বিশ্বজুড়ে খ্যাতি রয়েছে জাপানের মিয়াজ়াকি আমের। চড়া দামে এই আম বিক্রি হয় আন্তর্জাতিক বাজারে। সম্প্রতি পূর্বস্থলীর একটি নার্সারির চেষ্টায় এই সুস্বাদু আম ফলতেও শুরু করেছে জেলায়। পুষ্টিবিদদের দাবি, এই আমে রয়েছে জিঙ্ক, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, কপার এবং ম্যাগনেসিয়াম। এটি হজম ক্ষমতাও বাড়ায়। তবে এখনও এই আম জনপ্রিয় না হওয়ায় ন্যায্য দামে বিক্রির ঠিকানা মেলেনি বলে দাবি নার্সারির মালিকের।
এই আমের আদি বাসস্থান জাপানের মিয়াজ়াকি শহরে। ভারতে ওড়িশা, বিহারেও কিছু চাষি এই আমের চাষ করে থাকেন। পূর্বস্থলী ২ ব্লকে নার্সারিগুলি প্রতি বছর নানা ধরনের দেশি, বিদেশি প্রজাতির ফলের চারা তৈরি করে। জানা যায়, বছর ছয়েক আগে পূর্বস্থলী স্টেশনের গায়ে থাকা একটি নার্সারি বাংলাদেশ থেকে ৬টি মিয়াজ়াকি আমের চারা নিয়ে আসে। উদ্দেশ্য দু’টি— এক, এই আম নিজেরা চাষ করে ফলানো। দুই, কলম তৈরি করে চারা বিক্রি।
নার্সারি লাগোয়া একটি বাগানেই লাগানো হয় মিয়াজ়াকির চারা। ক্রমে গাছগুলি থেকে মেলে আম। নার্সারি মালিকের দাবি, এ বার গাছগুলিতে প্রায় ৫০০ আম আসে। এর মধ্যে ঝড়ে কিছু আম পড়ে যায়, হনুমানের দল কিছু খেয়ে নেয়। এখনও গাছে ২৫০টির বেশি আম রয়েছে। নার্সারির মালিক পক্ষের তরফে দীপঙ্কর দত্ত বলেন, “মিয়াজ়াকি, নুরজাহান, অম্বিকা, রেড পালমারের মতো বিদেশি আম যে পূর্ব বর্ধমানের মাটিতে চাষ করা যায়, তা আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি। সুস্বাদু বিদেশি আমগুলির মধ্যে এগিয়ে রয়েছে মিয়াজ়াকি।” তাঁর দাবি, বিদেশে এই আমের চড়া দাম মেলে। তবে এখানে এই আমের বিক্রির তেমন জায়গা নেই বলে বাণিজ্যিক ভাবে লাভ হচ্ছে না।
মিয়াজ়াকি আম ফলানো নার্সারিটিতে রবিবার এই আমের চারা কিনতে আসেন অনেকে। তাঁদের এক জন গোঁসাই দাস বলেন, “দারুণ সুস্বাদু আম। দেশে বিদেশে এই আমের ভাল জনপ্রিয়তা রয়েছে। পূর্বস্থলী ২ ব্লকের মাটিতে এই আমের চাষে কোনও সমস্যা নেই। তাই নার্সারি থেকে চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছি বাড়িতে।”
পূর্বস্থলী সংস্কৃতি মঞ্চ তথা আম উৎসব কমিটির সভাপতি নিরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, “মিয়াজ়াকি আম দারুণ ভাবে ফলছে পূর্বস্থলীতে। দেশীয় আমের থেকে দেখতে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। তবে মিষ্টি এবং আলাদা একটা গন্ধ আছে। আশা করছি খুব দ্রুত এই আম এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।”
রাজ্যের এক উদ্যান পালন আধিকারিক পলাশ সাঁতরা জানিয়েছেন, বিদেশি আমের মধ্যে কোহিতুরও বেশ জনপ্রিয়। বিদেশের বাজারে চড়া দামে বিক্রি হয় মিয়াজ়াকি আম। তবে এলাকায় এই আমের বাজার পেতে সমস্যা হবে। পূর্বস্থলীর চাষিদের পরামর্শ দেব রাজ্য আম উৎসবে এই আম নিয়ে যেতে পারেন। সেখানে দেশ বিদেশের ক্রেতারা আসেন।”