• দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে ভরসা নৌকা
    আজকাল | ১০ জুন ২০২৪
  • মিল্টন সেন,হুগলি: নূন্যতম বাস, অটো, টোটো ধরতে গেলেও প্রয়োজন নৌকার। ওখানে নেই রাস্তা ঘাট। বিদ্যুৎ, পানীয় জল, দোকানপাট বা বাজার নেই কোনও কিছুই। থাকবেই বা কি করে। ওটা তো গঙ্গার বুকে জেগে ওঠা একটা চর। তবু সেখানে বসবাস করছেন একাধিক পরিবার। দৈনন্দিন কাজকর্ম, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রসহ নানান প্রয়োজন সারতে বসবাসকারীদের একমাত্র ভরসা ডিঙ্গি নৌকা। প্রয়োজন মেটাতে গঙ্গার জল ডিঙিয়ে তাঁদের আগে রাস্তায় পৌঁছতে হয়। এমনই নানাবিধ সমস্যা নিয়েই চড়ে বসবাস করছেন প্রায় বারোটি পরিবার। সকলেরই ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড সবই আছে। সকলেই ভোট দেন, পেয়ে থাকেন রেশন সহ যাবতীয় সরকারি প্রকল্পের সুবিধে। তাঁদের কাছে নেই বলতে শুধু বসবাস করার এক টুকরো জমি। তাই প্রায় দু দশকের বেশি সময় ধরে গঙ্গা বক্ষে জেগে ওঠা ওই চরে ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছিল বসবাস। প্রথমে একটা দুটো পরিবার বসবাস শুরু করেছিল। পরে সেই সংখ্যা বাড়ে। থাকতে শুরু করে বেশ কয়েকটি পরিবার। মূলত বসবাসকারী সকলেই ছিলেন পেশায় দিনমজুর। তাই তাঁদের পরিবারের পড়াশোনা, চিকিৎসা ইত্যাদির জন্য রাস্তায় পৌঁছনো, সব কিছুই নির্ভরশীল ছিল নৌকায়। চড়ের আয়তন প্রায় ২৬ একর। ব্যান্ডেলের সাহাগঞ্জ এলাকায় গঙ্গার মাঝে গজিয়ে ওঠা এই চর ডানলপ চড় নামেই পরিচিত। দ্বীপে বসবাসকারী পরিবার সরকারি প্রকল্পের সুবিধে পান। কিন্তু আয়তনে ছোট এবং বন্যায় ঢুবে যাওয়ার কারণেই হয়তো দ্বীপের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব হয়নি। বহু দিন ধরেই এই চড়ে মানুষের বসবাস। আগে চড়ে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা ছিল শতাধিক। বর্তমানে অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে, অনেকেই অন্যত্র মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজে চর ছেড়েছেন। বর্তমানে সেখানে বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা কমে ১২টিতে এসে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ওই চড়ে বসবাস করছেন রাজেন মাহাতো, পার্বতী মাহাতোরা। তাঁদের স্কুল, হাট বাজার, সমস্ত দরকারি কাজ করতে প্রায় ১৫ মিনিট নৌকা চেপে বাঁশবেড়িয়া পুরসভা এলাকার মূল রাস্তায় পৌঁছতে হয়। বন্যার সময় চড় জলে ডুবে যায়। তখন আবার অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়। জল নেমে যাওয়ার পর আবার ফিরে এসে বসবাস শুরু করেন। তবুও তাঁরা খুশি। কিন্তু আক্ষেপ একটাই বিদ্যুৎ নেই, গোটা চড়ের কোথাও আলো জ্বলে না। ফলে সন্ধে গড়ালেই ভরসা টর্চ বা হ্যারিকেন। তাঁদের নূন্যতম দাবি যদি বিদ্যুৎ এর ব্যাবস্থা হত, তাহলে কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলতো। বাসিন্দাদের দাবি যুক্তিসঙ্গত, বলেছেন বাঁশবেড়িয়া পুরসভার পুরপ্রধান আদিত্য নিয়োগী। তিনি বলেছেন পুরসভার তরফে বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করে যতটা সম্ভব সেটা করা হবে।ছবি পার্থ রাহা।
  • Link to this news (আজকাল)