গত জানুয়ারি থেকে চলতি মাসের ২৬ মে অবধি, পাঁচ মাসে সিকিমের সরকারি হিসাবে প্রায় ৭ লক্ষ পর্যটক এসেছেন সে রাজ্যে। এর মধ্যে দেশীয় পর্যটকদের সংখ্যা ৬ লক্ষ ৩৩ হাজার ২৬৬ জন। বাকিরা বিদেশি পর্যটক। এঁদের অনেকেই সিকিমের পরে কালিম্পং বা দার্জিলিং ঘুরে নিজের গন্তব্যে ফিরেছেন। কিন্তু হিসাব নেই দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে আসা পর্যটকদের। সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্য পর্যটন দফতর পর্যটকদের হিসাব রাখার জন্য সংস্থা নিয়োগ চেষ্টা করলেও গত এক বছরে তাতে মেলেনি সাড়া। তাই গরমের মরসুমে পাহাড় বা অন্যত্র পর্যটকদের ঢল থাকলেও কোনও হিসাব নেই এ রাজ্যে।
রাজ্য পর্যটন দফতরের এক যুগ্ম সচিবের কথায়, ‘‘পর্যটকদরে তথ্য সরকারি ভাবে রাজ্যব্যাপী রাখার ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত রয়েছে। এজেন্সি নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনও পুরোপুরি সম্পূর্ণ হয়নি। তবে ভোট প্রক্রিয়া মিটে গেলেই বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু হবে।’’
পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, দেশের মধ্যে গরমের সময় হিল স্টেশনের ভিড় বাড়ে। তা ছাড়া, বছরের বাকি দুটি মরসুমে সবচেয়ে বেশি লোক পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে আসেন। পুজো-দেওয়ালি এবং বড়দিন-নতুন বছরের পর্যটক মরসুমে ভিড় সব পর্যটন কেন্দ্রেই কমবেশি থাকে। গত বছরের এপ্রিলে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের নির্দেশের পর দেশবিদেশের পর্যটকদের তথ্য সংগ্রহের জন্য পেশাদার সংস্থা নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য পর্যটন দফতর। এই সম্পর্কিত নির্দেশিকাও জারি করা হয়। দু’দফায় সমীক্ষা করে তথ্য সংগ্রহ করা হবে বলে ঠিক হয়। রাজ্যের পর্যটনের সঙ্গে জড়িত ২৩টি জেলায় কাজ শুরুর পরিকল্পনা তৈরি হয়। তবে তা ঠিকঠাক শুরু না হওয়ায় দফতরের অন্দরে প্রশ্ন রয়েছে।
পর্যটন দফতরের অফিসারেরা জানাচ্ছেন, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে পর্যটকদের তথ্য সংগ্রহ হয়। শিল্প সম্মেলন, বিনিয়োগ প্রস্তাব, পরিকাঠামো তৈরির জন্য যা গুরুত্বপূর্ণ। এ রাজ্যে তা ঠিকঠাক কোনও কালেই ছিল না। রাজস্থান, কেরল, গোয়া, হিমাচল প্রদেশ বা মধ্যপ্রদেশের মত রাজ্যে পর্যটনের তথ্য ভান্ডার রয়েছে। তবে এজেন্সি নিয়োগ নিয়ে জটিলতা রয়েছে বলে দফতর সূত্রের খবর। টেন্ডার করা হলেও তাতে ভাল সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ।
দফতরের অফিসারেরা জানান, বাস টার্মিনাস, বিমানবন্দর, রেল স্টেশনের তথ্য ছাড়াও লজ, হোটেল, রিসর্ট বা পাহাড়ের ক্ষেত্রে হোমস্টে থেকে তথ্য সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে। সীমান্তের ইমিগ্রেশন পয়েন্ট এবং পাসপোর্ট দফতর থেকেও তথ্য নেওয়া হবে। কেমন পর্যটক, কতদিন কোথায় কী ভাবে থাকছেন, কত খরচ করছেন সে তথ্য নেওয়া হবে। দেশি বা বিদেশি দু’টি আলাদা বিভাগ হবে। কিন্তু তা কবে কার্যকর হবে তার কোনও দিশা এখনও মেলেনি।