• একক গরিষ্ঠতার শিকে ছেঁড়েনি, 'অর্গানিক অ্যালায়েন্স' তত্ব মোদির ...
    আজকাল | ০৭ জুন ২০২৪
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজ্যে নির্বাচনের আগে তিনি আওয়াজ তুলেছিলেন 'ইস বার ৪০০ পার'। যতটা না ছিল এনডিএ জোটের কথা তার থেকে বেশি ছিল বিজেপির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার দাবিকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা। ফলে এনডিএ'কে কিছুটা দূরে সরিয়ে রেখেই এই স্লোগান আউড়ে গেছিলেন প্রতিটি নির্বাচনী প্রচারে। কিন্তু সময় যতই গড়িয়েছে তাঁর কাছে ততটাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল দেশের রাজনৈতিক চালচিত্রটা। ফিরে এসেছিলেন এনডিএ'র কথায়। শেষ পর্যন্ত অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বলে দিয়েছে এবার আর একা নয়, কেন্দ্রে সরকার গড়তে এবার শরিকদের সাহায্য নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। তাই এই শরিকদের সরকারে ধরে রাখতেই শুক্রবার সংসদের সেন্ট্রাল হলে ভাষণ দিতে গিয়ে তৃতীয়বারের জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে চলা নরেন্দ্র মোদির মুখে শোনা গেল এনডিএ'র স্তুতি। মঞ্চে নীতিশ কুমার, চন্দ্রবাবু নাইডু-সহ অন্যান্য নেতাদের উপস্থিতিতে মোদি তাঁর ভাষণের এক বড় অংশই ব্যয় করলেন এই জোট এবং জোটের নেতাদের প্রশংসায়। মোদির কথায়, 'এনডিএ'র মতো ভোট পূর্ববর্তী জোট এর আগে কখনও সফল হয়নি। আমাদের পারস্পরিক বিশ্বাসের সেতুটা অটুট। যেটাই আমাদের সবচেয়ে বড় পুঁজি।' দেশের মানুষের কাছে এই জোটের গুরুত্ব বোঝাতে তিনি বলেন, 'এনডিএ জোট ভারতের আত্মার প্রতিবিম্ব। সরকারের জন্য বহুমত প্রয়োজন পড়লেও দেশের জন্য সহমত দরকার।' জোটে যে কোনও কৃত্তিমতা নেই সেটা বোঝাতে তিনি বলেন, 'একেবারে নিচুতলা পর্যন্ত কাজ হয়েছে। তাই এই 'অর্গানিক অ্যালায়েন্স' তৈরি হয়েছে।' এই জোটের দুই গুরুত্বপূর্ণ দল জেডিইউ এবং টিডিপি। যারা ইতিমধ্যেই সমর্থনের জন্য বেশ কিছু দাবিদাওয়া পেশ করেছেন বলে জানা গিয়েছে। সংসদের সেন্ট্রাল হলে এদিন মোদিকে জোটের নেতা হিসেবে নির্বাচন করার পর জেডিইউ প্রধান নীতিশ কুমার বলেন, 'নরেন্দ্র মোদির পাশে সবসময় থাকব।' আরেক নেতা টিডিপি প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডু জানান, 'সঠিক সময়ে যোগ্য নেতা পেয়েছে দেশ।' এই দুই নেতাকে পাশে নিয়েই এদিন মঞ্চে বসেছিলেন মোদি। ছিলেন জোট শরিক অন্য নেতারা। জোটের প্রশংসায় দেশের ভাবী প্রধানমন্ত্রী জানান, আদিবাসী অধ্যুষিত থেকে খৃষ্টান প্রধান রাজ্যেও এনডিএ আছে। মোদির কথায়, 'এটাই সবচেয়ে সফল জোট'। যার জন্য প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী থেকে প্রকাশ সিং বাদল-সহ অন্যান্য নেতাদের কৃতিত্ব দিয়ে মোদি বলেন, তাঁরা যে বীজ বপন করেছিলেন তা আজ বৃক্ষে পরিণত হয়েছে। তাঁর কথায়, 'এনডিএ জোটই দেখিয়েছে কীভাবে সরকার চালাতে হয়'। এবার এবং আগামী লোকসভা ভোটেও যে এনডিএ জোটই ক্ষমতায় আসতে চলেছে তা বোঝাতে গিয়ে আশাবাদী মোদি জানিয়েছেন, আগামী ১০ বছর গরীবদের উন্নতি-সহ সুশাসন, মহিলাদের উন্নয়ন ও দেশের বিকাশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই এই জোটের লক্ষ্য। জোট শরিক নীতিশ ও চন্দ্রবাবুর প্রশংসা করে মোদি বলেন, তাঁদের দু'জনের মধ্যেই গরীব কল্যাণের ইচ্ছা আছে। এদিনের ভাষণে একদিকে যেমন ছিল জোট সরকারের ভবিষ্যতের কাজের দিকগুলি তুলে ধরা তেমনি ছিল কংগ্রেস-সহ আইএনডিআইএ বা 'ইন্ডিয়া' জোটের বিরোধীদের প্রতি আক্রমণ। কংগ্রেসের সমালোচনা করে তিনি বলেন, '১০ বছর পরেও কংগ্রেস ১০০ ছুঁতে পারল না। গত তিনটি নির্বাচনে কংগ্রেস সবমিলিয়ে যা আসন পেয়েছে আমরা এই ভোটে তার থেকে বেশি পেয়েছি।' বিরোধীদের প্রতি মোদির অভিযোগ, বিদেশে দেশের গণতন্ত্রকে ছোট করে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে।' ভোট পরবর্তী বিরোধীদের ভূমিকা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এই সরকার দেশের সবচেয়ে মজবুত শরিকি সরকার। বিরোধীরা চেষ্টা করেছে একে পরাজয়ের ছায়ায় ডুবিয়ে রাখার।' বিরোধীরা ডুবতে ডুবতে এখন ধীরে ধীরে গর্তে ঢুকে যাচ্ছেন বলেও মোদির দাবি। ইন্ডিয়া জোটের কড়া সমালোচনায় মোদির অভিযোগ, এঁরা ইভিএমের নিন্দা করেন। আধার আটকাতেও এঁরা সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন। এঁরা প্রযুক্তি ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছেন। তিনি বলেন, 'আশা করব আগামী পাঁচ বছর ইভিএম নিয়ে আমাদের আর কিছু শুনতে হবে না।' এই নির্বাচনে দক্ষিণ ভারত, কর্নাটক ও কেরালায় তাঁদের অগ্রগতির কথা তুলে মোদি বলেন, 'কেরালাতে সবচেয়ে বেশি অত্যাচার হলেও এবারই প্রথম আমরা এই রাজ্য থেকে প্রতিনিধি পেয়েছি।' উল্লেখ করেন, তামিলনাডুতে আসন না পেলেও কীভাবে তাঁদের অগ্রগতি হয়েছে। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে ওডিশায় বিজেপি সরকার তৈরি করতে চলেছে। মোদি জানিয়েছেন, আগামী ২৫ বছর এই রাজ্য বিকশিত ভারতের একদম ওপরের দিকে থাকবে।  বিশ্ব অর্থনীতিতে পাঁচ থেকে তিন নম্বরে উঠে আসার লক্ষ্যমাত্রার কথা ঘোষণা করে এদিন মোদি জানিয়েছেন, দেশে তিন কোটি বাসস্থান তৈরি করার পর আগামীদিনে লক্ষ্য চার কোটি বাসস্থান তৈরি করার।
  • Link to this news (আজকাল)