ফাঁকা মঞ্চ। ধর্নার ১১৭৫ তম দিনে শুনশান চারদিক। ছিলেন না কেউই। এই প্রথম।
মঙ্গলবারের দুপুর গড়ানোর আগেই লোকসভা ভোটের ফল আঁচ করা গিয়েছিল। আর প্রতিদিন ওই সময়টাতেই নিয়োগের দাবিতে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীরা গান্ধী মূর্তির পাদদেশের ধর্না মঞ্চে এসে জড়ো হন। এ দিন আর এলেন না কেউই।
শুধু গান্ধী মূর্তির পাদদেশ নয়, মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশের মঞ্চ-সহ শহরের প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলা চত্বরে বিভিন্ন চাকরিপ্রার্থীদের তিনটি মঞ্চই এ দিন পুরোপুরি ফাঁকা ছিল।
কেন?
ধর্না, অবস্থান, বিক্ষোভ, মিছিলে সরকার বিরোধী স্লোগান তুলেছিলেন এই চাকরিপ্রার্থীরা। অনেকেই মনে করেছিলেন, এ বারের লোকসভা নির্বাচনে শিক্ষা দুর্নীতি একটা বড় ইস্যু হয়ে উঠবে। কিন্তু ফল হল উল্টো। খানিকটা বিমর্ষ হয়েই এ বার তাঁদের দাবি, লক্ষ্মীর ভান্ডার থাক। সেই সঙ্গে নিয়োগটাও দ্রুত হোক। এক চাকরিপ্রার্থীর কথায়, “তৃণমূল বিপুল জনাদেশ পেয়েছে। আশা করা যায় এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মসংস্থানেও গুরুত্ব দেবেন।”
চাকরিপ্রার্থী অভিষেক সেনের কথায়, “বিপুল জনসমর্থন পাওয়া মানে তো এটা নয় যে, শিক্ষাক্ষেত্রের নিয়োগে দুর্নীতি হয়নি। এই ভোটে রাজ্যের মানুষ হয়তো ভাতার উপরে আস্থা রাখল।”
চাকরিপ্রার্থী অষ্টপদ শাসমল বলেন, “আমাদের কথা আন্তরিকতার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলই ভাবে না। এই ভোট প্রমাণ করল, চাকরির দাবিতে আমাদের লড়াইটা আমাদের একার।” তাঁরও আশা, এই বিপুল জয়ের পরে মুখ্যমন্ত্রী কর্মসংস্থানের দিকটাও দেখবেন।
উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থী সুশান্ত ঘোষ জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী ২০১৬-র ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১-এর ২১ জুন এবং ২০২৩-এর ৩০ মে— তিন বার তাঁদের নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু এক বারও প্রতিশ্রুতি রক্ষা হয়নি। ২০১৬-র পরে এসএসসির পরীক্ষা হয়নি। পাঁচ থেকে সাত লক্ষ বেকার যুবক-যুবতী সেই পরীক্ষার আশায় বসে রয়েছেন।
চাকরিপ্রার্থীরা জানান, নিয়োগের দাবি ফের তুলবেন তাঁরা। বুধবার থেকে আবার বসবেন মঞ্চে।