এক সময়ে ‘কন্ডোম’ বিতর্কে তুমুল বাগ্যুদ্ধে জড়িয়েছিলেন দু’জনে। এক দিকে অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ, অন্য দিকে প্রবীণ বিজেপি নেতা তথাগত রায়। ঘটনাচক্রে, সেই বিতর্কের পরেই সায়নীর রাজনীতিতে আসা। আর তার তিন বছরের মাথায় দিল্লিবাড়ির ভোটে জয়! যাদবপুর কেন্দ্র থেকে জেতার পর তৃণমূলের তারকা প্রার্থী সায়নী জানালেন, তিনি তথাগতের বাড়িতে মিষ্টি পাঠাতে চান।
যাদবপুরে আড়াই লাখের বেশি ভোটে জিতেছেন সায়নী। সেই জয়ের পর তাঁকে সংবর্ধনা জানাতে সোনারপুর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের কামালগাজিতে কর্মিসভার আয়োজন করা হয়েছিল। বুধবার সেখানে গিয়ে সায়নী জানান, দলের কর্মীদের জন্যই তাঁর জয় সম্ভব হয়েছে। কৃতজ্ঞতা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে সায়নীকে তথাগত সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়। তার প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘‘ঠিকানাটা বলুন, বাড়িতে মিষ্টি পাঠাব।’’
সায়নীর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তথাগত আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘মিষ্টি পাঠালে নেব। কিন্তু খাব না। আমার আবাসনে যে দারোয়ান বা গাড়িচালক রয়েছেন, তাঁদেরও দেব না। পথকুকুরদের বিলিয়ে দেব। তারাও খাবে কি না, জানি না।’’
সমাজমাধ্যমে এক বার ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানের বিরোধিতা করায় বিজেপির রোষে পড়েছিলেন সায়নী। সেই সময় বিজেপির সঙ্গে বাগ্যুদ্ধে সায়নীর পোস্ট করা একটি পুরনো টুইট তুলে এনেছিলেন তথাগত। যেখানে শিবলিঙ্গে কন্ডোম পরানো এক মহিলাকে ‘বুলাদি’ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। সায়নী হিন্দু ধর্মের অপমান করেছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন প্রবীণ নেতা। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত পৌঁছয়। সেই সময় সায়নীর সমর্থনে মাঠে নেমেছিলেন মমতা। সমাজমাধ্যমে সায়নীকে হুমকি দেওয়ার তীব্র সমালোচনা তো করেনই, বিজেপিকে হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন, ‘‘ক্ষমতা থাকলে সায়নীর গায়ে কেউ হাত দিয়ে দেখাক।’’ তার পর থেকেই সায়নী এবং তৃণমূলের ‘পরিবর্তিত রসায়ন’ নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সায়নীর তৃণমূলে যোগদানের পর সেই জল্পনায় সিলমোহর পড়ে।
গত বিধানসভা নির্বাচনে সায়নীকে আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রে প্রার্থীও করেছিলেন মমতা। যদিও সায়নী হেরে গিয়েছিলেন বিজেপির অগ্নিমিত্রা পালের কাছে। ভোটে হারলেও তৃণমূল এবং আসানসোলের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করেননি সায়নী। বরং, করোনা এবং কার্যত লকডাউনের পরিস্থিতিতে বার বারই গিয়েছেন আসানসোল। ত্রাণ বিলি করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের নানা সমস্যায় তিনি পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলেন। এর পরেই সায়নীকে দলের যুব সংগঠনের দায়িত্ব দেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এ বার লোকসভা ভোটে তাঁকে প্রার্থীও করে তৃণমূল। সায়নীও জেতেন।