• কয়লা কারবারের সঙ্গেও যুক্ত শাহজাহান? জমি, ভেড়ির পর এ বার নতুন কীর্তি প্রকাশ্যে ইডির তদন্তে
    আনন্দবাজার | ৩১ মে ২০২৪
  • বিঘার পর বিঘা জমি দখল করে মাছের ভেড়ি তৈরি, এলাকায় অত্যাচার, জবরদখলের মতো অভিযোগ ছিলই, এ বার সন্দেশখালির শাহজাহান শেখের নতুন কীর্তি প্রকাশ্যে এল। ইডির তদন্তে ওই কীর্তির কথা উঠে এসেছে বলে খবর। কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি, শাহজাহান কয়লার কারবারের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।

    ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়লার কারবারে শাহজাহানের কীর্তির প্রমাণ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। শাহজাহান বেআইনি ভাবে কয়লা থেকেও তোলা আদায় করতেন বলে অভিযোগ। কয়লার জোগানে শাহজাহান এবং তাঁর দলবলকে টাকা দিতে হত। কর হিসাবেই ওই টাকা তাঁরা নিতেন বলে অভিযোগ। ইডির চার্জশিটেও তার উল্লেখ আছে বলে সূত্রের খবর। এ ছাড়া, জমি সংক্রান্ত যে কোনও লেনদেনের ক্ষেত্রেও শাহজাহানেরা টাকা তুলতেন বলে জানতে পেরেছে ইডি।

    দুর্নীতির মাধ্যমে ২৬১ কোটি টাকা আয় করেছেন শাহজাহান, দাবি ইডির। তাঁর বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠে এসেছে ইডির তদন্তে, তার মধ্যে অন্যতম এই কয়লায় তোলাবাজি। এ ছাড়া, গ্রামবাসীদের কাছ থেকে জোর করে দামি জিনিসপত্র এবং নগদ টাকাও তাঁরা হাতিয়ে নিতেন বলে অভিযোগ। শাহজাহান শেখ সাবিনা ফিশার সাপ্লায়ার, শেখ সাবিনা মাছের আড়তের মাধ্যমেও দুর্নীতি করেছেন বলে ইডির অভিযোগ। মার্কেট থেকে কমিশন এবং ভাড়া বাবদ টাকা তুলতেন তিনি। এ ছাড়াও অভিযোগের তালিকায় রয়েছে ইটভাটার দুর্নীতি।

    ইডির আরও অভিযোগ, শাহজাহানের ভাই শেখ আলমগির এবং সন্দেশখালির আর এক নেতা তথা শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ শিবপ্রসাদ হাজরা শাহজাহানের নাম করে ভয় দেখাতেন এবং জোর করে আদায় করে নিতেন বিভিন্ন সরকারি টেন্ডার। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানতে পেরেছে, সন্দেশখালিতে গুন্ডাদের একটি দল তৈরি করেছিলেন শাহজাহানেরা। শক্তিশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের হাত ছিল তাঁদের মাথায়। সেই জোরেই তাঁরা এত দূর এগিয়েছিলেন। ইডির দাবি, রেশন ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সহায়তাতেই শাহজাহানদের বাড়বাড়ন্ত হয় সন্দেশখালিতে। এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করে ফেলেছিলেন তাঁরা। গ্রামবাসীরা সকলেই তাঁদের ভয় পেতেন। তাঁরাই এলাকায় শেষ কথা বলতেন। এমনকি, সন্দেশখালিতে খুন এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগও রয়েছে শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে।

    শাহজাহান বর্তমানে জেলে। রেশন ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁর নাম উঠে এসেছিল ইডির সামনে। সন্দেশখালিতে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে বাধা পান ইডি আধিকারিকেরা। তাঁদের মারও খেতে হয়েছিল। সে দিন শাহজাহানকে ধরা যায়নি। এর পর দীর্ঘ দিন তিনি ‘ফেরার’ ছিলেন। পরে রাজ্য পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে তুলে দেয়। বর্তমানে তিনি জেল হেফাজতে রয়েছেন। নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শাহজাহান। তাঁকে ছ’বছরের জন্য সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)