• ব্যাঙ্ক থেকে সওয়া ১ কোটি হাতিয়ে ১১ বছর ধরে গা ঢাকা! অবশেষে পুলিশের জালে জালিয়াত
    প্রতিদিন | ৩১ মে ২০২৪
  • অর্ণব আইচ: অভিযুক্তর সন্ধান পেলেই দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা। সওয়া এক কোটি টাকার ব‌্যাঙ্ক জালিয়াতির মামলায় ২০১৩ সালে এই পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন দিল্লির তৎকালীন পুলিশ কমিশনার। কিন্তু পুরস্কার ঘোষণার পর থেকে ১১ বছর ধরে এই কলকাতাতেই গা ঢাকা থেকে ছিল অভিযুক্ত যুবক। মোবাইলের সূত্র ধরে কলকাতা পুলিশের সহযোগিতায় ১১ বছর পর পার্ক স্ট্রিট অঞ্চলের একটি ভাড়া বাড়ি থেকে দিল্লি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হল অভিযুক্ত।

    পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ওই ব্যক্তির নাম শাহজাহান মণ্ডল। ঘটনার সূত্রপাত ২০০৮ সালে। আট বন্ধু মিলে ঠিক করেছিল আমদানি রপ্তানির ব্যবসা করবে। সেইমতো দিল্লির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে যায় তারা। ব‌্যাঙ্ক আমদানি রপ্তানির ব‌্যবসার জন‌্য তাদের লেটার অফ ক্রেডিট জমা দিতে বলে। তারা এর ভুয়ো নথি তৈরি করে ব‌্যাঙ্কে জমা দিয়ে ১ কোটি ২৭ লাখ টাকা ঋণ নেয়। পুরো টাকাই তারা হাতিয়ে নেয়। ব‌্যাঙ্ক কোনও টাকা ফেরৎ না পেয়ে ২০০৯ সালে দিল্লি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায়। দিল্লি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের আর্থিক দুর্নীতি শাখা এর তদন্ত শুরু করে। প্রথম চার বছরের মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। কিন্তু গা ঢাকা দেয় বাকি অভিযুক্তরা। সন্ধান না মেলায় ২০১৩ সালে তাদের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হয়। দিল্লি পুলিশের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার ওই বছরই তাদের গ্রেপ্তারির জন‌্য ৫০ হাজার টাকা করে পুরস্কার ঘোষণা করেন। কয়েক মাস আগে দিল্লির গোয়েন্দারা শাহজাহান মণ্ডলের মোবাইল নম্বর জোগাড় করেন।

    সেই সূত্র ধরেই তাঁরা জানতে পারেন যে, দিল্লি থেকে পালিয়ে আসার পর কলকাতায় গা ঢাকা দেয় সে। পার্ক স্ট্রিটের ইলিয়ট রোডে একটি বাড়ি ভাড়া নেয়। সেখানে পরিবার নিয়ে থাকতে শুরু করে শাহজাহান। কলকাতায়ই ব‌্যবসা করতে সে। বুধবার রাতে পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ইলিয়ট রোডের ওই বাড়িতে হানা দেন দিল্লির গোয়েন্দারা। তাঁরা শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করেন। বৃহস্পতিবার ব‌্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তাকে ট্রানজিট রিমান্ডে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। ১ জুনের মধ্যে তাকে দিল্লির পাতিয়ালা আদালতে তোলা হবে। ইতিমধ্যেই দিল্লির গোয়েন্দারা তার মোবাইল ও মোবাইলের কল লিস্ট পরীক্ষা করতে শুরু করেছেন। সেই সূত্র ধরেই বাকি অভিযুক্তদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)