নিউ টাউনের একটি রেস্তরাঁর মালিককে মারধর করার অভিযোগ উঠল অভিনেতা তথা চণ্ডীপুরের তৃণমূল বিধায়ক সোহম চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ওই রেস্তরাঁর মালিককে চড়-ঘুষি-লাথি মেরেছেন অভিনেতা। দেওয়া হয়েছে রেস্তরাঁ বন্ধ করার হুমকিও। অভিনেতা-বিধায়কের বিরুদ্ধে ‘গুন্ডাগিরি’ করার অভিযোগ তুলেও সরব হয়েছেন ওই রেস্তরাঁর মালিক আসুল আলম। মারধরের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন সোহমও। যদিও তাঁর দাবি, ওই রেস্তরাঁর মালিক তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এবং তাঁকে গালিগালাজ করার পর তাঁর ‘মাথাগরম’ হয়ে যায়। এর পরেই তিনি তাঁকে চড় মারেন। তবে আনিসুলের পাল্টা দাবি, তিনি অভিষেককে গালিগালাজ করেননি। অভিষেকের প্রতি শ্রদ্ধা রয়েছে তাঁর। সোহম নিজের দোষ ঢাকতে অভিষেকের নাম ব্যবহার করছেন বলেও জানিয়েছেন আনিসুল।
গন্ডগোলের সূত্রপাত শুক্রবার সন্ধ্যাবেলা। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই রেস্তরাঁর একটি ফ্লোরে শুটিং চলছিল সোহমের। সেই সময়ই রেস্তরাঁর সামনে শুটিং ইউনিটের গাড়ি রাখা নিয়ে সোহমের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে বচসা শুরু হয় আনিসুলের। আনিসুলের দাবি, একটি পার্কিং খালি করতে বললে সোহমের নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁর উপর চড়াও হন। অভিযোগ, এর পর সোহমও তাঁকে মারধর করেন। তাঁকে ঘুষি মারা হয়। সোহম তাঁকে সজোরে লাথি মারেন বলেও আনিসুলের অভিযোগ।
আনিসুলের কথায়, ‘‘সোহম নিজে আমাকে মেরেছেন। আমি অভিষেককে গালিগালাজ করিনি। আমার অভিষেকের প্রতি শ্রদ্ধা রয়েছে। আত্মরক্ষার জন্য মিথ্যা বলছেন সোহম। আমি শুটিংয়ের অনুমতি দিয়েছিলাম। ওঁর এক কর্মী আমাকে বলেন, ‘জানিস সোহম, অভিষেকের বন্ধু’। আমি তখন বলি, ‘অভিষেকেরই বন্ধু হোন আর নরেন্দ্র মোদীর বন্ধুই হোন, তাতে আমার যায়- আসে না। আমার গেস্ট আসবে আজকে, ঝামেলা করবেন না’। যখন আমি রেস্তরাঁর দোতলায় উঠতে যাই, তখন সোহম এসে আমাকে ঘুষি মেরে বলেন ‘দেখবি পাওয়ার কী হয়?’ তার পর আমাকে লাথি মারেন। আমার কলার চেপে ধরা হয়। এক জন অভিনেতা এবং বিধায়কের ন্যূনতম শিক্ষা নেই। আমাকে রেস্তরাঁ বন্ধ করার হুমকি দিয়েছেন। এক জন জনপ্রতিনিধি উন্নয়নমূলক কাজ না করে গুন্ডাগিরি করছেন।’’
অন্য দিকে, সোহম বলেন, ‘‘আমি শুটিং করছিলাম। চিৎকার শুনে ছুটে আসি। আমার এক নিরাপত্তারক্ষীকে ধাক্কাধাক্কি করছিলেন। আমি জিজ্ঞাসা করি, কী হয়েছে। পুলিশের গায়ে হাত তোলে। আমাকে গালাগালি করে। অভিষেককে গালাগাল করে। এটা শুনে মাথাগরম হয়ে যায়। তখন আমি বুঝিয়েছি যে সে কে।’’
আনিসুলকে মারধর করেছেন কি না তা নিয়ে সোহমকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি আরও বলেন, ‘‘সে তো করেছিই। গালাগালি করবে এবং অভিষেককে নিয়ে গালাগালি করেছে সেটা মেনে নেওয়া যায় না। চারটে চড় মেরেছি। ধাক্কা দিয়েছি। অভিনেতারাও মানুষ। আমাদেরও আবেগ আছে। তারই প্রতিফলন হয়েছে। ছোটখাটো বিষয়। পুলিশ দেখছে।’’
যদিও এই বিষয়টি নিয়ে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে তিনি পুলিশকে পুরো বিষয়টি জানিয়েছেন বলে দাবি আনিসুলের। আনিসুল এ-ও জানিয়েছেন, তাঁকে মারধরের ভিডিয়ো সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। তা তিনি পুলিশের হাতে তুলে দেবেন।