ভোটের ফল বেরোতে না বেরোতেই হিংসার অভিযোগ আসতে শুরু করল। কাঠগড়ায় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। অভিযোগ, উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে মঙ্গলবার গভীর রাতে বিজেপি সমর্থকদের একাধিক বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এই দুষ্কৃতী তাণ্ডবের ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
বারাসত লোকসভায় এ বারও জয় পেয়েছেন তৃণমূলের কাকলি ঘোষদস্তিদার। অভিযোগ, কাকলির জয় নিশ্চিত হওয়ার পরেই মধ্যমগ্রামের নেতাজিপল্লিতে কয়েক জন বিজেপি সমর্থকের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে যাঁদের, তাঁদের দাবি, এই ঘটনা ঘটিয়েছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দিকেই আঙুল তুলেছে তৃণমূল। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে নেতাজিপল্লিতে বিজেপি সমর্থকদের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। দুষ্কৃতীরা লোহার রড, বাঁশ, বন্দুক নিয়ে বাসিন্দাদের ভয়ও দেখায়। আক্রান্ত বিজেপি সমর্থকদের অভিযোগ, তাঁদের বলা হয়, ‘‘এখানে থাকতে হলে বিজেপি করা চলবে না।’’ ভাঙচুর করার চেষ্টা হয় এলাকায় বিজেপির পার্টি অফিসেও। বেশ কয়েক জনকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ।
আক্রান্ত বিজেপি সমর্থক অরুণ বারিক বলেন, ‘‘আমার বাড়িতে সবাই বিজেপি। পতাকাও টাঙানো রয়েছে। আমাকে বলা হয়, এখানে থাকা চলবে না। তার পর দুমদাম চড়-থাপ্পড়, ঘুষি মারতে থাকে। হুমকি দিয়ে বলে যায়, এখান থেকে পরিবার নিয়ে উঠে না গেলে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হবে। আমি বিজেপিকে ভালবাসি বলেই মার খেলাম।’’ হামলা, মারধরের যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। রাজ্যের শাসকদলের পাল্টা দাবি, এই ঘটনা বিজেপিরই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফসল। তৃণমূল নেতা গোপাল রায়ের দাবি, বিজেপি নিজেদের মধ্যে কোন্দল করে বাড়ি ভাঙচুর করেছে। কারণ, লোকসভা ভোটের টাকার ভাগবাঁটোয়ারা নিয়ে কোন্দল আগে থেকেই রয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি তাঁর।
গোলমালের খবর পেয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে অকুস্থলে পৌঁছয় দত্তপুকুর থানার পুলিশ। কিন্তু বাহিনী ফিরে যাওয়ার পর আবারও হামলা হয় বলে দাবি করছেন এলাকার বিজেপি সমর্থকেরা। দত্তপুকুর থানায় ঘটনার অভিযোগ জানানো হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় এক জনকেও গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
কার্যত একই অভিযোগ উঠেছে যাদবপুরেও। সেখানে বিজেপি প্রার্থীর পোলিং এজেন্টের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। নরেন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও এখনও অধরা দুষ্কৃতীরা।