তৃণমূল বিধায়ক ও প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির হোসেন নিজের জঙ্গিপুর বিধানসভা ক্ষেত্রে বিজেপিকেই তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ মনে করছেন। তাঁর মতে, বাম ও কংগ্রেস জোট থাকবে তৃতীয় স্থানে।
জঙ্গিপুর লোকসভায় যে ৭টি বিধানসভা রয়েছে তারই একটি জঙ্গিপুর। ২০১৬ সালে জাকির জঙ্গিপুর বিধানসভায় তৃণমূল প্রার্থী হয়ে ২০৬৩৩ ভোটে হারান সিপিএমকে। কংগ্রেস ছিল তৃতীয় স্থানে, বিজেপি চতুর্থতে।২০২১ সালে জাকির হোসেন ফের জঙ্গিপুরে জেতেন ৬৮.৮২ শতাংশ ভোট পেয়ে এবং বিজেপি প্রার্থীকে ৯২,৪৮০ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে। আরএসপি-র বাম প্রার্থীর ভোট জোটেনি ১০ হাজারও। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গিপুর বিধানসভা ক্ষেত্রে তৃণমূল মাত্র ১৩ হাজার ভোটে এগিয়েছিল বিজেপির চেয়ে। কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের ভোটের ফারাক ছিল প্রায় ৫১ হাজারের।
তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেন বলছেন, “এ বারের লোকসভা ভোটেও জঙ্গিপুর বিধানসভায় বিজেপিই থাকবে দ্বিতীয় স্থানে। হিসেব মতো ব্যবধান থাকবে হাজার পনেরোর। কংগ্রেস থাকবে তৃতীয় স্থানে, ব্যবধান হবে হাজার ২৫। দু’এক হাজারের এদিক ওদিক হতে পারে।”
জঙ্গিপুর বিধানসভা কেন্দ্রটিতে রয়েছে রঘুনাথগঞ্জ ১ ব্লকের ৬টি অঞ্চল, সুতি ১ ব্লকের ২টি অঞ্চল ছাড়াও জঙ্গিপুর পুরসভার দু’টি শহর জঙ্গিপুর ও রঘুনাথগঞ্জ।
কংগ্রেসের হিসেবে, বংশবাটি, আহিরণ, জরুর, দফরপুর, কানুপুর ও মির্জাপুরে এগিয়ে থাকবেন তারা। জঙ্গিপুর শহরের ১৩টি ওয়ার্ডেও এক নম্বরে থাকবে কংগ্রেস। সব মিলিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলেই মনে করছে কংগ্রেস।
কংগ্রেস প্রার্থী মুর্তজা হোসেন বলেন, “জঙ্গিপুর বিধানসভায় নিঃশব্দে ভোট হয়েছে এ বারে। যে ভাবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখা গিয়েছে তাতে কংগ্রেস এগিয়ে থাকবে বলেই আশাবাদী আমরা। বিজেপির ভোট এ বারে জঙ্গিপুরে যথেষ্ট কমবে। তা ছাড়া গত লোকসভায় সিপিএম আলাদা লড়েছিল। এ বারে জোট করে লড়াই হয়েছে তাই নয়, বেশ কিছু ভোট যাবে আইএসএফের দিকে। স্বভাবতই জঙ্গিপুর বিধানসভা ক্ষেত্রে তৃণমূলের এগিয়ে
থাকার কথায় নয়।”
বিজেপির ধনঞ্জয় ঘোষের কথায়, “জাকির হোসেন যা বলেছেন তার উল্টোটা ঘটবে জঙ্গিপুর বিধানসভায়। এক নম্বরে থাকবে বিজেপি তাই নয়, ১৫ হাজারে এগিয়ে থাকব আমরাই। আহিরণ, বংশবাটি, জামুয়ার , জরুর, মির্জাপুর এবং রঘুনাথগঞ্জ শহরে যথেষ্ট ব্যবধানে বিজেপি এগিয়ে থাকবে তৃণমূলের চেয়ে। এর উপর তৃতীয় পক্ষের ভোট কাটাকুটির অঙ্ক তো আছেই। এ ছাড়াও এলাকায় কান পাতলেই শুনবেন এ বারে তৃণমূল কর্মীরাই দলীয় প্রার্থীকে হারাতে ভোট দিয়েছেন। সেই ভোট পড়েছে বিজেপি ও বিরোধীদের বাক্সে। আসলে ক্ষমতার ঘোরে থাকায় তৃণমূলের নেতারা এখনও ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না জঙ্গিপুরে কী ঘটতে চলেছে। এ জেলায় তৃণমূল একটি আসনও পাবে না।’’