লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিপর্যয়ের জন্য নরেন্দ্র মোদীকেই দুষলেন পুরীর শঙ্করাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী। অযোধ্যায় বিজেপি-র হার নিয়েও কটাক্ষ করেছেন তিনি। মোদী যেন তাঁর সঙ্গে ‘টক্কর’ না-দেন, সেই হুঁশিয়ারিও শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। এর আগেও রামমন্দিরকে উপলক্ষ করে ধর্ম নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আচরণ ‘উন্মাদের লক্ষণ’ বলে মোদীর সমালোচনা করেছিলেন শঙ্করাচার্য।
রাষ্ট্রোৎকর্ষ সম্মেলন তথা দীক্ষা গ্রহণ উৎসব উপলক্ষে বুধবার বোলপুর এসেছেন শঙ্করাচার্য ও তাঁর শিষ্যরা। এ দিন শঙ্করাচার্য বলেন, ‘‘অযোধ্যায় মানুষ বিজেপির প্রার্থীকে পরাজিত করে জবাব দিয়েছে।’’ তাঁর প্রশ্ন, রামমন্দির উদ্বোধনে যদি ভাল প্রভাব পড়ত, তা হলে বিজেপি অযোধ্যায় জিতত, তাই না? শঙ্করাচার্যের সংযোজন, অযোধ্যাবাসী যে সহমত নয়, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। লৌকিক আচার না-মানলে গণতন্ত্র থাকে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী ব্রাহ্মণও যদি হতেন, তা হলেও রাজনেতা হওয়ার কারণে তাঁর রামমন্দির উদ্বোধন করা ঠিক হত না।’’
এর আগেও রামমন্দির উদ্বোধন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন শঙ্করাচার্য। মন্দির উদ্বোধনের ঠিক আগে তিনি বলেছিলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর নিজের সীমার মধ্যে থেকে কাজ করা উচিত। সংবিধান সম্মত বিধি-নিষেধ পালন করা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব। এই বিধিকে উপেক্ষা করে নিজের প্রচারের চেষ্টা করা উচিত নয়।’’ এখানেই না-থেমে তিনি বলেছিলেন, ‘‘ধর্মের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা তাঁর উচিত নয়। সব ব্যাপারে দাদাগিরি করা এবং নেতৃত্ব দিতে যাওয়া প্রধানমন্ত্রীর কাজ নয়। এমন কাজ করা উন্মাদের লক্ষণ!’’
শঙ্করাচার্যের বোলপুর-শান্তিনিকেতন সফর উপলক্ষে বিশ্বভারতী চত্বরে ধর্মীয় পোস্টার দেওয়া এবং শঙ্করাচার্য-সহ অতিথিদের থাকার জন্য বিশ্বভারতীর অতিথি নিবাস বুক করা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। এ দিন অবশ্য বিশ্বভারতীর অতিথি নিবাসে না-উঠে বিতর্ক এড়িয়েছেন শঙ্করাচার্য। শ্রীনিকেতন সংলগ্ন একটি হোটেলে উঠেছেন তিনি। সেখানেই তিনি বলেন, “মোদীজি কংগ্রেসকে দুর্বল মনে করতেন এই নির্বাচনের আগে। আর মনে করবেন না। এই পশ্চিমবঙ্গে জ্যোতি বসু আমার সঙ্গে টক্কর নিয়েছিলেন। শেষ হয়ে গিয়েছেন। লালুপ্রসাদ যাদব টক্কর নিয়েছিলেন, মুলায়ম সিংহ যাদব টক্কর নিয়েছিলেন। শেষ হয়ে গিয়েছেন। মোদীজিরও উচিত আমার সঙ্গে টক্কর না নেওয়া।’’