• জুনই সাংসদ! কার্যালয়ের জন্য ভাড়া বাড়ির খোঁজ
    আনন্দবাজার | ০২ জুন ২০২৪
  • তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়া মেদিনীপুরের সাংসদ হচ্ছেনই, ধরেই নিয়েছেন তাঁর অনুগামীরা। এমনকি, তাঁর সাংসদ কার্যালয়ের জন্য মেদিনীপুরে ভাড়া বাড়ির খোঁজও শুরু করেছেন তাঁরা। ইতিমধ্যে মেদিনীপুরে একটি বাড়ি দেখেও ফেলেছেন। কয়েকজন অনুগামী আবার তারাপীঠে গিয়েছিলেন। জুনের জয় কামনা করে সেখানে পুজো দিয়েছেন।

    জানা গিয়েছে, সাংসদ কার্যালয়ের জন্য প্রাথমিকভাবে শহরের সঙ্গতবাজারে একটি বাড়ি দেখেছেন জুনের অনুগামীরা, যেটি ভাড়ায় নেওয়া যেতে পারে। ক’দিন আগে দোতলা ওই বাড়ির সামনে দেখা গিয়েছে মেদিনীপুরের তৃণমূল পুরপ্রধান সৌমেন খানকে। সৌমেন জুনের অনুগামী হিসেবে পরিচিত। জুন জিতবেন ধরে এখন থেকেই না কি সাংসদ কার্যালয়ের জন্য শহরে ভাড়া বাড়ির খোঁজ চলছে? সদুত্তর এড়িয়ে সৌমেন শুনিয়েছেন, ‘‘দলের প্রার্থী জিতবেন নিশ্চিত। আমরা এ বার মেদিনীপুর আসনটি পুনরুদ্ধার করবই।’’ এতটা নিশ্চিত হচ্ছেন কী ভাবে? তৃণমূল পুরপ্রধানের জবাব, ‘‘প্রচারে আমরা মানুষের সাড়া পেয়েছি। ভোটের দিনও মানুষের সাড়া পেয়েছি।’’

    ভাড়া বাড়ির খোঁজ শুরুর কথা সৌমেন সরাসরি মানেননি। তবে সৌমেনের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত এক তৃণমূল নেতা মানছেন, ‘‘জুনদি জিতবেন। মেদিনীপুরে তো সাংসদ কার্যালয় করতেই হবে। তাই আগেভাগে একটা বাড়ি দেখে রাখা হচ্ছে।’’ দোতলা বাড়ি কেন? ওই তৃণমূল নেতার জবাব, ‘‘দোতলার ঘরে জুনদি থাকবেন। একতলার ঘরে সাংসদ কার্যালয় হবে।’’

    এক সময়ে মেদিনীপুরের সাংসদ ছিলেন অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়। তাঁর সাংসদ কার্যালয় ছিল শহরের রবীন্দ্রনগরে। গত লোকসভা ভোটে এখান থেকে জেতেন বিজেপির দিলীপ ঘোষ। দিলীপকে এ বার দুর্গাপুর-বর্ধমানে প্রার্থী করেছে দল। আর মেদিনীপুরে জুনের প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির অগ্নিমিত্রা পালের। তৃণমূলের দাবি, এ বার এই লোকসভায় দলের প্রার্থী অন্তত ৪০- ৫০ হাজার ভোটে জিতবেন। গতবার দিলীপ জিতেছিলেন ৮৭,১৬৮ ভোটে। তবে একুশের বিধানসভার নিরিখে মেদিনীপুর লোকসভা আসনে বিজেপি পিছিয়ে রয়েছে ৯৩,৭১৬ ভোটে। উনিশে এই লোকসভার অন্তর্গত ৭টি বিধানসভার মধ্যে ৬টিতেই পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। দু’বছরের মধ্যে উলটপুরাণ হয়েছে। একুশে ওই ৬টি বিধানসভাতেই জিতেছে তৃণমূল।

    এ বার মেদিনীপুরে জুনের হয়ে প্রচারে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা। সাংগঠনিক বৈঠকে করেছেন সুব্রত বক্সী, জয়প্রকাশ মজুমদার প্রমুখ। ঘাসফুল শিবিরের একটি অংশের পর্যালোচনা, এগরা, দাঁতন, নারায়ণগড়, কেশিয়াড়ি, খড়্গপুর সদর, খড়্গপুর গ্রামীণ এবং মেদিনীপুর— এই ৭টি বিধানসভার মধ্যে তৃণমূল অন্তত ৫টিতে ‘লিড’ নেবে। বাকি দু’টিতে অল্প মার্জিনে পিছিয়ে থাকতে পারে। জুন নিজেও বলেছেন, ‘‘যে ভাবে মানুষ ভোট করেছেন, জেতার ব্যাপারে আমি দু’শো শতাংশ আশাবাদী।’’

    জুনের জয় কামনায় দলের বৃহস্পতিবার তারাপীঠ মন্দিরে গিয়েছিলেন সৌরভ বসু, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ প্রমুখ। শহরের তৃণমূল পুর-পারিষদ সৌরভ মেদিনীপুরে দলের নির্বাচনী কমিটির কনভেনর ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি। সৌরভ মানছেন, ‘‘তারাপীঠে গিয়েছিলাম। জুনদির জয় কামনা করে আমরা তারা মায়ের পুজো দিয়েছি।’’

    সব শুনে জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাসের খোঁচা, ‘‘কথায় আছে, গাছে কাঁঠাল, গোঁফে তেল। কেউ রাতে স্বপ্ন দেখে, কেউ দিনেও দেখে!’’ জেলা বিজেপির মুখপাত্রের পাল্টা দাবি, ‘‘আমরা এক লক্ষ ভোটে এই আসন জিততে চলেছি।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)