• তৃণমূল-আইএসএফ সংঘর্ষে ফের উত্তপ্ত ভাঙড়, ঝরল রক্ত! আহত দু’পক্ষের কর্মীরা, ঘটনাস্থলে পুলিশ
    আনন্দবাজার | ০১ জুন ২০২৪
  • শনিবার মধ্যরাত থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভাঙড়। তৃণমূল-আইএসফ সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে নতুন করে অশান্তি শুরু হয়। ঝামেলায় এক তৃণমূল কর্মীর মাথা ফেটেছে। অভিযোগ আইএসএফের দিকে। পাল্টা দলীয় পতাকা লাগাতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে আইএসএফ। শনিবার সকালেও উত্তেজনা ছিল এলাকায়।

    শনিবার মধ্যরাতেই আবারও পুরনো চেহারা নিল ভাঙড়। পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে নতুন করে অশান্তি শুরু ভাঙড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে ভাঙড়ের চণ্ডীহাট গ্রামে। তৃণমূলের অভিযোগ, তারা দলীয় পতাকা লাগাতে গেলে আইএসএফের সমর্থকেরা গালাগালি করে তাদের। তার প্রতিবাদ করায় মারধর করা হয়। অন্য দিকে, আইএসএফের দাবি, তারা যখন দলীয় পতাকা লাগাচ্ছিল সেই সময় তৃণমূল কর্মীরা এসে বাধা দেয়। তাদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় দু’পক্ষেরই কয়েক জন করে আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

    তৃণমূলের অভিযোগ, এই তাদের তিন জন কর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের জিরেনগাছা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। আইএসএফও-এর দাবি, তাদের কর্মীরাও আহত হয়েছেন। তাদেরও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

    এ দিকে, ভোটের রাতে দলীয় প্রার্থী নুর আলম খানের গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ আইএসএফের। সেই ভাঙা গাড়ি নিয়ে রাতেই ভাঙড় থানায় যান তিনি। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।

    এখানেই থেমে থাকেনি ভাঙড়ের অশান্তি। ভাঙড়ের এক নম্বর ব্লকের রানিগাছি এলাকাতেও আইএসএফ-তৃণমূল সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ভাঙড়ের আইএসএফ প্রার্থী। অভিযোগ, সেই সময় নুরের গাড়ি ধাওয়া করে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। তার পরই তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

    রাতভর ভাঙরের বিভিন্ন জায়গায় বোমাবাজিরও অভিযোগ উঠেছে। আইএসএফের দাবি, ভাঙড়ে সারা রাত তৃণমূলের দলবল বিভিন্ন জায়গায় তাণ্ডব চালিয়েছে। পাল্টা তৃণমূলের দাবি, আইএসএফদের বিরুদ্ধে বোমাবাজির ঘটনা ঘটিয়েছে। বোমাবাজির ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকার মানুষের মধ্যে।

    ভোটের দিন সকালেও ভাঙড়ে পাল্টাল না অশান্তির ছবি। শনিবার সকালেই আইএসএফ-তৃণমূল খণ্ডযুদ্ধের ঘটনায় নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল ভাঙড়। এ বার ঘটনাস্থল ভাঙড়ের ফুলবাড়ি এলাকায়। অভিযোগ, বুথে এজেন্ট বসাতে গেলে আইএসএফ কর্মীদের উপর আক্রমণ করে তৃণমূল। উল্টো দিকে, আইএসএফের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। ঘটনায় দু’পক্ষের বেশ কয়েক জন আহত। ঘটনাস্থলে গেছে পুলিশবাহিনী। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী নেই কেন, অভিযোগ তুলেছেন আইএসএফ প্রার্থী।

    ফুলবাড়ির পাশাপাশি ভাঙড়-২-এর সাতুলিয়া এলাকায় ভোট দিতে গেলে আইএসএফদেরকে ঘিরে ধরে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। হামলার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত হয়েছে দুই আইএসএফ কর্মী। ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ আহতদেরকে নিয়ে জিরানগাছা হাসপাতালে নিয়ে এসেছে চিকিৎসার জন্য। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। অশান্তির কথা স্বীকার করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক।

    ভাঙড়ের আইএসএফ প্রার্থী বলেন, ‘‘আমি আমাদের এজেন্টকে নিয়ে বুথে বসাতে যাচ্ছিলাম, সে সময় তৃণমূল স্লোগান দিতে দিতে বাঁশ এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। আমাকে লক্ষ্য করেও হামলা করা হয়। তবে আমি মাথায় হাত দিয়ে আঘাত আটকেছি। না হলে আমারও মাথা ফেটে যেত। আমাদের মহিলা এজেন্টের মাথা ফেটে গিয়েছে। ভাঙড় থানার আইসিকে ফোন করেছিলাম। তিনি চলে এসেছেন। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাউকে দেখা যায়নি।’’ পাল্টা তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যা ফুলঝুরির অভিযোগ, ‘‘নুর আলমের লোকেরা আমাদের উপর বাঁশ নিয়ে হামলা করেছেন। আমরা ভোট দিতে এসেছি, তাই আমাদের মারধর করা হয়েছে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)