সন্দেশখালির পদ্মনেতার বাড়িতে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী! ‘পলাতক’ একদা শাহজাহান ঘনিষ্ঠ সেই নেতা
আনন্দবাজার | ০৩ জুন ২০২৪
ভোটগণনার আগের দিন পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর হানায় তপ্ত হল সন্দেশখালি। গত শনিবার ভোটের দিন পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় বিজেপি নেতা অমর ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে। সোমবার সন্দেশখালির ভুঁইয়া পাড়ায় সেই বিজেপি নেতার বাড়িতেই অভিযান চালায় পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর দল। অমরকে গ্রেফতার করতে গিয়ে তাঁর পরিবারের লোকেদের বাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে বার করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। যদিও শেষ পর্যন্ত বিজেপি নেতার নাগাল পায়নি পুলিশ। তারা ফিরে যেতেই লাঠি-বাঁশ হাতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করতে দেখা যায় স্থানীয় মহিলাদের।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এককালে শাহজাহান শেখের অনুগামী ছিলেন অমর। শাহজাহানের নির্দেশে তৃণমূলের দলীয় কাজকর্মও করতেন। বছরখানেক আগে তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। পরিবারের দাবি, পদ্মশিবিরে নাম লেখানোর পর থেকেই শাহজাহানের রোষে পড়েছিলেন অমর। তাঁকে মারধরের হুমকি দেওয়া হত। প্রাণে বাঁচতেই বাড়ি ছেড়েছিলেন তিনি। গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে ইডির উপর হামলার ঘটনার পর শাহজাহান গা ঢাকা দেন। এর পরেই সন্দেশখালির নানা জায়গায় স্থানীয়দের বিক্ষোভ আছড়ে পড়ে। তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে জমি-ভেড়ি দখল, মহিলাদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। গ্রেফতার হন তাঁর শাগরেদ উত্তর সর্দার ও শিবপ্রসাদ হাজরা। পরে শাহজাহানও গ্রেফতার হন রাজ্য পুলিশের হাতে। বর্তমানে তিনি জেলবন্দি। সেই সুযোগে এলাকায় জমি তৈরি করে বিজেপি। সন্দেশখালির ঘটনাকে হাতিয়ার করে লোকসভা ভোটে রাজ্য জুড়ে প্রচারও চালায় তারা। শুধু তা-ই নয়, বসিরহাট কেন্দ্র বিজেপি যাঁকে প্রার্থী করেছে, সেই রেখা পাত্র নিজেও সন্দেশখালির ভূমিকন্যা। তাঁর হয়ে সক্রিয় ভাবে প্রচার করেছিলেন অমর।
ভোটের দিন সন্দেশখালির বয়ারমারিতে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। পুলিশের কাজে বাধা, তাদের উপর ইটবৃষ্টির অভিযোগ উঠেছিল সেখানে। তাতেই নাম জড়ায় বিজেপি নেতা অমরের। বয়ারমারির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবারই গ্রেফতার হয়েছেন সাত জন। অমরকেও ধরতে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে যায় ন্যাজাট থানার পুলিশ। রবিবারও ভুঁইয়া পাড়ায় অমরের খোঁজে গিয়েছিল তারা। বাধা দিয়েছিলেন মহিলারা। তা মাথায় রেখেই সোমবার কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালানো হয়। সেখানে অমরের পরিবার ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন পুলিশ আধিকারিকেরা। শেষ পর্যন্ত খালি হাতেই ফিরতে হয় পুলিশকে।