• অনেক স্কুলে এখনও জমে আবর্জনা
    আনন্দবাজার | ০৪ জুন ২০২৪
  • চার দিকে যত্রতত্র পড়ে আছে খাবার ও খাবারের প্যাকেট। ক্লাস রুমে বেঞ্চ ভাঙা। আবর্জনায় ভর্তি। কোথাও আবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ছেঁড়া জামাকাপড় পড়ে আছে। নির্বাচন মেটার পরে এমনই পরিস্থিতি ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া অনেক স্কুলের। কোনও কোনও স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য স্থানীয় পঞ্চায়েত বা পুরসভার সাহায্যে স্কুল পরিচ্ছন্ন করে নিয়েছেন। কোনও স্কুল আবার নিজেরা শ্রমিক নিয়োগ করে সাফাই করিয়েছে। যে সব স্কুলে শুধু ভোটগ্রহণ কেন্দ্র হয়েছিল, সেখানকার পরিস্থিতি তুলনায় ভাল। তবে ভোটের জন্য যে সব স্কুলে দীর্ঘ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল, সে সব স্কুলে ক্ষয়ক্ষতি একটু বেশি।

    বনগাঁ শহরের নামী স্কুল কুমুদিনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। এখানে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র ছিল। ২০ মে এখানে ভোট হয়। সোমবার পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্কুল পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করে দেওয়া হয়নি। স্কুলে ঢুকলে দেখা যাচ্ছে, চারিদিকে অপরিচ্ছন্নতার ছবি। প্রধান শিক্ষিকা ইন্দ্রাণী উকিল বলেন, “পুরসভার কাছে আবেদন করে কয়েকজন শ্রমিক দিয়ে স্কুল পরিস্কার করাচ্ছি। তবে এই কাজ কয়েক জন শ্রমিক দিয়ে করা সম্ভব নয়। স্কুলজুড়ে খাবার, খাবারের প্যাকেট যত্রতত্র পড়ে আছে। শৌচালয় ভেঙে গিয়েছে। জওয়ানদের ছেঁড়া জামাকাপড় ক্লাস রুমে। বেশ কিছু বেঞ্চ ভেঙে গিয়েছে। কী ভাবে এ সব মেরামত করব ,বুঝতে পারছি না। এ সব ঠিকঠাক করার বরাত পাওয়া ঠিকাদারদের দেখা মিলছে না।”

    বাগদা ব্লকের গোয়ালবাগি খগেন্দ্রনাথ বিদ্যানিকেতন স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল। একই চত্বরে গোয়ালবাগি প্রাথমিক স্কুলে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র হয়েছিল। খগেন্দ্রনাথ বিদ্যানিকেতন স্কুলের প্রধান শিক্ষক হীরেন্দ্রনাথ সমাদ্দার বলেন, “বেশ কিছু বেঞ্চ ভেঙে গিয়েছে। বিদ্যুতের তার ছেঁড়া। জলের লাইন খোলা। প্রশাসনকে জানাব। তারা ঠিক না করে দিলে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফেই মেরামত করে নিতে হবে।”

    বাগদার রানিহাটি হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজেরাই স্কুল পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করে নিয়েছেন। গাইঘাটার ইছাপুর হাই স্কুলে ২০ মে ভোটগ্রহণ হয়েছে। পাশাপাশি এই স্কুলে বেশ কিছু দিন ধরে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল। তাঁরা ২১ মে স্কুল ছেড়ে চলে গিয়েছেন। প্রধান শিক্ষক অশোক পাল বলেন, “আমরা নিজেরা উদ্যোগী হয়ে এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্যে স্কুল পরিস্কার করে নেওয়া হয়েছে। এখন কিছু চেয়ার-টেবিল শ্রেণিকক্ষের বাইরে আছে। সে সব ঢোকানোর কাজ চলছে। প্রশাসনের সাহায্যের প্রয়োজন হয়নি।” বনগাঁর গাঁড়াপোতা গার্লস হাই স্কুলে ভোটগ্রহণ হয়েছিল। প্রধান শিক্ষিকা ববি মিত্র বলেন, “স্কুল খুব বেশি নোংরা হয়নি। যেটুকু হয়েছিল, আমরা শ্রমিক লাগিয়ে তা সাফ করে নিয়েছি। কোনও অসুবিধা হয়নি।” গোপালনগরের কালীপদ চক্রবর্তী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র ছিল। প্রধান শিক্ষক শেখর বিশ্বাস বলেন, “পাল্লা পঞ্চায়েতের সহযোগিতায় আমরা স্কুল পরিস্কার করে নিয়েছি।”

    জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, কোনও স্কুলে ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকলে তা ঠিকঠাক করতে পদক্ষেপ করা হবে। স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রশাসনকে জানালে সেই মতো ব্যবস্থা হবে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)