবং মোবাইল ফোন নিয়ে গিয়েছে। যদিও কিশোরীর মোবাইল ফোন ‘সুইচড অফ’ বলে জানিয়েছে পুলিশ।

    কিশোরীর পরিজনেরা জানিয়েছেন, তাঁরা তাঁদের আত্মীয় এবং পরিচিত থেকে শুরু করে মেয়েটির বন্ধুদের বাড়িতেও খোঁজখবর করেছেন। কিন্তু তার সন্ধান মেলেনি। রবিবার বারাসত থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে কিশোরীর পরিবার। মঙ্গলবারও থানায় গিয়েছিলেন তার বাবা। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, পুলিশ তাঁকে সাহায্য করেনি। উল্টে নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত থাকার কথা বলে ফিরিয়ে দিয়েছে। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, একটি এফআইআর দায়ের হয়েছে। গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

    বারাসত থানার আইসি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গত দু’দিনে ওই কিশোরী যাঁদের সঙ্গে কথা বলেছে, তাঁদের মোবাইল ফোনের টাওয়ারের অবস্থান খতিয়ে দেখে জানা গিয়েছে, মেয়েটি সম্ভবত বিহারে আছে। সেই অনুযায়ী ইতিমধ্যেই বিহারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে বারাসত থানার পুলিশের একটি দল।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)