• রাউন্ড এগোল, নিশীথ থেমেই
    আনন্দবাজার | ০৫ জুন ২০২৪
  • দলের আশা ছিল, বিপুল ভোটে জয়ী হয়েই গণনাকেন্দ্র ছাড়বেন বিজেপির ‘ওজনদার’ প্রার্থী। মঙ্গলবার, গণনার দিন বেলা বাড়তেই অবশ্য বদলাল ছবি। পরাজয় নিশ্চিত বুঝে কার্যত চুপিসাড়ে গণনাকেন্দ্র ছাড়লেন কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। ফিরলেন দিনহাটার ভেটাগুড়ির বাড়িতে। প্রাপ্ত ভোট ৭,৪৯,১২৫। ৩৯,২৫০ ভোটে তাঁকে হারালেন তৃণমূলের জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া।

    কেন পরাজিত নিশীথ? বিকেল থেকে তা নিয়েই চর্চা শুরু হয় বিজেপির অন্দরে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিশীথের পরাজয়ের কারণ বিশ্লেষণে জেলা পদাধিকারীদের নিয়ে আজ, বুধবার বৈঠকে বসবেন বিজেপি নেতৃত্ব। সেখানে থাকার কথা নিশীথেরও। নিশীথকে একাধিক বার ফোন করা হলেও উত্তর মেলেনি। জবাব মেলেনি মেসেজের। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘‘এমন হওয়ার কথা ছিল না। কেন এমন হল তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে।’’

    অন্য দিকে, জগদীশ বলেন, ‘‘মানুষ অন্যায়-অত্যাচার-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। মানুষকে বার বার বোকা বানিয়েছে বিজেপি। বিজেপি প্রার্থী বিদায়ী প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পরেও, গত পাঁচ বছরে মানুষ তাঁকে কাছে পাননি। কোচবিহারের জন্য কোনও কাজ করেননি, তার জবাব তিনি এ দিন পেয়েছেন।’’

    ভোটের ফল ঘোষণার আগেও নিশীথও ঘনিষ্ঠ মহলে দাবি করেছিলেন, এ বার অন্তত এক লক্ষ ভোটে জিতবেন। জানিয়েছিলেন, গণনা শুরুর প্রথম তিন রাউন্ড শুধু পিছিয়ে থাকবেন। কারণ, ওই সময় তৃণমূলের কিছু ‘শক্ত ঘাঁটিতে’ গণনা হবে। তার পর থেকে এগোতে শুরু করবেন।

    এ দিন একের পরে এক রাউন্ড এগিয়ে চললেও নিশীথ এগোতে পারেননি। শেষের দিকে ব্যবধান আরও বেড়ে যায়। বিকেল ৪টে নাগাদ গণনাকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যান নিশীথ।

    দলের একাংশ মনে করছে, নিশীথের হারের পিছনে একাধিক কারণ কাজ করেছে। তাদের অন্যতম, বিজেপির তুলনায় তৃণমূল এ বার বেশি ঐক্যবদ্ধ ছিল। নিশীথ দলের কয়েকজনকে প্রচারের দায়িত্ব দেন। অনেকে তাতে ক্ষুব্ধ ছিলেন। নিশীথের সঙ্গে দলের একটি অংশের ‘বিরোধ’ও ছিল। বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত রায়ও নিশীথের বিরুদ্ধে একাধিক বার সরব হন। একশো দিনের কাজ এবং আবাস প্রকল্পের বরাদ্দ কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রাখা নিয়েও মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। সব মিলিয়েই নিশীথের বিরুদ্ধে ভোট পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)