ভাঙড়ই ভয়ংকর, তার পরই শুভেন্দু গড়! ভোটের পরেও কোন এলাকায় কত কেন্দ্রীয় বাহিনী
প্রতিদিন | ০৪ জুন ২০২৪
সুদীপ রায়চৌধুরী ও অর্ণব আইচ: লোকসভা নির্বাচনের প্রথম থেকেই নজিরবিহীন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে কমিশন। এবার ভোট পরবর্তী হিংসা রুখতে ১৯ জুন পর্যন্ত রাজ্যে ৪০০ কোম্পানি কেন্দ্রিয় বাহিনী রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। সবচেয়ে বেশি ৬০ কোম্পানি বাহিনী থাকছে শুধুমাত্র কলকাতা পুলিশ কমিশনারেট এলাকায়। এর মধ্যে ভাঙড়েই থাকছে ২৮ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। ভোটের গণনা এবং গণনা পরবর্তী সময়ের গোলমাল হতে পারে ভাঙড়ে এমন ২০টি জায়গা চিহ্নিত করেছে কলকাতা পুলিশ।
ভোট মিটে যাওয়ার পর কেন্দ্রীয় বাহিনীর ফিরে যাওয়াই রেওয়াজ। ভোটের ফল বের হওয়ার পরও কিছু বাহিনী রাখা হয় ভোট পরবর্তী হিংসা রোখার জন্য। সেটা মোতায়েন করা হয় নির্দিষ্ট কিছু এলাকাভিত্তিক। তবে এবার রাজ্যের প্রতিটা জেলা, পুলিশ জেলা ও কমিশনারেট এলাকাতেই বাহিনী রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। সূত্রের খবর, প্রাথমিকভাবে ৪ তারিখ ভোটের ফল ঘোষণার পর ৬ তারিখ পর্যন্ত বাহিনী রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পুরনো অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখেই বাহিনী আগামি ১৯ জুন পর্যন্ত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কোথায় কত বাহিনী থাকছে?
জলপাইগুড়িতে ৬ কোম্পানি, আলিপুরদুয়ারে ৫ কোম্পানি, কোচবিহারে ১৩ কোম্পানি, দক্ষিণ দিনাজপুরে ৭ কোম্পানি, রায়গঞ্জ পুলিশ জেলায় ৬ কোম্পানি, ইসলামপুর পুলিশ জেলায় ৬ কোম্পানি, দার্জিলিংয়ে ৬ কোম্পানি, শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় ৫ কোম্পানি, কালিম্পং জেলা ৪ কোম্পানি, জঙ্গিপুর পুলিশ জেলায় ৫ কোম্পানি, মালদহ জেলায় ১২ কোম্পানি, আসানসোল পুলিশ কমিশনারেটে ১১ কোম্পানি, বীরভূম ১৮ কোম্পানি, কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলা ১০ কোম্পানি, মুর্শিদাবাদ জেলা ১৬ কোম্পানি, পূর্ব বর্ধমান জেলা ১৮ কোম্পানি, রানাঘাট পুলিশ জেলা ৭ কোম্পানি, বারাসত পুলিশ জেলা ৭ কোম্পানি, বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট ১৫ কোম্পানি, বসিরহাট পুলিশ জেলা ১২ কোম্পানি, বনগাঁ পুলিশ জেলায় ১০ কোম্পানি, চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট ১০ কোম্পানি, হুগলী গ্রামীণ ১২ কোম্পানি, হাওড়ায় ১১ কোম্পানি, হাওড়া গ্রামীণ ৮ কোম্পানি, পশ্চিম মেদিনীপুর ১৫ কোম্পানি, বাঁকুড়া ১০ কোম্পানি, ঝাড়গ্রাম ১৩ কোম্পানি, পূর্ব মেদিনীপুর ২০ কোম্পানি, পুরুলিয়া ১০ কোম্পানি, বারুইপুর পুলিশ জেলা ১০ কোম্পানি, বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট ৭, কোম্পানি, ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলা ৮ ও সুন্দরবন পুলিশ জেলায় ৭ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েন থাকছে।
গণনাকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোমর বেঁধেছে নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের মোট ৫৫ গণনাকেন্দ্রে থাকছে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়। থাকছে ১০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। একদম প্রথম ভাগে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া এই এলাকায় রাজ্য পুলিশের কোনও কর্মী ঢুকতে পারবেন না। নিরাপত্তা বলয়ের পরের দুই ধাপে থাকবে রাজ্য পুলিশ। নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকেই গণনা কেন্দ্রের ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
সবচেয়ে বেশি ১৪ কোম্পানি কেন্দ্রিয় বাহিনী থাকছে কলকাতা পুলিশ কমিশনারেট এলাকায়।
রায়গঞ্জ পুলিশ জেলা, ইসলামপুর পুলিশ জেলা, দার্জিলিং জেলা, কালিম্পং জেলা ও শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় ১ কোম্পানি করে বাহিনী থাকবে। পাশাপাশি জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, দক্ষিণ দিনাজপুর, জঙ্গিপুর পুলিশ জেলা, আসানসোল পুলিশ কমিশনারেট, কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলা, রানাঘাট পুলিশ জেলা, বারাসত পুলিশ জেলা, বসিরহাট পুলিশ জেলা, বনগাঁ পুলিশ জেলা, হুগলি গ্রামীণ, হাওড়া, হাওড়া গ্রামীণ এলাকা, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বারুইপুর পুলিশ জেলা ও সুন্দরবন পুলিশ জেলায় ২ কোম্পানি করে কেন্দ্রিয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া মালদহ, বীরভূম, পুর্ব বর্ধমান, বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট এলাকা, চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট এলাকা, পশ্চিম ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার গণনা কেন্দ্রে থাকছে ৪ কোম্পানি করে কেন্দ্রিয় বাহিনী। ৫ কোম্পানি কেন্দ্রিয় বাহিনী থাকছে মুর্শিদাবাদ জেলায় ও ৮ কোম্পানি কেন্দ্রিয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার জন্য।