সরকারি চাকরির ?বাঁধন?, স্নাতকোত্তরে সুযোগ পেয়েও চিকিৎসকদের উচ্চশিক্ষায় জটিলতা
প্রতিদিন | ০৮ জুন ২০২৪
ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: পাশ করেও এমডি-এমএস পড়ার সুযোগ কমে গেল! পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি এমনই। সরকারি হাসপাতালে কর্মরত অনেক এমবিবিএস পাশ করা বেশিরভাগ স্নাতকোত্তর এমডি-এমএস পড়তে চান। কিন্তু তার জন্য উতরোতে হয় কঠিন NEET PG প্রবেশিকা পরীক্ষা। পাশ করলেই যে স্নাতকোত্তর পড়ার সুযোগ মিলবে, তার গ্যারান্টি নেই। গোটাটাই নির্ভর করে সরকার তাকে পড়র জন্য ছাড়তে ইচ্ছুক কি না, তার উপর। যাদের ছাড়পত্র দেওয়া হয় তাদের বলা হয় ট্রেনি রিজার্ভ (টিআর)।
গত বুধবার স্বাস্থ্যদপ্তর (Health Department) বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিল, এবছর ৩৩৩ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের প্রায় ৪০০ জনের বেশি চিকিৎসক এবার NEET PG পাশ করে স্নাতকোত্তর এমডি-এমএস পড়ার জন্য মানসিকভাবে তৈরি হয়েছিলেন। অর্থাৎ অনেকটাই সংকুচিত হল এমডি-এমএস পড়ার সুযোগ। সরকারি আদেশনামায় জানানো হয়েছে চলতি বছরে ৩৩৩ জন সরকারি চিকিৎসক এমডি-এমএস (MD-MS)পড়ার সুযোগ পাবেন। সরকারের এমন নির্দেশে আলোচনা শুরু হয়েছে সরকারি চিকিৎসক মহলে। চিকিৎসকদের অভিমত, একের পর এক সরকারি হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে। প্রয়োজন হচ্ছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। সরকারি পরিষেবাকে প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কিন্তু স্পেশালিস্ট মেডিক্যাল অফিসারের ঘাটতি গড়ে ৬০ শতাংশ।
গত কয়েক বছরের তুলনায় কম সরকারি চিকিৎসককে (Doctors)স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য ছাড়ায় জটিলতা বেড়েছে। যদিও এই যুক্তি মানতে নারাজ রাজ্য স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধির্কতা ডাঃ কৌস্তভ নায়েক। কৌস্তভবাবু বলেছেন, ‘‘সার্ভিস রুলের নিয়ম অনুযায়ী,কর্মরত মোট যতজন চিকিৎসক আছেন তাঁদের ১০ শতাংশ ট্রেনি রিজার্ভ (টিআর) পাওয়ার কথা। অন্যথায় সরকারি হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসক সংকট দেখা দেবে। হাসপাতালগুলিও চালাতে হবে। সেই হিসাব করেই টিআর দেওয়া হয়েছে।’’ যদিও সরকারি চিকিৎসক সংগঠনগুলির দাবি, হেলথ সার্ভিস এবং অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যান্ড পাবলিক হেলথ সার্ভিসে চলতি বছরে ৩,৩৩০ জনের বেশি চিকিৎসক কর্মরত রয়েছেন। সেই নিয়ম মানলে তো সবাইকেই ছাড়পত্র দেওয়া উচিত ছিল।
একদিকে কঠিন পরীক্ষায় পাশ করেও স্নাতকোত্তর (Post Graduation) পড়তে না পারার আক্ষেপ ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। আগামী বছর যে তাঁরা ফের পরীক্ষা দিয়ে সুযোগ পাবেন তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। সরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেছেন, গত কয়েক বছর ধারাবাহিকভাবে সুযোগ সঙ্কুচিত হচ্ছে। এবার তা আরও প্রকট হল। অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরসের তরফে ডা. মানস গুমটা বলেন, ?কীসের ভিত্তিতে এই সংখ্যা নির্ধারিত হল তা জানা গেল না। সার্ভিস কোটা মানা না হলে সরকারি চাকরি করতে কেন আসবেন চিকিৎসকরা??