বহু ভোটের ভবিষ্যৎ ঠিক করেছেন তিনি। কিন্তু ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের ভবিষ্যদ্বাণী মেলাতে পারেননি ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। নির্বাচনী ফল প্রকাশের তিন দিন পর অবশেষে ‘ভুল’ মানলেন প্রশান্ত। একই সঙ্গে ঘাট মানলেন, আর কোনও দিন ভোটের ভবিষ্যদ্বাণী করবেন না।
২০২৪ সালের লোকসভা ভোট চলাকালীনই ফলাফল নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত। ২১ মে যখন দেশে পঞ্চম দফার ভোট সবে শেষ হয়েছে, এক সাক্ষাৎকারে প্রশান্ত বলেছিলেন, বিজেপি তাদের ২০১৯ সালের ‘পারফরম্যান্স’ ধরে রাখবে। ২০১৯ সালে ৫৪৩টি আসনের মধ্যে বিজেপি একা ৩০৩টি আসনে জিতেছিল। বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জিতেছিল ৩৩৬টি আসন। প্রশান্ত বলেছিলেন, ‘‘বিজেপি যতই ৪০০ পার করার কথা বলুক আমার মনে হয় না তা সম্ভব। সেটা করতে হলে বিজেপিকে ৩৭০টি আসনে জিততে হবে। সেটা ওরা পারবে না। তবে আমার মনে হয়, বিজেপি ২৭০-এর নীচেও নামবে না। আমার মতে ওরা ২০১৯ সালের ফলাফলই বজায় রাখবে।’’ ভোটের ফল ঘোষণার তিন দিন পর শুক্রবার সেই প্রশান্তই প্রকাশ্যে ভুল মানলেন। বললেন, ‘‘হ্যাঁ আমি ভুল করেছি। আমার এক জন ভোটকুশলীও পুরোটা ভুল ভেবেছে। আমি সেই ভুল স্বীকার করে নিচ্ছি।’’
প্রশান্ত এক সাক্ষাৎকারে সরাসরিই বলেন, ‘‘আমি আর নির্বাচনের সম্ভাব্য আসন সংখ্যা নিয়ে কখনও কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করব না। আমি আমার বিশ্লেষণ জানিয়েছিলাম। আর আজ আমি ক্যামেরার সামনেই স্বীকার করছি আমার বিশ্লেষণে ভুল ছিল। শুধু ভুলই নয় ২০ শতাংশ নম্বরের ফারাক ছিল।’’
তবে একই সঙ্গে প্রশান্ত বলেছেন, “আমি একজন ভোটকুশলী। আমার কাজ ভোটের রণকৌশল ঠিক করা। ভোটের ফল নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী আমি সাধারণত করি না। এ বারও করা উচিত হয়নি। গত দু’বছরে এই নিয়ে দু’বার এই নম্বরে নিয়ে মাথা ঘামানোর ভুল করলাম। এর আগে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটে করেছিলাম (যদিও পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোট হয়েছিল তিন বছর আগে। অর্থাৎ ২০২১ সালে)। আর এ বার ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটেও। তবে নম্বর টুকু বাদ দিলে দেখবেন আমি যা বলেছিলাম তাতে কোনও ভুল ছিল না।”
প্রসঙ্গত, গত ২১ মে প্রশান্তের করা এই ভবিষ্যদ্বাণীর সঙ্গে মিলে গিয়েছিল ভোট শেষে বুথফেরত সমীক্ষার ফলও। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশান্ত নিজের বক্তব্য থেকে আর সরে আসেননি। বরং তাঁর সমালোচকদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘‘৪ জুন হাতের কাছে প্রচুর জল রেখে দেবেন। বলা যায় না, অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন।’’ কিন্তু ৪ তারিখের ফলাফল প্রকাশের পর দেখা যায় ভোটকুশলীর ভবিষ্যদ্বাণী মেলেনি। বিজেপি ২৭০ ছোঁয়া তো দূর, ২৪০-এর গণ্ডি পেরোতে পারেনি। তার পর থেকে প্রশান্তকেও আর দেখা যায়নি। অবশেষে শুক্রবার তিনি সামনে এলেন। এবং জানালেন ভবিষ্যতে আর কখনও দেশের ভোট নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করবেন না।