দমদম-শিয়ালদহের মাঝে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ট্রেন, রানাঘাট মেমু থেকে নেমে লাইন ধরেই হাঁটছেন যাত্রীরা
আনন্দবাজার | ০৮ জুন ২০২৪
দমদম স্টেশন ঢোকার আগে প্রায় এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে বনগাঁ লোকাল। দমদম থেকে শিয়ালদহ যাওয়ার রানাঘাট মেমুও দাঁড়িয়ে বিধাননগর ঢোকার আগে। সেই ট্রেন থেকে নেমে লাইন ধরে হাঁটছেন যাত্রীরা।
আপ কৃষ্ণনগর সিটি গ্যালপিং লোকাল প্রতিটি স্টেশনে থেমে থেমে যাচ্ছে। ভিড় অন্য দিনের তুলনায় বেশি।
যে ট্রেনগুলি চলছে, সেগুলির সব ক’টি শিয়ালদহ স্টেশনে ঢুকছে না। অনেক ট্রেন দমদম পর্যন্ত আসছে। দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনেও থেমে যাচ্ছে বহু ট্রেন। এক একটি স্টেশনে ট্রেন আসছে প্রায় ঘণ্টাখানেক পর পর। সেই ট্রেনগুলিতে তিলধারণের জায়গা নেই। ফলে অনেকেই উঠতে না পেরে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝুলে ঝুলেই যাচ্ছেন।
ভিড়ের চাপে ট্রেনে উঠতে না পারার কারণে বিকল্প ব্যবস্থা করে গন্তব্যে পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন নিত্যযাত্রীরা। বাসগুলিতে প্রচণ্ড ভিড়। ব্যারাকপুর এবং সোদপুরে অটো পেতে লম্বা লাইন মানুষের।
ব্যারাকপুরের বাসিন্দা সুফল বিশ্বাস বলেন, ‘‘শুক্রবারের থেকে শনিবারের পরিস্থিতি আরও খারাপ, আরও ভয়ঙ্কর। কী ভাবে কাজে যাব বুঝতে পারছি না। ট্রেনে এত ভিড় যে, চাপতে ভয় লাগছে। ট্রেনের তরফে কোনও ঘোষণা করা হচ্ছে না ঠিক ভাবে। তাই আরও বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছি।’’
শুক্রবার রেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছিল, শিয়ালদহ স্টেশনে কাজ চলায় কিছু রেল বাতিল করা হয়েছে এবং কিছু ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। তবে পরিস্থিতি ততটাও খারাপ নয়। তবে নিত্যযাত্রীদের দাবি, শুক্রবারের থেকে শনিবারের পরিস্থিতি আরও খারাপ। আরও ভিড় বেড়েছে স্টেশনগুলিতে। ট্রেনে চাপতে কালঘাম ছুটে যাচ্ছে।
শুক্রবারের পর শনিবারেও যাত্রীদের ভোগান্তি অব্যাহত শিয়ালদহ উত্তর এবং মেন শাখায়। শনিবারও ট্রেন আসছে দেরিতে। অনেক ট্রেন থেমে থেমে আসছে। স্টেশনগুলিতে ভিড়ের চাপ এতটাই যে, অনেকে ট্রেনের কাছাকাছিও পৌঁছতে পারছেন না।
শিয়ালদহের ১ থেকে ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণের কাজ চলছে। তার জেরে বদল আনা হয়েছে রেল পরিষেবায়। বহু ট্রেন বাতিল। অনেক ট্রেন যাত্রা শুরু ও শেষ করছে দমদম জংশন, দমদম ক্যান্টনমেন্ট, বারাসত এবং কল্যাণী স্টেশনে। এর জেরে যাত্রীদুর্ভোগের অন্ত নেই। শুক্রবার সকাল থেকেই শিয়ালদহ মেন এবং উত্তর শাখায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক না থাকায় সকাল থেকে রাত অবধি স্টেশনগুলিতে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছিল। শুক্রবার সকালে টিটাগড় এবং খড়দহ স্টেশনের মাঝে ভিড়ের চাপে এক তরুণ ট্রেন থেকে পড়েও যান। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।