• ‘ছোট্ট গল্প থেকে ভালবাসা সৃষ্টি হয়’, প্রেমপত্র, ছিন্নভিন্ন দেহ, খেলনা... করমণ্ডল দুর্ঘটনার এক বছর
    আনন্দবাজার | ০৩ জুন ২০২৪
  • ‘‘অল্প অল্প মেঘ থেকে হালকা হালকা বৃষ্টি হয়, ছোট্ট ছোট্ট গল্প থেকে ভালবাসা সৃষ্টি হয়....’’ পরিচিত কোনও কবিতা নয়। কে লিখেছেন, সেটাও অজানা। কার উদ্দেশে ওই লেখা, সেটাও জানা যায়নি। তবে স্থান এবং কাল ‘গুণে’ এই কবিতা কারও কারও চেনা লাগলেও লাগতে পারে। মনে করাতে পারে ঠিক এক বছর আগে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার কথা। যে দুঃসহ স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছেন দুশোর বেশি আত্মীয় হারানো পরিবার।

    ২০২৩ সালের ২ জুন। ওড়িশার বাহানগায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পর চাপ চাপ রক্ত, রক্তমাখা দেহের স্তূপ, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়া ছেঁড়া জামাকাপড়, খাবার, ব্যাগপত্র, খেলনার মাঝে পড়েছিল একটি খাতাও। অপটু অথচ যত্নের হস্তাক্ষরে ‘অল্প অল্প মেঘ’ কবিতা লেখা ছিল সেই খাতায়। এক বছর পেরিয়েছে। কবির পরিচয় মেলেনি। মেলেনি সেই হাতের লেখা চিনে কবিতার কোনও দাবিদারকেও। যে ভাবে করমণ্ডল দুর্ঘটনায় হত বেশ কয়েকটি দেহ এক বছরেও কোনও পরিজন শনাক্ত করতে পারেননি।

    গত বছরের ২ জুন সন্ধ্যা প্রায় ৭টা তখন। ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানগায় দ্রুতগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস মালগাড়ির সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করে লাইনচ্যুত হয়। স্থানীয়েরা বলছেন, গত ২ জুনের সন্ধ্যার স্মৃতি এখনও তাঁদের স্মৃতিতে টাটকা। দেখতে দেখতে যে এক বছর কেটে গিয়েছে, বুঝতে পারেননি অনেকে। তেমনই এক স্থানীয় বাসিন্দা বললেন, ‘‘দ্রুতগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা আমাদের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই হয়েছিল। ওই স্মৃতি আজীবন আমাদের তাড়িয়ে বেড়াবে।’’

    ২৯৬ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন ওই দুর্ঘটনায়। দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার হওয়া খাতার মালিকও হয়তো ওই করমণ্ডলেই ছিলেন। দুর্ঘটনার অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে, কবিতার খাতাখানি ছিটকে এসে পড়েছিল ভাঙা লাইনের পাশে। খাতার মালিককে পাওয়া যায়নি। যেমন জানা সম্ভব হয়নি তিনি প্রেমিক না কি প্রেমিকা। যাঁর উদ্দেশে এই কবিতা, তিনি কখনও জানতে পারলেন? সেটাও জানা যায়নি।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)