• বিরবাহার এলাকায় কমেছে ভোট, অস্বস্তিতে তৃণমূল
    আনন্দবাজার | ০৮ জুন ২০২৪
  • ঝাড়গ্রাম জেলায় চারটি বিধানসভার মধ্যে লোকসভার নিরিখে তিনটি বিধানসভায় ভোট কমল তৃণমূলের। বিশেষ করে মন্ত্রীর বিধানসভা এলাকায় ২৪ হাজারের বেশি ভোট কমেছে। দেড় লক্ষের বেশি ব্যবধানে তৃণমূল প্রার্থী কালীপদ সরেন জয়ী হলেও, মন্ত্রীর বিধানসভা এলাকায় ভোট কমে যাওয়া শাসকদলের কাছে অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

    লোকসভার নিরিখে নয়াগ্রাম বিধানসভায় ২৪ হাজার ২৬৫ ভোটে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। গত বিধানসভায় নয়াগ্রাম বিধানসভায় ২২ হাজার ৭৫৪ ভোটে এগিয়ে ছিল তৃণমূল। একমাত্র বিধানসভার নিরিখে নয়াগ্রাম বিধানসভায় ভোট বেড়েছে তৃণমূলের। আবার লোকসভার নিরিখে গোপীবল্লভপুর বিধানসভায় ২২ হাজার ৩৬৯ ভোটে জয়ীহয়েছে তৃণমূল।

    গত বিধানসভায় তৃণমূল ২৩ হাজার ৭৬৮ ভোটে এগিয়েছিল তৃণমূল। গোপীবল্লভপুর বিধানসভায় সামান্য ভোট কমেছে। তবে দলীয় সূত্রে খবর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গোপীবল্লভপুর বিধানসভার পর্যবেক্ষক হিসেবে অজিত মাহাতোকে দায়িত্ব দেওয়ার পর বেশ কিছু জায়গা পুনরুদ্ধার করা গিয়েছে। বিশেষ করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনজোয়ার কর্মসূচিতে যেখানে হামলা চালনোর অভিযোগ যে গড়শালবনি এলাকায় গত পঞ্চায়েতে হেরেগিয়েছিল তৃণমূল।

    সেই গড়শালবনি এলাকায় এ বারও প্রার্থীকে নিয়ে প্রচারের শুরুতেই হিমশিম খেয়েছিল তৃণমূল। সেই গড়শালবনি অঞ্চলে তৃণমূল ন’টি ভোটে এগিয়ে রয়েছে। দলের এক নেতা বলছেন, প্রচারের শেষ কয়েকটা দিন গোপীবল্লভপুর বিধানসভার কুড়মি অধ্যুষিত এলাকায় যে হারে প্রচার হয়েছে, না হলে গোপীবল্লভপুর বিধানসভা এলাকায় তৃণমূলের ব্যবধান আরও কমে যেত। অন্য দিকে, গত বিধানসভার নিরিখে সবচেয়ে বেশি তৃণমূলের ভোট কমেছে ঝাড়গ্রাম ও বিনপুর বিধানসভায়। এর মধ্যে ঝাড়গ্রাম বিধানসভায় আরও বেশি ভোট কমেছে। গত বিধানসভায় বিনপুর বিধানসভায় তৃণমূল ৩৯ হাজার ৪৯৪ ভোটে এগিয়ে ছিল তৃণমূল। এ বার লোকসভার নিরিখে বিনপুর বিধানসভায় তৃণমূল ২৩ হাজার ৯৪২ ভোট এগিয়ে রয়েছে।

    জেলার মধ্যে বিধানসভার নিরিখে তৃণমূলের সবচেয়ে বেশি ভোট কমেছে ঝাড়গ্রাম বিধানসভায়। এই ঝাড়গ্রাম বিধানসভার বিধায়ক হলেন মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। গত বিধানসভায় ঝাড়গ্রাম বিধানসভায় তৃণমূল ৩৮ হাজার ২৪০ ভোটে জয়ী হয়েছিল। এ বার লোকসভার নিরিখে সেখানে তৃণমূল মাত্র ১৪ হাজার ১০১ ভোটে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল।

    যার মন্ত্রীর কাছে অস্বস্তির কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার ঝাড়গ্রাম লোকসভর মধ্যে একমাত্র পুরসভা হল ঝাড়গ্রাম পুরসভা। সেই পুরসভায় তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্কে অনেকটাই ধস নেমেছে। শহরের ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১১টি ওয়ার্ডে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। এ ছাড়াও ঝাড়গ্রাম বিধানসভা এলাকার ঝাড়গ্রাম গ্রামীণের চারটি অঞ্চলে তৃণমূলের ফল ভাল হয়নি। রাধানগর অঞ্চলের ১৪১ নম্বর বুথে তৃণমূল যেখানে ভোট পেয়ে ২৫০টি। সেখানে বিজেপি ভোট পেয়েছে ৮২৯টি। যার ফলে ভোট অনেকটাই কমেছে। আবার বিনপুর-১ ব্লকের গত বিধানসভার তুলনায় এ বার লোকসভায় অনেকটাই ভোট কমেছে। যার ফলে ভোটের ব্যবধানঅনেকটাই কমেছে।

    এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা বলেন, ‘‘পুরসভা এলাকায় আমরা মাইনাসে রয়েছি। রাজ্যকেও বার বার জানিয়েছি, যেহেতু পুর-এলাকায় সে ভাবে কাজ হয়নি, তাই আমরা এখানে পিছিয়ে রয়েছি। ঝাড়গ্রাম ব্লকের সাপধরা, বাঁধগোড়া, মানিকপাড়া ও রাধানগর অঞ্চলে ফল খারাপ হয়েছে। এ নিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’’ দলীয় প্রার্থী জয়ী হলেও অস্বস্তির কাঁটা যেন রয়ে যাচ্ছে দলের অন্দরে। কারণ, এক বছর পরই বিধানসভা ভোট। জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু অবশ্য বলছেন, ‘‘লোকসভা ভোটের প্রেক্ষিত আলাদা। তাই বিধানসভার নিরিখে কিছুটা ভোট কমেছে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)