কেউটের ছোবলে মৃত্যু দু'বছরের শিশুর! তবু ওঝাতেই আস্থা'
২৪ ঘন্টা | ০৬ জুন ২০২৪
প্রসেনজিৎ সরদার: সাপের কামড়ে মৃত্যু হল এক শিশুর। মৃতের নাম মিজানুর মোল্লা (২)। ঘটনাটি ঘটেছে ক্যানিং থানার অন্তর্গত দাঁড়িয়ার তেঁতুলবেড়িয়া গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন দুপুরে বসে খেলছিল শিশুটি। পাশেই ছিল একটি গর্ত। কোনও ভাবে ওই গর্ত থেকে বেরিয়ে শিশুর ডান হাতে কামড় দেয় একটি কেউটে সাপ। শিশুটি চিৎকার করে কেঁদে উঠলে তার পরিবারের লোকজন তাকে প্রথমে থামানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ঘটনা কিছু অন্যরকম আঁচ করে তাঁরা শিশুটিকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে যান। তাকে সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
শিশুটির মৃত্যু হয়েছে জানতে পেরে শিশুর বাবা মোবিন আলি মোল্লা ও কাকা জাকির হোসেন মোল্লারা শিশুর দেহ নিয়ে ওঝা-গুণিনের কাছে যাওয়ার জন্য চিকিৎসকদের কাছে অনুরোধ করে। তবে, এমন অবাস্তব কথায় কান দেননি ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকরা। ক্যানিং থানার পুলিস শিশুটির মৃতদেহ ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে। ঘটনাপ্রসঙ্গে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সর্প বিশেষঞ্জ চিকিৎসক সমরেন্দ্রনাথ রায় জানিয়েছে, সাপের কামড়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনা খুব দুঃখজনক। শিশুটিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে এনেছিলেন তার পরিবারের লোকজন। শিশুটির পালস পরীক্ষা করা হয়। কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। কেউটে সাপ কামড় দেওয়ার পরে শিশুর পরিবারের লোকজন সম্ভবত ওঝা-গুণিন করে অতিরিক্ত সময় নষ্ট করে মৃত অবস্থায় শিশুটিকে হাসপাতালে এনেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার কোনও সুযোগ ছিল না। পরিবারের অজ্ঞতা এবং ওঝা-গুণিনের জন্য ওই শিশুর মৃত্যু হয়। তিনি আরেও বলেন, আশ্চর্যের বিষয়, শিশুটির মৃত্যু হওয়ার পরও তার বাড়ির লোকজন মৃতদেহ নিয়ে আবার ওঝা-গুণিনের কাছে যেতে চাইছে'!প্রসঙ্গত, একই ঘটনা ঘটেছে জলপাইগুড়িতেও। সেখানে সাপের কামড়ে মৃত্যু হল নাবালিকা এক স্কুলছাত্রীর। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে এলাকায়। গভীর রাতে জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের সাপটিবাড়ি ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার পর তাকে উদ্ধার করে ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ময়নাগুড়ি থানার পুলিস দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জলপাইগুড়ি মর্গে পাঠিয়েছে।