মরসুমের শুরুতেই দামে সেঞ্চুরি হাঁকাচ্ছে মালদহের গোপালভোগ আম। জেলার রথবাড়ি বাজার থেকে শুরু করে মকদুমপুর বা দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন মার্কেট—সর্বত্রই একই দাম এই আমের। জানা গিয়েছে, এই আমের চাষ জেলার সামান্য এলাকায় হয় এবং এই আম আমসত্ত্ব তৈরিতেই বেশি ব্যবহার হয়। সেকারণে চাহিদাও বেশি থাকে বরাবর। কিন্তু মরসুমের প্রথম জেলার আম গোপালভোগ কিনতে গিয়ে দামে হাতে ছেঁকা লাগছে জেলার ফলপ্রেমীদের।
জেলা উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় ৩১,৭৫০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়ে থাকে। তার মধ্যে গোপালভোগ আম চাষ হয় মাত্র ৮৫০ হেক্টর জমিতে। মালদহের আম চাষিদের বক্তব্য, একে তো ওজন ও আয়তনে গোপালভোগ অন্য আমের তুলনায় বেশ খানিকটা কম। এই আম যেহেতু মরসুমের প্রথম আম, সে কারণে যে বছর শীতের প্রকোপ বেশি থাকে সে বছর এই আমের ফলন কম হয়। পাশাপাশি পরাগ সংযোগ থেকে মুকুল আসার দিকেও পিছিয়ে থাকায় এই আমের উৎপাদন কম। তাই নতুন করে এই আমের চাষে খুব একটা উৎসাহী নন তাঁরা। এ বছর মালদহে গোপালভোগের ফলন হয়েছে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার টন। যা গত বছরের চেয়ে কম। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় এ বার অন্য আমের গড় উৎপাদনও অর্ধেক হবে বলে আশঙ্কা দফতরের আধিকারিকদের।
জেলার আমের মরশুমের 'ওপেনিং ব্যাটসম্যান' গোপালভোগ কিনতে গিয়ে হাত পুড়ছে গৃহস্থদের। রথবাড়ি বাজারে আম কিনতে আসা ঘোড়াপীরের সনাতন সাহা বলেন, ‘‘গোপালভোগ মালদহের প্রথম বাজারে বিক্রির জন্য আসা আম। এই আমের স্বাদ ও গন্ধ অতুলনীয় সে কারণে প্রতিবছর প্রথমেই এই আম কিনে বাড়িতে নিয়ে যাই। কিন্তু এবার এই আমের দাম সেঞ্চুরি হাঁকছে। তাই প্রথম আমের স্বাদ নিতে মাত্র এক কেজি কিনতে বাধ্য হলাম।’’
এ দিকে আমসত্ত্ব তৈরির ক্ষেত্রেও গোপালভোগের জুড়ি মেলা ভার। কোতোয়ালির জোতের আমসত্ত্বের কারিগর ডালিম দাস এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘এ বার গোপালভোগের উৎপাদন অনেকটাই কম। তাই আমসত্ত্ব প্রেমীদের চাহিদা মেটাতে বাজার থেকে বেশি দরে ওই আম কিনতে হচ্ছে।’’ উদ্যান পালন দফতরের আধিকারিক সামন্ত লায়েক বলেন, ‘‘জেলায় সবার প্রথমে বাজারে ওঠে গোপালভোগ আম। যেহেতু এই আমের উৎপাদন কম এবং প্রথম বাজারে আসে তাই এই আমের চাহিদা বেশি।’’