• অনায়াসেই ‘বাউন্ডারি’ হাঁকালেন কল্যাণ
    আনন্দবাজার | ০৫ জুন ২০২৪
  • সকালের শুরুটা দেখেই দিন শেষের পরিস্থিতি আন্দাজ করা গিয়েছিল। বোঝাই গিয়েছিল, জয় হাঁকানো সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী তথা তিন বারের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ের ব্যবধান যে দু’লক্ষের কাছাকাছি গিয়ে নোঙর করবে, তেমনটা সিপিএম বা বিজেপি নেতৃত্ব আন্দাজ করতে পারেননি।

    গত লোকসভা ভোটে প্রায় ১ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন কল্যাণ। এ বার গণনা শুরুর আগে থেকেই প্রত্যয়ের সঙ্গে বলে আসছিলেন, গত বারের তুলনায় ব্যবধান অনেকটাই বাড়বে। হলও তাই। গোধূলিবেলায় শ্রীরামপুর কলেজের গণনাকেন্দ্র ছাড়ার সময় মুখে চওড়া হাসি বর্ষীয়ান নেতার।

    গণনাকেন্দ্রের অন্দরে সকালে প্রথম পর্বে টানটান ছিলেন তিন পক্ষের এজেন্টরাই। বেলা যত গড়িয়েছে, ছবিটা পরিষ্কার হয়ে যায়, পরিণতি কী হতে যাচ্ছে।

    এই আবহের মাঝে গণনাকেন্দ্রে উপস্থিত তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা দীপ্সিতাকে দেখে এক আব্দার করে বসেন। তাঁরা সিপিএম প্রার্থীর উদ্দেশ্যে বলতে থাকেন, ‘দিদির (মমতার) পাশে এ বার আপনাকে দেখতে চাই’। তাঁরা যুযুধান প্রার্থীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপানার বক্তৃতা ভাল লাগে। আপনার মতো নেত্রী চাই।’’ প্রত্যুত্তরে বারে বারে তাঁদের উদ্দেশে নমস্কার জানাতে থাকেন দীপ্সিতা।

    গণনা শেষে ‘বাউন্ডারি’ হাঁকানোর পরে কল্যাণ বলেন, ‘‘এই জয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে মানুষের আস্থার জয়। এই রাজ্যের মানুষ একমাত্র দিদির উপরই ভরসা রাখেন। আমাদের দিক থেকে সব কিছুই যে একেবারে ঠিকঠাক ছিল, তেমনটাও বলা যাবে না। কিন্তু মানুষ সব কিছু উপেক্ষা করে দলনেত্রীর উপরেই ভরসা রেখেছেন। দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল।’’

    এ বার কল্যাণ ১ লক্ষ ৮৫ হাজার ভোটে জয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির কবীরশঙ্কর বসু বলেন, ‘‘আমরা যে ভাবে ভেবেছিলাম, সারা বাংলায় কিন্তু অন্য ভাবনায় আর অন্য মাপকাঠিতে ভোট হয়েছে। তাই আমি জনাদেশকে সম্মান করি। আমাদের বিশ্লেষণ করতে হবে, কেন এ ভাবে পরাজয় হল। দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আমরা বসব। ফের মানুষের কাছে যেতে হবে।’’

    গণনাকেন্দ্রে দীপ্সিতা বলেন, ‘‘দুর্নীতির উপর ভোট হয়নি। বিজেপির ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতির বিরুদ্ধে মানুষ তৃণমূলকে বেছে নিয়েছেন। লক্ষ্মীর ভান্ডারের বিরোধী আমারা নই। কিন্তু এক দিকে লক্ষ্মীর ভান্ডার দিয়ে অন্য দিকে চাকরি বিক্রি করার বিরুদ্ধে আমরা।’’ দীপ্সিতার ঘোষণা, ‘‘ফের আমরা মানুষের কাছে যাব। আমাদের কথা বোঝাব। বুধবার থেকেই নতুন করে কর্মসূচি শুরু করব। কোনও কিছুই একেবারে শেষ হয়ে যায় না। শেষের পরে শুরু থাকে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)