• হার হলে দায় কার, জোর বিতর্ক তৃণমূলে
    আনন্দবাজার | ০৪ জুন ২০২৪
  • গণনার আগের দিন, সোমবার রাত অবধি দার্জিলিং লোকসভার সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে বিশ্লেষণ চলল শাসক দল তৃণমূলের অন্দরে। বিভিন্ন বুথফেরত সমীক্ষার ইঙ্গিত, এই কেন্দ্রটি যেতে পারে বিজেপির ঝুলিতে। যদিও বিগত দিনে ফলাফল যথাযথ ভাবে মেলানোর নিরিখে শাসক দলের নেতারা বুথ-ফেরত সমীক্ষাকে আমল দিচ্ছেন না। তবে দলীয় স্তরে মতামত পাহাড় ও সমতলের দু’ভাগ হয়ে গিয়েছে।

    তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবর পাহাড়-সমতলের মেলবন্ধনের পক্ষে কথা বললেও, ভোটের ফলের নিরিখে শাসক শিবির দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে থাকছে। আর সেখানে আজ ফলাফলের পরে, কার জন্য জিতল বা কার জন্য হার হল, তা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে চলেছে দলের অন্দরে।

    শাসক শিবিরে পাহাড়ের দায়িত্বে তৃণমূলের সঙ্গী প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। পাহাড়ে তাঁরা জিতবেন বলে দাবি করছেন মোর্চা নেতারা। যদিও গত লোকসভাগুলিতে শাসক দলের পক্ষে পাহাড়ে ভাল ভোট কোনও সময়েই পড়েনি। আবার সমতলে চোপড়া বাদে, বাকি তিনটি বিধানসভায় দলের ফল নিয়ে অনেকের মনে ‘দুশ্চিন্তা’ রয়েছে।

    সে ক্ষেত্রে দায় কার? সমতলের নেতা-নেত্রীদের, নাকি জনপ্রতিনিধিদের? দল সূত্রের দাবি, গণনার ২৪ ঘণ্টা আগে থেকেই তৃণমূলের অন্দরে বিতর্ক শুরু গিয়েছে। দলের সমতলের জেলার সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ গত দু’দিন ধরে দফায় দফায় দলের বৈঠক করেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘দল জিতবে। আমরা জিতব।’’ আর পাহাড়ের প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনীত থাপা বলেছেন, ‘‘পাহাড়ে আমরা জিতব বলে আশাবাদী। দেখা যাক, কী হয়!’’

    এ বার দার্জিলিং আসন থেকে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির বিশেষ পরামর্শদাতা গোপাল লামাকে তৃণমূলের প্রতীকে প্রার্থী করা হয়। পাহাড়ে সমতলের দলগুলিকে নিয়ে বাসিন্দাদের বড় অংশের নানা মতামত থাকায় তৃণমূল পাহাড়ে কোনও প্রচারই করেনি। তৃণমূলের শীর্ষ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা দলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিযেক বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ে এক বারও প্রচারে যাননি। সেখান বিজেপির নেতারা পাহাড়ে প্রচার করেছেন। যদিও বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পাহাড়ে যাবেবেন বললেও খারাপ আবহাওয়া, হেলিকপ্টারের সমস্যার জন্য শেষ সময়ে প্রচারে যেতে পারেননি। তাঁর বক্তব্য মোবাইল থেকে প্রচার করেন বিজেপির প্রার্থী রাজু বিস্তা। সমতলে অবশ্য দু’দলের শীর্ষ নেতৃত্ব প্রচার করেছেন।

    কিন্তু সমতল শিলিগুড়িতে পুরসভা, মহকুমা পরিষদ প্রথম বার জেতার পরেও, তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা সমতলে ‘লিড’ পাওয়া বা জয় নিয়ে নিশ্চিত নন। দলের জেলা কমিটির কয়েক জন নেতা জানান, চোপড়া বাদে, তিনটি বিধানসভা বিজেপির দখলে। লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামে ভোট হওয়ায়, গেরুয়া শিবিরের পাল্লা ভারী হয়েছে। আর এক দলের যুক্তি, বিধানসভা ভোটের পরে পুরসভা এবং পঞ্চায়েত ভোট হয়েছে। তা হলে জনপ্রতিনিধিদের ভাল হলে ভাল, খারাপ ফল হলেও দায় নিতে হবে। সেখানে জেলার নেতা-নেত্রীদের দেখালে হবে না।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)