মহিলার অস্বাভাবিক মৃত্যুতে একাধিক প্রশ্ন, তদন্তে পাঁচ বিশেষ দল
আনন্দবাজার | ০৮ জুন ২০২৪
গত ২৫ মে নবান্নের কাছে শিবপুর রোডের ধারের একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয়েছিল এক মাঝবয়সি মহিলার দেহ। সেই ঘটনার তদন্তে পাঁচটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করল হাওড়া সিটি পুলিশ। পাশাপাশি, এই রহস্য-মৃত্যুর তদন্তভার দেওয়া হয়েছে সিটি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগকেও। পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৫ মে সকালে নবান্নের কাছে শিবপুর রোডের ধারে জেলে গিন্নির পুকুর নামে পরিচিত একটি পুকুর থেকে ওই মহিলার পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর হাতে ছিল শাঁখা ও পলা। যা দেখে পুলিশের অনুমান, মহিলা ছিলেন বিবাহিত। কিন্তু সেই ঘটনার পরে দু’সপ্তাহ কেটে গেলেও মৃতার নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি। রাজ্যের সব ক’টি থানায় ওই মহিলার ছবি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত হাওড়া-সহ আশপাশের কোনও জেলায় কেউ তাঁর বিষয়ে নিখোঁজ ডায়েরি করেননি। সব মিলিয়ে ঘটনাটি নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে।
হাওড়া শহরের নগরপাল প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘ওই মহিলার পরিচয় এখনও জানা যায়নি।গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত করতে পাঁচটি বিশেষ তদন্তকারী দল গড়া হয়েছে। তারা মহিলার পরিচয় জানার চেষ্টা করতে প্রয়োজনে পড়শি রাজ্যে যাবে। সেই সঙ্গে গোয়েন্দা দফতরকে বলা হয়েছে, যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে গিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে এই মৃত্যু-রহস্যের উদ্ঘাটন করতে। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গেও কথা বলা হবে।’’
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রের খবর, বিশেষ তদন্তকারী দলগুলির নেতৃত্বে রয়েছেন নগরপাল নিজে। যে পুকুর থেকে ওই মহিলার দেহ উদ্ধার হয়েছিল, সেটির সামনের এবং এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করবে তদন্তকারী একটি দল। পুলিশ জানিয়েছে, ওই এলাকার একটি বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ২৩ জুন শেষ রাতে ওই মহিলা হেঁটে পুকুরের দিকে যাচ্ছেন। তবে ক্যামেরায় তাঁকে পুকুরে নামতে দেখা যায়নি। এর দু’দিন পরে পুকুরে মহিলার দেহ ভেসে ওঠে।
প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, পুকুরে ডুবে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই মহিলা। কিন্তু ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে একাধিক। প্রথমত, একটি গলির মধ্যে থাকা ওই পুকুরে মহিলা শেষ রাতে কেন নামবেন? দ্বিতীয়ত, তিনি যদি এলাকার বাসিন্দা না হন, তা হলে ওখানে যে পুকুর আছে, সেটা অন্ধকারের মধ্যে তিনি জানলেনই বা কেমন করে? পুলিশের দাবি, ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, মহিলা জলে ডুবে মারা গিয়েছেন। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল না। কিন্তু কেন তিনি আত্মঘাতী হলেন, এত দিন পরেও কেউ কেন ওই মহিলার খোঁজ করলেন না, আপাতত এমন নানা প্রশ্নই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।