• ‌হুগলির আম পাড়ি দিচ্ছে উত্তরপ্রদে‌‌শে
    আজকাল | ৩১ মে ২০২৪
  • মিল্টন সেন, হুগলি:‌ যোগী রাজ্যে আমের চাহিদা এবার মেটাবে হুগলি। জামাই ষষ্ঠীতে উত্তরপ্রদেশের জামাইদের পাতে পড়বে বাংলার আম। বরাবরই আম চাষের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে এসেছে মালদা জেলা। তার পরেই রয়েছে জেলা হুগলির নাম। জেলার অন্তর্গত ব্যান্ডেল, সুগন্ধা, চুঁচুড়া, পোলবার গোটু সহ জেলার একাধিক জায়গার বিস্তীর্ণ এলাকায় বড় বড় আমের বাগান রয়েছে। প্রত্যেক বছর সেই বাগানগুলিতে বিভিন্ন প্রজাতির আমের ফলন হয়ে থাকে। যেমন, ল্যাংড়া, হিমসাগর, বোম্বাই, গোলাপখাস, চ্যাটার্জি, পেয়ারাফুলি, আম্রপালি ইত্যাদি বিভিন্ন প্রজাতির আমে ছেয়ে যায় বাগান। মূলত কৃষকরা বাগান মালিকদের থেকে লিজ নিয়ে আমের চাষ করে থাকেন। তাই জেলার বাজারের পাশাপাশি ফলনের একটা অংশ তাঁরা প্রতিবছর ভিন রাজ্যে রপ্তানি করে থাকেন। পূর্ববর্তী সময়ে দেখা গেছে হুগলি থেকে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, চেন্নাই, দিল্লি সহ অন্যান্য একাধিক রাজ্যে পাড়ি দিয়েছে এ রাজ্যের আম। আর এই রপ্তানি করে লাভের মুখ দেখেছেন হুগলির আম চাষীরা। তবে গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছরে আমের ফলন কম। দাম আকাশ ছুঁয়েছে। বাজারে চাহিদা অনুযায়ী যোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই এবছর উত্তরপ্রদেশ ছাড়া রপ্তানির তালিকা থেকে বাদ পড়েছে একাধিক ভিন রাজ্যের নাম। এবছর ফলন কম হওয়ার একাধিক কারণ রয়েছে। প্রথমত আমের মুকুল আসার সময় বৃষ্টির দেখা মেলেনি। তার উপর তীব্র গরম। অসময়ে ঝরে পড়েছে আমের মুকুল। বেড়েছে ওষুধের দাম, শ্রমিকের খরচ। তাই লিজ নিয়ে বাগান চাষ করেছেন এমন অনেক কৃষকই এ বছর লাভের মুখ দেখতে পাবেন কি না তা নিয়ে যথেষ্টই সন্দেহ রয়েছে। আম চাষীরা মনে করছেন, এবছর আমের যা ফলন, তাতে চাষের খরচের টাকাই উঠবে না। আমের মুকুল আসার পর গাছে তিনবার স্প্রে করতে হয়। নাবী বোলের সময় আবহাওয়া খারাপ থাকার জন্য মুকুল ঝরে গেছে। ওষুধের দাম অত্যাধিক বেড়ে গেছে। তার ওপর শ্রমিকের মজুরি প্রায় দ্বিগুণ। আড়াই থেকে তিন লাখ টাকার লিজ নিয়ে চাষ করা বাগানে আম তৈরি করা থেকে পাড়া পর্যন্ত আরও প্রায় দু’‌লাখ টাকা খরচ হয়। যা ফলন তাতে সেই খরচ উঠবে না। আম ব্যবসায়ী তাপস পাল বলেছেন, ফলন কম হওয়ায় এবছর আমের দাম অনেকটাই বেশি। গাছ পাকা হিমসাগর পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে ৮০–৮৫ টাকায়। গোটু বাজার থেকে অন্যান্য বছর প্রতিদিন কম করে ১০০ টা গাড়ি ভিন রাজ্যে যেত। কিন্তু এ বছর সেই পরিমাণ কমে ৮ থেকে ১০ টা করে গাড়ি লোড করা হচ্ছে। এ বছর এই জেলা থেকে ৮ থেকে ১০ টন আম ভিন রাজ্যে রপ্তানি করা হচ্ছে, যা অন্যান্য বছরের তুলনায় মাত্র দশ শতাংশ। ছবি:‌ পার্থ রাহা
  • Link to this news (আজকাল)