অর্ণব আইচ: মুদি ও সবজির দোকানের লাইসেন্স নিয়ে চলছে ভুয়ো কল সেন্টার! বহুদিন ধরেই চলছিল এই কারবার। এখান থেকেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে জালিয়াতি করে টাকা হাতানোর অভিযোগ রয়েছে। তল্লাশি চালিয়ে এবার সেই কল সেন্টারের অধিকর্তাকে গ্রেপ্তার করলেন লালবাজারে গোয়েন্দারা।
এই ঘটনায় পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ঐ ব্যক্তির নাম অসীম দত্ত। সূত্রের খবর অনুযায়ী, সম্প্রতি মধ্য কলকাতার বউবাজার থানা অঞ্চলে একটি ভুয়ো কল সেন্টারের হদিশ পান লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখার আধিকারিকরা। কল সেন্টারে কর্মরত সাতজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু মোবাইল ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।
জেরার মুখে ধৃতরা দাবি করে, তারা ?কলার?-এর কাজ করে মাত্র। বিভিন্ন রাজ্যের বাসিন্দাদের ফোন কল করে তারা টোপ দিত, মোবাইল টাওয়ার বাড়িতে বসালে প্রচুর টাকা রোজগার করা যাবে। আবার কখনও পুরনো বিমা নবীকরণের নামেও চলত জালিয়াতি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যাকে ফোন করা হত, তিনি রাজি হয়ে গেলে তার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা চাওয়া হত। ওই টাকা নেওয়ার পরে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিত জালিয়াতরা।
এভাবেই কলকাতা-সহ এই রাজ্য, এমনকী, ভিন রাজ্যের বাসিন্দাদেরও ফোন করে লাখ লাখ টাকা জালিয়াতি করত অভিযুক্তরা। গোয়েন্দারা ধৃতদের জেরা করে জানতে পারেন, এই চক্রের আসল মাথা, অসীম পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সেইমতো তার বাড়িতেও হানা দিয়েছিল পুলিশ। যদিও কোথাও তার সন্ধান মিলছিল না।
অবশেষে বুধবার সন্ধ্যাবেলায় গোয়েন্দারা খবর পান, মধ্য কলকাতায় এনআরএস হাসপাতালে কাছাকাছি আসবে অসীম। সেইমতো তল্লাশি চালিয়েই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কোনও লাইসেন্স নিয়ে সে কল সেন্টার চালাচ্ছিল কি না, সেই ব্যাপারে অসীমকে জেরা করা হলে সে লাইসেন্সের নথি দেখায়। তা দেখেই গোয়েন্দারা হতবাক হয়ে যান।
কারণ, ওই লাইসেন্স আদৌ কোনও কল সেন্টারের নয়। মুদিখানার দোকান ও সবজির দোকানের লাইসেন্স জোগাড় করেছিল সে। সেই লাইসেন্স সামনে রেখেই চলত ভুয়ো কল সেন্টার। এই ব্যাপারে অসীমের কোনও সহযোগী রয়েছে কি না, তা জানার জন্য তাকে জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।