গত লোকসভায় বিজেপির একটু জন্য হাতছাড়া হয়েছিল আরামবাগ কেন্দ্র। তৃণমূল জিতেছিল ১১৪২ ভোটে। এ বার জয়ের ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিন্তই ছিল গেরুয়া শিবির। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দু-দু’বার নির্বাচনী সভা করেছেন এখানে। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশও দলীয় প্রার্থী মিতালি বাগের জয় নিয়ে সংশয়ে ছিলেন। কিন্তু শেষ হাসি মিতালিই হাসলেন।
সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, মিতালি শেষ পর্যন্ত ২০ রাউন্ডগণনায় পোস্টাল ব্যালট-সহ ৬ হাজার ৩৯৯ ভোটে জেতেন। তবে, পুনর্গণনার দাবি তুলেছে বিজেপি। জয়ের খবর পাওয়ার পরে কেঁদে ফেলেন মিতালি। বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার মতো তৃণমূল স্তরের কর্মীকে যে সুযোগ করে দিয়েছেন, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। মুখ্যমন্ত্রীর উপরে মানুষের ভালবাসাই আমার জয় এনে দিয়েছে।’’
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর থেকে আরামবাগ মহকুমায় বিজেপির শক্তিবৃদ্ধি হয়। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে এই মহকুমার চারটি কেন্দ্রই ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। গত বছর পঞ্চায়েত ভোটে খানাকুল ২ পঞ্চায়েত সমিতি-সহ মহকুমায় মোট ১১টি পঞ্চায়েতদখল করে তারা। বিজেপির শক্তিএবং দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে তৃণমূল নেতাদের অনেকেই আরামবাগে জেতার ব্যাপারে সন্দিহান ছিলেন। কিন্তু গণনার সময় দেখা যায়, নবম রাউন্ড পর্যন্ত মিতালি ৩২ হাজার ৮৯৮ ভোটে এগিয়ে। তখনই বাইরে আবির খেলা শুরু হয়। দশম রাউন্ড থেকে মিতালির নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির অরূপকান্তি দিগারের ব্যবধানকমতে থাকায় তৃণমূল কর্মীদেরউল্লাস থেমে যায়। দশম রাউন্ডে ব্যবধান ২৫ হাজার ৯৫১ ভোটে নেমে আসে। বিজেপি নেতারা তখনও নিশ্চিত, খানাকুল ২ ব্লক, খানাকুল ১ ব্লকের তিনটি পঞ্চায়েত, আরামবাগের গৌরহাটি ১ ও ২, সালেপুর ১ ও ২ এবং গোঘাটের ২ ব্লকের বেঙ্গাই, কুমারগঞ্জ এবং বদনগঞ্জ-ফলুই ১ ও ২ পঞ্চায়েত এলাকা তাঁদের এগিয়ে দেবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।
বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা দলের রাজ্য সম্পাদক বিমান ঘোষ মানছেন,এই ফলাফল অপ্রত্যাশিত। তিনি বলেন, ‘‘ফল নিয়ে আমরা সন্দিহানও। পুনরায় গণনার দাবি রেখেছি।’’ অনেকটা পিছিয়ে থেকে সিপিএম তৃতীয় স্থানে শেষ করেছে। তাদের রক্তক্ষরণ অব্যাহত। এ বার ২০ রাউন্ড পর্যন্ত বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী সিপিএমের বিপ্লবকুমার মৈত্রের ঝুলিতে যায় ৯২ হাজার ৭৩টি ভোট।