• ভোট-বিপর্যয়, ইস্তফা দাবি সন্ন্যাসীচরণের
    আনন্দবাজার | ০৭ জুন ২০২৪
  • লোকসভা নির্বাচনে বীরভূম জেলায় বিজেপির ফল খারাপ হওয়ায় এ বার নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন কর্মীদের একাংশ। বুধবার একটি অডিয়ো বার্তায় জেলার দুই আসনে দলের বিপর্যয়ের জন্য রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছিলেন ঝাড়খণ্ডের এক বিজেপি নেতা শিবলাল ঘোষ। এ বার দলের বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডলের পদত্যাগ দাবি করলেন বিজেপির এক কর্মী। যদিও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ সন্ন্যাসীচরণ।

    ভোট প্রক্রিয়া চলাকালীনও বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল বারবারই সামনে এসেছে। কখনও দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে কর্মীরা অভিযোগ করেছেন, ১০০ শতাংশ এজেন্ট দেবেন বলে টাকা নিয়েও ৪০ শতাংশ এজেন্ট দিয়ে প্রার্থীকে হারানোর চেষ্টা করছেন নেতৃত্ব। বুথের কর্মী ও ভোটের খরচের টাকা দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ তোলা হয়। কর্মীদের একাংশ লিখেছিলেন, ‘‘বিজেপির ক্ষতি করছে বিজেপির নেতাগুলোই! তাদের কাজ দলকে নিয়ে ব্যবসা করা। আমাদের টাকা মেরে লুটপাট চালিয়ে দলটাকে তৃণমূলের কাছে বিক্রি হতে দেবো না!” ভোট গণনার ক’দিন আগেও বোলপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী পিয়া সাহা এবং জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ তুলে বিজেপি কর্মীদের একাংশ বোলপুরে অস্থায়ী দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখান।

    বিজেপি সূত্রেই জানা যাচ্ছে, এ বার ভোটের ফলে দলের বিপর্যয়ের পরে কর্মীদের ক্ষোভ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন সাগংঠনিক জেলা নেতৃত্ব। ২০১৯-এর চেয়ে অনেক বেশি ব্যবধানে বিজেপি প্রার্থীকে পরাজিত করেছেন তৃণমূল প্রার্থী। এর পরেই সামনে এসেছে কর্মীদের অসন্তোষ। এমন পরিস্থিতিতে বিজেপির বর্ধমান-দুর্গাপুর সাগংঠনিক জেলার সভাপতি অভিজিৎ তা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে দল সূত্রের খবর। অভিজিতের সেই পদত্যাগপত্রই দলীয় একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পোস্ট করে বোলপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপির এক কর্মী লিখেছেন, “বোলপুর সংগঠনিক জেলার সভাপতির পদত্যাগের অপেক্ষায়। শুধু পদত্যাগ করলে হবে না, জেলা ও মণ্ডল সভাপতিদের কাছ থেকে ঘাড় ধরে বুথের টাকা আদায় করতে হবে।”

    জেলা বিজেপির অনেক কর্মীই আবার দাবি করছেন, “আমরা এত পরিশ্রম করার পরেও বিপুল ভোটে হার মেনে নিতে পারছেন না কেউই। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে কোথাও একটা বোঝাপড়া হয়েছিল তৃণমূলের সঙ্গে। আমরা এই জেলা সভাপতির পদত্যাগ দাবি করছি।’’ দলের বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, “জেলায় ফল খারাপ হয়েছে ঠিকই। তবে আমরা ভেঙে পড়িনি। দলেরই কয়েক জন বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য এই ধরনের পোস্ট করছেন। যা দলের পক্ষে আরও ক্ষতিকর। এই ধরনের পোস্ট যাঁরা করছেন, তাঁরা দলকে ভালবাসেন না।”

    এই নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করে জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য ও মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “জেলায় বিজেপির যে কোনও অস্তিত্ব নেই, তা এ বারের নির্বাচনে আবার প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। আগেই বলেছিলাম, ভোটপর্ব মিটলেই ওদের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে আসবে। এ-সব তারই বহিঃপ্রকাশ।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)