• আবেগ সরিয়ে রেখে শেষ ম্যাচে ইতিহাস রচনা করতে চান সুনীল
    আজকাল | ০৬ জুন ২০২৪
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। গত দু'সপ্তাহ ধরে যার অপেক্ষায় ছিলেন সুনীল ছেত্রী। তবে সত্যিই কি চেয়েছিলেন এই দিনটা আসুক? হয়তো না। তবে সুনীলের মতো আদ্যপান্ত পেশাদারকে দেখে বোঝা দায়। বুধবার দুপুরে ইগর স্টিমাচের সঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলন করতে এসে প্রথমেই জড়িয়ে ধরলেন কুয়েত কোচ রুই বেন্টোকে‌। তারপর শক্ত চোয়ালে একের পর এক প্রশ্নের উত্তর। শুরুতেই দূরে ঠেলে দিলেন আবেগকে। বুঝিয়ে দিলেন, এটা শুধু তাঁর বিদায়ী ম্যাচ নয়। সেটা উপলক্ষ মাত্র। আসল লক্ষ্য কুয়েতকে হারিয়ে বিশ্বকাপের যোগ্যতাঅর্জন পর্বের তৃতীয় রাউন্ডের ছাড়পত্র সংগ্রহ করা। সুনীল বলেন, 'আবেগ থাকবেই। তবে এখন শুধুই ম্যাচ নিয়ে ভাবছি। আমরা ড্রেসিংরুমে আমার অবসর নিয়ে আর কোনও কথা বলি না। আমার শেষ ম্যাচ নিয়ে চর্চা এখন অতীত। শুধুমাত্র আপনারাই আবেগের প্রসঙ্গ টানেন। আমাদের সামনে এখন শুধুই কুয়েত ম্যাচ। যা আমাদের ভাল খেলে জিততে হবে। আমি বেশ কয়েকবার এখানে বসে সাংবাদিক সম্মেলন করেছি। এমন অনেকজন এখানে রয়েছে যাদের আমি গত ২০ বছর ধরে দেখছি। আমি সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। তবে এবার ম্যাচে ফোকাস করতে হবে। আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় ম্যাচ। এর থেকে ভাল অবসরের মঞ্চ হতেই পারত না। আমি মানসিকভাবে শান্তিতে আছি। নিজের সবটা উজাড় করে দিয়েছি। আমরা কাল ইতিহাস সৃষ্টি করতে পারব কিনা সেটা সময়ই বলবে। তবে আমাদের আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে।'এটা যে তাঁর ম্যাচ নয়, ভারত বনাম কুয়েতের খেলা, সেটা বারবার মনে করিয়ে দেন ভারত অধিনায়ক। সুনীল বলেন 'আমি ম্যাচটা নিয়ে আবেগপ্রবণ হতে চাইছি না। শুধু জিততে চাই। ১-০ গোলে জিতলেও চলবে। আমাদের আগের ১৫ দিন ভাল কেটেছে। দল ফিট আছে। সবাই নিজের সেরাটা দেওয়ার জন্য তৈরি। কোচের দল বাছতে সমস্যা হবে। যেকোনো কোচের কাছেই এটা ভাল সমস্যা। তবে এটা আমার ম্যাচ নয়, আমাদের ম্যাচ। কুয়েতের বিরুদ্ধে দলের ম্যাচ। পরের রাউন্ডে গিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করার সুযোগ রয়েছে আমাদের সামনে। ম্যাচটা কলকাতায় বলে অবশ্যই খুশি। আমাদের লম্বা আবাসিক শিবির হয়েছে। বেশিদিন একসঙ্গে থাকলে দলের মধ্যে বোঝাপড়া বাড়ে। মাত্র পাঁচ দিনে সেটপিস নিয়ে বিস্তারিত ট্রেনিং হয় না। আশা করছি আমরা এবার এটা কাজে লাগাতে পারব।'১৯ বছর আগে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দেশের জার্সিতে অভিষেকে গোল পেয়েছিলেন। বিদায়ী ম্যাচেও গোল করে আরও একটি বৃত্ত সম্পূর্ণ করতে চাইবেন সুনীল। কিন্তু সেই নিয়ে ভাবছেন না। গোল পেলে ভাল, না পেলেও ক্ষতি নেই। আসল লক্ষ্য দেশকে বিশ্বকাপের যোগ্যতাঅর্জন পর্বের তৃতীয় রাউন্ডে তুলে অবসরের লগ্নকে স্মরণীয় করে রাখা। সুনীল বলেন, 'আমি ১৯ বছর জাতীয় দলের হয়ে খেলছি। কুয়েত ম্যাচটা আমাদের কাছে বিশাল ম্যাচ। ম্যাচটা জিততে পারলে, সবকিছু বদলে যাবে। আমি গোল পেলাম কী পেলাম না, সেটা বড় বিষয় নয়। পেলে ভাল, না পেলেও সমস্যা নেই। ভারতের জার্সিতে যে কেউ গোল করলেই আমরা খুশি। আমার দুটো লক্ষ্য। এক, ম্যাচটা জিতে তিন পয়েন্ট পাওয়া। দ্বিতীয়ত, ক্লিনশিট রাখা। ম্যাচের পর সেলিব্রেশন হবে। কঠিন ম্যাচ। শেষ না হওয়া পর্যন্ত আনন্দ করা যাবে না। আমরা ক্লিনশিট রেখে তিন পয়েন্ট পেতে চাই। তাই যাবতীয় উৎসব ম্যাচের পর তোলা থাকবে।' বৃহস্পতিবারের পর অতীত হয়ে যাবেন। ‌প্রাক্তনের তকমা পড়ে যাবে গায়ে। সুনীলের উত্তরসূরি কে হবে? বেশ কয়েকজনের ওপর আস্থা রাখছেন বিদায়ী অধিনায়ক। এই নিয়ে মশকরাও করেন। সুনীল বলেন, 'ডেভিড, মনবীর, রহিম, শিবাশক্তিরা আছে। তবে সব নম্বর নাইনের বিশেষত্ব আলাদা। আমাদের দলে ৬-৭ জন আছে যারা এই পজিশনে খেলতে পারবে। কোচের হাতে বিকল্প থাকবে। ওরা সবাই অপেক্ষা করে আছে। আমি চলে যাওয়ার পর ওরা সুযোগ পাবে। এবার যদি আমি বলি, আমি অবসর নিচ্ছি না, ওদের মাথায় হাত পড়বে।' বৃহস্পতি সন্ধেয় গোটা পরিবার হাজির থাকবে যুবভারতীতে। থাকবেন সুব্রত ভট্টাচার্যও। জামাইয়ের শেষ ম্যাচের আগে কি কোনও উপদেশ দিয়েছেন তারকা শশুর? প্রশ্ন শুনে প্রথমে কিছুটা থমকে যান। মিনিটের মধ্যে হাসতে হাসতে সুনীলের উত্তর, 'ওনার মেয়েকে ভাল রাখতে বলেছেন।'
  • Link to this news (আজকাল)