• নিজেদের ৬ বিধানসভায় হার তৃণমূলের
    আনন্দবাজার | ০৭ জুন ২০২৪
  • মুর্শিদাবাদে সবুজ ঝড়ে কার্যত উড়ে গিয়েছেন বিরোধী দলের প্রার্থীরা। জেলার তিনটি লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচন হয়েছে। সেই সঙ্গে ভগবানগোলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন হয়েছে। আর সব ক’টি আসনে তৃণমূল জয়ী হলেও ২২টি বিধানসভার মধ্যে ৮টি বিধানসভা এলাকায় বিরোধীরা ‘লিড’ নিয়েছেন। যার মধ্যে ছ’টি বিধানসভার বিধায়ক রয়েছেন তৃণমূলেরই। ফলে ওই সব বিধানসভা এলাকায় ফল খারাপ হওয়ায় দলের অন্দরে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছেন। সেই সঙ্গে এখন থেকেই ওই আটটি বিধানসভা এলাকায় তৃণমূল দলের খামতি মেটাতে না পারলে ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনে ভুগতে হতে পারে বলে শাসক দলের অন্দরে প্রশ্নে উঠতে শুরু করেছে।

    তবে বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান রবিউল আলম চৌধুরী বলেন, ‘‘বেশ কিছু বিধানসভা এলাকায় আমাদের কাছ থেকে কিছু ভোটার দূরে সরে গিয়েছেন। যার জেরে কিছু বিধানসভায় আমরা ‘লিড’ পাইনি। কেন এমন হল তা কাটাছেঁড়া আমরা করছি। সেই সঙ্গে দলের রাজ্যের নেতৃত্ব যে নির্দেশে দেবেন মেনে চলব।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ছাব্বিশের নির্বাচনে মানুষ আমাদেরই সমর্থন করবেন।’’

    একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদের ২২ টি আসনের মধ্যে ২০ টিতে তৃণমূল এবং বহরমপুর ও মুর্শিদাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রে জয় পেয়েছিল বিজেপি। পরে সাগরদিঘির তৃণমূল বিধায়ক সুব্রত সাহার মৃত্যুর পরে সেখানে উপ নির্বাচন হয়। তাতে বাম কংগ্রেস জোট প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস জয়ী হন। পরে অবশ্য তিনি দল বদলে তৃণমূলে যোগ দেন। বর্তমানে জেলার ২২ জন বিধায়কের মধ্যে বহরমপুর ও মুর্শিদাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির বিধায়ক রয়েছে এবং জেলার বাকি ২০ জন তৃণমূলের বিধায়ক।

    এই পরিস্থিতিতে এ বারে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে জেলার ১৪টি বিধানসভায় তৃণমূল, চারটি বিধানসভায় কংগ্রেস, তিনটি বিধানসভায় বিজেপি এবং একটি বিধানসভায় সিপিএম এগিয়ে রয়েছে। তৃণমূলের এগিয়ে থাকা বিধানসভাগুলি হল ভগবানগোলা, হরিহরপাড়া, ডোমকল, জলঙ্গি, কান্দি, ভরতপুর, রেজিনগর, বেলডাঙা, নওদা, সুতি, রঘুনাথগঞ্জ, সাগরদিঘি, নবগ্রাম, খড়গ্রাম।

    কিন্তু অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বেশ কিছু বিধানসভায় বিজেপির উত্থান হয়েছে। আগে দু’টি বিধানসভা তাদের ছিল। এ বার লোকসভায় ভোটের নিরিখে দেখা যাচ্ছে, বহরমপুরে তারা পিছিয়ে পড়লেও মুর্শিদাবাদ ধরে রেখেছে। বড়ঞা এবং জঙ্গিপুরে তাদেরই ‘লিড’। এই প্রবণতা নিয়ে উদ্বেগে তৃণমূল। যদিও, সাগরদিঘি ও খড়গ্রাম জিতে তৃণমূল অনেকটা আত্মবিশ্বাস পেয়েছে।

    সিপিএম এগিয়ে রয়েছে রানিনগর বিধানসভায়। কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে বহরমপুর, লালগোলা, ফরাক্কা ও শমসেরগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র এলাকায়। জঙ্গিপুরের বিধায়ক হলেন প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির হোসেন, রানিনগরের বিধায়ক সৌমিক হোসেন, লালগোলার বিধায়ক হলেন মহম্মদ আলি, শমসেরগঞ্জের বিধায়ক হলেন আমিরুল ইসলাম, ফরাক্কার বিধায়ক হলেন মনিরুল ইসলাম এবং বড়ঞার বিধায়ক হলেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। তৃণমূলের এই সব বিধায়কদের আসনে এবারে বিরোধীরা ‘লিড’ পাওয়ায় দলের অন্দরে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে ছাব্বিশের নির্বাচনে জয় পেতে গেলে এখন থেকে পুরনো জমি উদ্ধারে তৃণমূল বিধায়কদের নামতে হবে বলেও কথা উঠেছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)