সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোট আসে ভোট যায়, তবে বঙ্গ রাজনীতিতে সায়নী ঘোষের পোস্ট করা ?শিবলিঙ্গে কন্ডোম? বিতর্ক ছাইচাপা আগুনের মতোই চর্চায় রয়ে যায়। একুশের বিধানসভা ভোটের সময়ে যেমন এই ইস্যুতে আইনি বিপাকে জড়িয়েছিলেন, তেমন চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনেও বিরোধীদের আক্রমণের অস্ত্র হয়ে উঠেছিল সেই পোস্ট বিতর্ক। গত বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির প্রবীণ নেতা তথাগত রায় খোদ রবীন্দ্র সরোবর থানায় সায়নীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিলেন। যার জল গড়িয়েছিল বহুদূর। এমনকী খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পালটা হুঁশিয়ারি দেগে বলেছিলেন, ক্ষমতা থাকলে সায়নীর (ঘোষ) গায়ে হাত দিয়ে দেখাক বিজেপি। বয়স হলেও ভীমরতি যায়নি। নাতনির বয়সি মেয়েকে প্রতিদিন হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন?।? অতীতের সেই বিতর্ক ভুলেই সৌজন্যের বার্তা সায়নী ঘোষের।
বছর তিনেক আগের কথা। তথাগত রায় (Tathagata Roy) এবং সায়নী ঘোষের (Saayoni Ghosh) টুইট যুদ্ধে কার্যত সরগরম হয়ে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া। পুরনো এক টুইটের জেরে আইনি বিপাকে পড়তে হয়েছিল তৃণমূলের যুবনেত্রীকে। একুশের বিধানসভা ভোটের সময়ে সায়নী ঘোষের পোস্ট করা ?শিবলিঙ্গে কন্ডোম? টুইট নিয়ে নতুন করে তরজা শুরু হয়েছিল। এবারে চব্বিশের লোকসভা ভোটের সময়ও সেই পুরনো এক্স হ্যান্ডেলের পোস্ট নিয়ে কম চর্চা হয়নি। অতীত বিতর্কের ?অভিশাপ? খণ্ডাতে প্রচারের সময়ে একাধিকবার শিবলিঙ্গের পুজো করেছেন সায়নী ঘোষ। এমনকী সাংসদ পদ জেতার পর প্রথমে সেই শংসাপত্র শিবের পায়েই অর্পণ করেছেন তৃণমূলের ?বাজিগর?। এবার ভোটে জিতে সেই বিতর্কের কাণ্ডারী তথাগত রায়কে মিষ্টি পাঠাতে চাইলেন সায়নী ঘোষ।
যাদবপুরের ভাবী সাংসদ এবার প্রাক্তন ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথা বিজেপির প্রবীণ নেতা তথাগত রায়ের বাড়িতে মিষ্টি পাঠানোর ইচ্ছেপ্রকাশ করলেন। সায়নীর বিরুদ্ধে হিন্দুদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। গত মঙ্গলবার নির্বাচনী মার্কশিটে দারুণ নম্বর পেয়েছেন সায়নী। প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটে বামপ্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য এবং বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়কে পরাস্ত করেছেন ?অপরাজিত? অভিনেত্রী। ভোটে জিতে তথাগতর খোঁচা প্রসঙ্গে সায়নীর মন্তব্য, ?ধন্যবাদ তথাগত রায়কে। ওঁর ঠিকানাটা আমাকে কেউ একটু দিন। মিষ্টি পাঠাব ওঁর বাড়িতে।?
‘হার কে জিতনে ওয়ালো কো বাজিগর কেহেতে হ্যায়…’ কম-বেশী অনেকেই আমরা এই সংলাপের সঙ্গে পরিচিত। সায়নী ঘোষের ক্ষেত্রে এই কথাটা একেবারে প্রযোজ্য। গত বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের টিকিট পেয়ে আসানসোলে র মাটি কামড়ে পড়েছিলেন। আদা-জল খেয়ে ময়দানে উদয়াস্ত পরিশ্রম করলেও জিত তাঁর কাছে ধরা দেয়নি সেবার! কিন্তু তাতে কি? থেমে থাকেননি সায়নী। রাজনীতির ময়দানে তাঁর কঠোর পরিশ্রম এবং নিষ্ঠা দেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে যুবনেত্রীর পদে বসান। এবার লোকসভায় যাদবপুরের মতো হেভিওয়েট কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থীপদ দিয়েছেন। আর এবার জিতে সেই ভরসাই রাখলেন তৃণমূলের ?বাজিগর? সায়নী।