'বাংলার ৩ বিজেপি সাংসদ আমার সঙ্গে যোগাযোগে আছেন', ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে 'গোপন কথা' ফাঁস অভিষেকের!
২৪ ঘন্টা | ০৬ জুন ২০২৪
রাজীব চক্রবর্তী: "বাংলার তিনজন বিজেপি সাংসদ আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।" সূত্রের খবর, ইন্ডিয়া জোটের নেতাদের এমনই জানিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপরই উঠছে প্রশ্ন, সমীকরণ কি বদলাচ্ছে? টিডিপি এবং জেডিইউ-এর বাইরেও অন্যান্য ছোট দলগুলির সঙ্গে ইন্ডিয়া জোট যোগাযোগ শুরু করেছে বলে খবর। ইন্ডিয়া জোটের স্পষ্ট বক্তব্য, ভোটের ফলাফল মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। আর সেখানেই এবার সমীকরণ তৈরির প্রসঙ্গ! কারণ, ইন্ডিয়া জোটের শরিক দলগুলির সিদ্ধান্ত হচ্ছে, 'বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচাগ্র মেদিনী।' আর সেই লক্ষ্যেই আঞ্চলিক দলগুলির নেতারা একে অপরের সঙ্গে বৈঠক করছেন।সূত্রের খবর, অভিষেকের দাবি অনুযায়ী বাংলায় তিন বিজেপি সাংসদ ছাড়াও ওদিকে মহারাষ্ট্র সহ অন্যান্য রাজ্যেও বদলাতে পারে সমীকরণ। জানা গিয়েছে, একনাথ শিন্ডে শিবিরের সাংসদরা যোগাযোগ রাখছেন উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে। ওদিকে আজ বিকেলেই শরদ পাওয়ার এবং সঞ্জয় রাউতের সঙ্গেও বৈঠক করতে পারেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে সবমিলিয়ে 'খেলা' ঘোরার ইঙ্গিত রয়েছে সবদিকেই! উল্লেখ্য, এদিন সকালেই অখিলেশের বাড়িতে যান অভিষেক। সঙ্গে ছিলেন ডেরেক ও' ব্রায়েনও। নিজে বেরিয়ে এসে তাঁদেরকে স্বাগত জানান সপা প্রধান। নিয়ে যান বাড়ির ভিতর। তারপর বৈঠক সারেন দুই নেতা। কয়েক মিনিটের বৈঠকের পর সেখান থেকে বেরিয়ে যান অভিষেক। তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে যে, এটা নিছক সৌজন্য় সাক্ষাৎ। তবে বুধবারের ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকের পরদিন সকালেই অখিলেশের বাড়িতে অভিষেকের যাওয়া নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহল মহল। ইন্ডিয়া জোটের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুখ অভিষেক। জোটের কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্য অভিষেক। গতকাল ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসেরও প্রতিনিধিত্ব করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে রাহুল-অখিলেশের সঙ্গে প্রথম সারিতেই ছিলেন অভিষেক। ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকের পর সোনিয়া গান্ধীকে পাশে নিয়ে গতকাল কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ঘোষণা করেছেন যে, 'বিজেপির ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে ইন্ডিয়া জোট'! তাঁর কথায়, 'সঠিক সময়ে আমরা সঠিক পদক্ষেপ করব এবং বুঝিয়ে দেব যে, মানুষ বিজেপি সরকার চায় না। এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত। আর মানুষকে যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, তা রাখব।' ওদিকে গতকাল বৈঠকে বসে এনডিএ শিবিরও। এনডিএ বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী সর্বসম্মতিক্রমে নেতা নির্বাচিত হয়েছেন। বৈঠকে চন্দ্রবাবু নায়ডু ও নীতীশ কুমার এনডিএ-কে সমর্থনের কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। যদিও দুজনেরই সমর্থনে 'শর্ত' রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সূত্রের খবর, চন্দ্রবাবু নায়ডুর টিডিপি এবং নীতীশ কুমারের জেডিইউ উভয়েই লোকসভার স্পিকার পদের দাবিদার। পাশাপাশি, মন্ত্রিসভায় নিজের দলের কমপক্ষে ৪ জনকে দেখতে চেয়েছেন চন্দ্রবাবু নায়ডু। ওদিকে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রমন্ত্রী মিলিয়ে জেডিইউ-র মোট ৫ জনকে রাখার দাবি জানিয়েছেন নীতীশ কুমারও। ফলে এনডিএ শিবিরের বিড়ম্বনা যে কমছে না তা বলাই বাহুল্য। লোকসভা ভোটের ফল বেরতেই এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ফলে সরকার গড়তে বিজেপি এখন শরিক নির্ভর! আর সেক্ষেত্রে নীতীশ-নায়ডু হচ্ছেন এনডিএ শিবিরের এক্স-ফ্যাক্টর। সরকারের ভাগ্য তাঁদের হাতে একথা বলাই যায়!