গণনা শুধু সময়ের অপেক্ষা। শেষ মুহূর্তে চলছে হিসেবের পালা। দলের অন্দরের খবর, সংখ্যালঘু ভোট নিয়ে চিন্তা শাসক দল তৃণমূলের অন্দরে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারে ২৭ শতাংশের মতো সংখ্যালঘু। ওই ভোটে কতটা থাবা বসিয়েছে বাম ও কংগ্রেস— তা নিয়েই চলছে হিসেব।
এ বারের লোকসভা আসনে কোচবিহারে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকের ধারণা। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারে এ বারে বিজেপি-তৃণমূলের পাশাপাশি বাম ও কংগ্রেসের প্রার্থীও রয়েছেন। সেই বাম-কংগ্রেস শিবির সংখ্যালঘু ভোট কতটা টানতে পেরেছে, তা নিয়ে চিন্তিত শাসক দলের নেতাদের একটি অংশ। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার লোকসভা আসনের মোট ভোটার ১৯ লক্ষের কিছু বেশি। তার মধ্যে ৮২.১৬ শতাংশ ভোট পড়েছে। সেখানে কুড়ি শতাংশের কিছু বেশি সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে ধরে নিয়েই চলছে হিসেব। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দলের জেলা ও ব্লক নেতাদের সঙ্গে অনলাইনে বৈঠক করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে, সোমবার ফের দলের জেলা পার্টি অফিসে দলীয় নেতৃত্ব বৈঠক করেন। সে বৈঠকেও উঠে আসে হিসেব-নিকেশের পালা। তৃণমূলের পক্ষ থেকে অবশ্য দাবি করা হয়, সংখ্যালঘু ভোটারদের ভোটের প্রায় পুরোটাই রাজ্যের শাসক দলের পক্ষে পড়েছে। সেখান থেকে বিজেপি বা বিরোধী কোনও রাজনৈতিক দলের ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণের কথায়, ‘‘সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলের বাক্সেই পড়েছে। তা নিয়ে ভাবনার কোনও অবকাশ নেই। সেই সঙ্গে সংখ্যাগুরুদেরও বেশিরভাগ ভোট আমরা পেয়েছি।’’
বাম ও কংগ্রেস দুই পক্ষই দাবি করছে, সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরু—দু’পক্ষের ভোট এ বারে তারা পেয়েছে। ২০১৯ সালের তুলনায় তাদের ভোট এ বারে অনেকটা বাড়বে। বাম তথা ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী নীতীশ রায় বলেন, ‘‘এ বারে আমাদের ফল অনেক ভাল হবে। অনেকের ধারণার বাইরে ফল হবে। সেখানে সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরু—দুই পক্ষের ভোটই আমরা পাব।’ তাদেরও ফল ভাল হবে বলে দাবি করেন কংগ্রেসের কোচবিহার জেলার প্রার্থী পিয়া রায়চৌধুরীর স্বামী কংগ্রেস নেতা বিশ্বজিৎ সরকার। তিনি বলেন, ‘‘এ বার কংগ্রেসের ফল অভাবনীয় ভাল হবে। সমস্ত মানুষের ভোট আমরা পাব। সেখানে আলাদা করে ভাবার জায়গা নেই।’’
বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, ‘‘তৃণমূলের পক্ষে এখন কোনও মানুষ নেই। সংখ্যালঘু মানুষও বিজেপির পক্ষে রয়েছে। ভোটের আগে সরাসরি দলের হয়ে মিছিল-মিটিংয়ে যোগ দিয়েছেন তাঁরা। তাই তৃণমূলের পরাজয় শুধু সময়ের অপেক্ষা।’’